ঐশীদের পাশে মমতা, আকাশের তারা হয়ে হাসে সুদীপ্ত গুপ্ত!

কেউ  মরে, কারও মাথা ফেটে নেমে আসে রক্তের স্রোত৷ যাঁরা রাজনীতি করার, তাঁরা রাজনীতি করেই পরিতৃপ্ত হয়!

কলকাতা: কেউ  মরে, কারও মাথা ফেটে নেমে আসে রক্তের স্রোত৷ যাঁরা রাজনীতি করার, তাঁরা রাজনীতি করেই পরিতৃপ্ত হয়!

জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের সবরমতি হোস্টেলে ঢুকে একদল গুন্ডা তাণ্ডব চালিয়েছে৷ এসএফএই নেত্রী তথা জেএনইউ-এসইউ'র সভানেত্রী ঐশী ঘোষ গুরুতর জখম হয়েছেন৷ রাজ্য থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মমতার এই সিদ্ধান্তে অনেকেই অবাক, যাঁর মস্তিস্কপ্রসূত তৃণমূল ছাত্র পরিষদ পশ্চিমবঙ্গের কলেজে-কলেজে এসএফআইয়ের আন্দোলনের উপর 'বুলডোজার' চালিয়েছে, সেই নেত্রীই হঠাৎ বলে উঠলেন, জেএনইউযের ঘটানা 'ফ্যাসিস্ট সার্জিক্যাল স্ট্রাইক'! কেন? অবশ্যই কারণ রয়েছে৷ ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের ভোট পেতে হবে তো মমতাকে৷ ক্ষিপ্ত বামেদের ভোট পকেটে পুড়ে দিলীপ ঘোষের বাংলার লোকসভা মানচিত্রে দুই থেকে ১৮ হয়েছেন৷ ভোটের হিসাব ভুলে গেলে চলবে কেন? মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ঐশী এখন আপনজন৷ কারণ সংখ্যা কথা বলে!

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি কলকাতায় বলে গিয়েছেন, তৃণমূলের থেকে বাঁচতে মানুষ বিকল্প পথের সন্ধান করেছিল৷ বিজেপিকে ভোট দিয়েছে বাংলার জনতা৷ ২০১৬ সালে বিজেপির ভোট বাড়েনি কারণ পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট-কংগ্রেস আসন সমঝোতা করেছিল৷ মানুষ তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার একটি বিকল্প পথ পেয়েছিল ২০১৬ তে৷ সারা দেশ জুড়ে প্রবল মোদী-ঝড়ও বাংলায় বিজেপির ভোট বাড়াতে অসমর্থ৷ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্ট ২৫.৬৯ শতাংশ ভোট পেয়েছিল৷
 

বাম ফ্রন্টের প্রধান শরিক সিপিএম পেয়েছিল ১৯.৭৫ শতাংশ ভোট৷ সেই ভোট ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে নেমে প্রায় ১৪-১৫ শতাংশে এসে দাঁড়ায়৷ ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর দেখা গিয়েছে বামফ্রন্ট ৭.২৫ শতাংশ ভোটেই আটকে পড়েছে৷ জোটেনি একটিও লোকসভা আসন৷ অন্য দিকে বিজেপির ভোট, ৪০ শতাংশ ছড়িয়ে গিয়েছে৷ তৃণমূলও নিজের ভোট ধরে রেখে অল্প বাড়িয়েছে৷ স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, বাম ভোট রামে গিয়ে পড়েছে৷ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কাছে কারণ একটাই, তৃণমূল কংগ্রেসের ঔদ্ধত্য, রাজ্যে প্রতিযোগিতা মূলক সাম্প্রদায়িকতা বিজেপিকে জমি দিল৷ প্রশান্ত কিশোর ব্যাপারটা ধরতে পেরেছেন৷ দিদিকে বলো চালু করে করেছেন৷

এখন মমতা বামেদেরও ‘দিদি’ হওয়ার চেষ্টা করছেন! কিন্তু, বামপন্থীরা তাঁকে এক তরুণের কথা মনে করিয়ে দিতে চান৷

সুদীপ্ত গুপ্ত৷ ২০১৩ সালের ২ এপ্রিল কলকাতা পুলিশের হেফাজতে মৃত্যু হয়েছিল এইএসএফআই নেতার৷ প্রচলিত মত, পুলিশ মারে নাকি মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়েছিল সুদীপ্ত৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, তুচ্ছ, ছোট ঘটনা৷ সেদিন সুদীপ্তর বাড়িতে পাড়ার কাউন্সিলর গিয়েছিলেন কিনা জানা নেই, তবে, ঐশীদের সান্তনা দিতে এনএনইউয়ে দীনেশ ত্রিবেদীরা পৌঁছে গিয়েছেন৷ ভোট বড় বালাই৷ তবে বলে রাখা ভাল, ফসিস্টরা চারিদিকের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করে বেড়ায়৷ রাজ্যে রাজ্যে তাদের মুখ বদল হয়েছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *