কলকাতা: কেরল যা পারে, পশ্চিমবঙ্গ তা পারে না৷ কেরলের সিপিএম কেন এতটা 'ভাল' তা বোঝা গেল৷ জলের মত সাফ হয়ে গেল৷
সপ্তাহ খানেক আগেই কেরল বিধানসভায় সর্বসম্মত ভাবে (বিজেপি ছাড়া) সি এ এ আইন বাতিলের প্রস্তাব পাশ করে৷ মুখ্যমন্ত্রী পিনরাই বিজয়ন দেশের অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের চিঠি দিয়ে একই কাজ করার পরামর্শ দেন৷ চিঠি আসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও৷
বৃহস্পতিবার বিধানসভায় বি এ কমিটির বৈঠকে ঠিক হয় নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বা এনআরসি (NRC) নিয়ে কোনও আলোচনা হবে না৷ কিন্তু বিধানসভায় CAA, NRC নিয়ে আলোচনা চেয়েছিল বাম ও কংগ্রেস৷ অধ্যক্ষ বিমানবাবু, রাজি হননি৷ স্বাভাবিকভাবেই সরকারের অবস্থান বুঝতে অসুবিধা হয়নি বাম – কংগ্রেসের৷
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় সুজন চক্রবর্তীদের জানিয়ে দিয়েছেন, সিপিএম-কংগ্রেস বনধ-এ গুন্ডামি করেছে৷ একসাথে আন্দোলন হয়না৷ তিনি দিল্লিতে সর্বদলীয় বৈঠকেও যাবেন না৷
অনেকেই এই ঘটনার রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিত নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন৷ কেন মমতার এই আচরণ৷ তবে বলে রাখা যায়, অঙ্ক বুঝেই রাজনীতি করেছেন মমতা৷ শেষ লোকসভা নির্বাচনের পর তিনি অনেক সাবধানী৷ সিএএ -এর কৌশলগত বিরোধিতা করছেন মমতা৷ চেতনাসমৃদ্ধ বঙ্গ সমাজ যা করছে, মমতাও তাই করেছেন৷ সংসদ স্বীকৃত একটি আইনকে বিধানসভায় বাতিল করার প্রস্তাব এনে তিনি সংবিধান বিরোধী কাজ করলে বিজেপির হাতেই অস্ত্র তুলে দেওয়া হত৷
এছাড়া বিজেপি যখন এন আর সি-এর বিষয়টি নিয়ে তেমন নাড়াচাড়া করছে না, সেক্ষেত্রে সিএএ নিয়ে তীব্রতর অবস্থান নিয়ে সংখ্যাগুরুদের বিষ নজরে যেতে চায়না মমতা৷ যেখানে বিধয়টি পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে সি এ এ -তে মুসলমানদের কোনও সমস্যা নেই৷
রাজনীতি দিনে দুপুরে বদলায়৷ কবে এন আর সি আসবে, তখন কোন সরকার থাকবে তা অদূর ভবিষ্যতে প্রশ্ন৷ সেই কারণেই, শুধু নীতিগত ভাবে সি এ এ বিরোধিতায় থাকতে চাইছেন মমতা৷ কারণ পরিষ্কার, সি এ এ – পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির বিষয় নয়৷ বরং, এন আর সি পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ সিএএ নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে, এন আর সি নিয়েই কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে দর কশাকশি তে যেতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷