কলকাতা: রাজ্যে লকডাউন উপেক্ষা করে জনতার ভিড় অনেকেরই চিন্তা বাড়িয়েছে। কিন্তু, বাম পরিষদীয় দল নেতা সুজন চক্রবর্তী মনে করেন, মানুষ লকডাউন মান্য করেছিল। কিন্তু, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় দরকারের অসভ্যতার জন্য আজ রাস্তায় নামতে বাধ্য করেছে। নীতি ভুল। মানুষ নয়। সুজনের বক্তব্য, “বাজার, রেশন দোকানে লাইন, প্রধানমন্ত্রী ৫০০ টাকা দেবে তার জন্য ব্যাংকে লাইন। আমরা লকডাউন কার্যকর করতে পারলাম না।”
তিনি বলেন, “লকডাউনের মূল কথা হল মানুষ এবং প্রশাসন। মানুষ ঘরে থাকবেন। কিন্তু, গরিব মানুষের ঘরে তো খাবার মজুত থাকে না। তাঁর দিন আনে, দিন খায়। আজ কাজ করলে কাল খাবার পাবে। ডাক্তারের কাছে যেতে হলে বিপদে পড়ে যাচ্ছেন। তাহলে, সেই মানুষটা লকডাউনে ঘরে থাকবেন, সরকার যদি দায়িত্ববান হয়, তবে নিয়ম হচ্ছে তাঁকে ঘরে খাবার পৌঁছে দিতে হবে।”
“মানুষ ভুল করেনি, সরকার ফেল করেছে। মানুষ প্রথমে রেশন দোকানে লাইন দেয়নি। ঘরেই ছিল। দুই সরকার লকডাউন ফেল করেছে। কেন্দ্রীয় সরকার জনধন প্রকল্পে মাত্র ৫০০ টাকা দিল! বিপিএল বা বিপিএল নয়, মানুষকে ক্যাশ ট্রান্সফার করতে হবে, কেন্দ্রীয় সরকার দেবে ৫০০০ টাকা, রাজ্য সরকার দেবে ২০০০ টাকা। সর্বদলীয় বৈঠকে আমরা বলেছিলাম, খাদ্য পৌঁছে দিতে হবে। এবং ক্যাশ ট্রান্সফার করতে হবে। রাজ্য বলল, ১ হাজার টাকা দেবে। কিন্তু ১৫ তারিকের আবেদন করতে হবে। ততদিনে তো বিপদ বেড়ে গেল। এদিকে কথায় কথায় টাকার শ্রাদ্ধ করা হচ্ছে। রাজ্য-কেন্দ্র গরিব মানুষের সঙ্গে কার্যত অসভ্যতা করছে। একবারে টাকা দিলে ব্যাংকের লাইনে বারবার দাঁড়াতে হত না। খোঁজ নিন, লাইন শুধু ব্যাংক, বাজারে আর রেশনে।” – বলেছেন সুজন।
সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিতিফ এই সদস্য বলেন “কেন্দ্র গরিব মানুষের সঙ্গে কার্যত অসভ্যতা করছে। একবারে টাকা দিলে ব্যাংকের লাইনে বারবার দাঁড়াতে হত না। খোঁজ নিন, লাইন শুধু ব্যাংক, বাজারে আর রেশনে। রেশন নিয়ে দিল্লির ঘোষণা এন এফ এসে'র বাইরে পাঁচ কেজি করে চাল, গম বা আটা। চিনি ১ কেজি, দু রকমের ডাল এক কেজি। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা। রাজ্য সরকার ঘোষণা ৫ কেজি চাল অথবা আটা। আলু (পরে যদিও বন্ধ)। এটা রেশন নাকি রেশনের বাইরে? তাহলে কেন্দ্র রাজ্য মিলে ১০ কেজি চাল অথবা আটা, ২ কেজি ডাল, ১ কেজি চিনি। কিন্তু তা হচ্ছে কী? প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রী মিলে যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের একটি পরিবারও পেয়েছে?”
আরও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী টিভি-তে যা আধঘন্টা অন্তর বিজ্ঞাপন দিয়ে বলছেন, ঠিক আছে, কত খরচ কেউ জিজ্ঞাসা করছে না। কিন্তু, রেশন বাদ দিয়ে কিছু দিয়েছেন কী? ২ টাকা কেজি চালের ২ টাকা ছাড় দিয়েছেন। এই ২১ দিনে মাত্র দু কেজি চাল অর্থাৎ ৪ টাকা ছাড় দিয়েছেন। তার জন্য রেশন দোকানে এত ভিড়, লাইন। রেড ভোলেনটিয়ার্স ছাত্র-যুবরা কথা থেকে টাকা জোগাড় করে মানুষের বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দিচ্ছে। রাজ্যের শাসক দলের লোকজন বা কেন্দ্রের শাসক দলের লোকজনও খাবার দিচ্ছেন। কিন্তু, একদিন। ধারাবাহিকতা কোথায়? তবে বোঝা যাচ্ছে মানুষের প্রয়োজন আছে। মুখ্যমন্ত্রী মানুষের মনের কথা শুনুন। কেরালার মত প্যাকেট করুন। লোক না থাকলে বলুন, আমাদের ছেলের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেবে।”