বাংলার রাজনৈতিক পরিবর্তনের আবহে ঘরে ফিরছেন ঘরছাড়া রাজনৈতিক কর্মীরা৷ ২০১১-র পর থেকেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশপুর, গড়বেতা, পিংলা সহ একাধিক এলাকার একাধিক বাম নেতাকর্মীকে ঘরছাড়া হতে হয়৷ প্রায় আট বছর পর ধীরে ধীরে ঘরে ফিরছেন বাম নেতাকর্মীরা৷ সৌজন্যে বিজেপি৷
কেমন আছে কেশপুরের চরকা গ্রাম? রাজনৈতিক অশান্তিতে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তৎকালীন কেশপুরের লোকাল কমিটির সম্পাদক সৈয়দ নিয়ামত হুসেনের পরিবার৷ অভিযোগ উঠেছিল, তাঁর বাড়ি ভাঙচুর করে সমস্ত জিনিস লুট করে নেওয়া হয়৷ বাড়ির দালানে পাদিলেই এখনও বোঝা যায় ভাঙচুরের স্মৃতি এখনও কতটা দগদগে৷ সেই বাড়িতেই দীর্ঘদিন পর ফিরেছেন সৈয়দ মাহমুদা বিবি৷ তবে পরিবারসহ নয় ফিরেছেন তিনি একাই৷ সেদিনের আতঙ্কের ছাপ এখনও তার চোখে-মুখে৷
তবে শুধু সৈয়দ নিয়ামত হোসেনই নয়, গ্রাম ছাড়া হয়েছিল প্রায় ৬০০টি সিপিএম পরিবার৷ শুধু কেশপুর নয় গরবেতা, পিংলা সহ একাধিক জায়গায় ভিটেবাড়ি ছেড়ে গা ঢাকা দিতে হয়েছিল সিপিএম কর্মীদের৷ একে একে অবশ্য ফিরছে সবাই৷ আর প্রায় সকলেরই দাবি, নির্বাচনে বিজেপির ভাল ফলের জন্যই এলাকায় ফিরতে পারছে তারা৷
বামফ্রন্টের তরফ থেকেও সমস্ত ঘরছাড়া নেতাকর্মীদের এলাকায় ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক তরুণ রায়৷ তৃণমূল অবশ্য এতে বিজেপির জন্যই কালো মেঘের ইঙ্গিত পাচ্ছে৷ তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির দাবি, সিপিএমের হার্মাদরা বিজেপির ঝান্ডা তলায় এসে আখেরে বিজেপির থেকেই পতাকা কাড়িয়ে নিচ্ছে৷ এতে হয় সিপিএম শক্তিশালী হবে আর নচেৎ বিজেপির পুরনো কর্মীরা দলত্যাগী হবে। পাশাপাশি অবশ্য সিপিএম যে সব পার্টিঅফিস হারিয়েছিল, দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের দখলে ছিল সেই পার্টি অফিস তাদের ফিরিয়ে দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি৷
বিজেপির অবশ্য সুস্পষ্ট দাবি, শুধু সিপিএমই নয় তৃণমূলেরও যদি কোনও ঘরছাড়া ঘরে ফিরতে চায় তাঁদের ফিরে যেতে সাহায্য করা হবে নির্দ্বিধায়৷ রাজনীতি থাকুক রাজনীতির আঙিনায় আর ঘরছাড়ারা ফিরুক ঘরে এটাই কাম্য মত রাজনৈতিক মহলের৷