আজ বিকেল: লোকসভা ভোটের কয়েক মাস আগে থেকেই এই দলবদলের অশনি সংকেত ফলতে শুরু করে। বারাকপুরের অবিসংবাদী তৃণমূল নেতা অর্জুন সিং বিজেপি-তে যোগ দিলে একেবারে আগুনে ঘি পড়ে। এরপর প্রায় প্রতিদিনই তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের একটা বড় অংশ গিয়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছে। রাগে দুঃখে সেই সময়ই বাঁকুড়ার সাংসদ সৌমিত্র খাঁ ও বোলপুরের সাংসদ অনুপম হাজরাকে বহিঃস্কার করে তৃণমূল। এঁরাও সাততাড়াতাড়ি বিজেপি-তে যোগ দিয়ে লোকসভা ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এই প্রসঙ্গেই এদিন কাঁচরাপাড়ার সভা থেকে হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, ভোটের ফল বেরলেই দেখা যায় আশানুরূপ দূরে যাক ভীষণ খারাপ অবস্থা শাসক তৃণমূলের। আর আশাতীত ভাল ফল করেছে বিজেপি। এরপরেই রীতিমতো চাণক্যের ভূমিকা নেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। জানান তৃণমূল করা লোকগুলোই বিজেপিতে ভোট দিয়েছে। তিনি এই কাজ করিয়ে নিয়েছেন। যাঁরা এখনও তৃণমূলের সঙ্গে আছেন তাঁরা বিজেপি-তে এলেন বলে। এরপরেই দেখা যায় বিজেপি নেতা অনুপম হাজরার সঙ্গে মুনমুন সেন ও মেয়ে রিয়া সেন। শুরু হয়ে যায় গুঞ্জন। মুকুল পুত্র শুভ্রাংশুকে বহিস্কার করতে না করতেই দলবল নিয়ে তিনি বিজেপি-তে যোগ দেন। নৈহাটিতে দল বেঁধে তৃণমূল কাউন্সিলররা বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নিীলে পুরসভাতে সংখ্যালঘু হয়ে পড়ে শাসক তৃণমূল। এদিকে গতকালই নিউটাউনের বিধায়ক সব্যসাচী দত্তকে নিয়ে ফের বিজেপি-তে যোগদানের গুঞ্জন উঠতেই বিরক্ত নেত্রী এদিন তার জবাব দিলেন। ব্যক্তি ধরে নয়, একেবার খোলা হুঁশিয়ারি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাঁচরাপাড়ায় কর্মিসভা থেকে নেতাদের প্রতি তাঁর বার্তা, আগামী সাতদিনের মধ্যে যাঁরা তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে অন্য দলে যেতে চান তাঁরা চলে যেতে পারেন। তাতে দল শুদ্ধ হবে বলেও জানিয়েছেন মমতা।
বেশ কিছুদিন ধরে মুকুল রায়ের নেতৃত্বেই চলছে দলবদল। সব্যসাচী দত্তর বিজেপিতে যাওয়ার জল্পনাও শুরু হয় মুকুল রায়ের সৌজন্যেই। তিনি সব্যসাচীর বাড়িতে লুচি-আলুরদম খেয়ে আসার পর থেকেই জল্পনা তৈরি হয় যে, সব্যসাচী দলবদল করতে পারেন। এমনকী বারাসত আসন থেকে তিনি লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী হতে পারেন বলেও জল্পনা তৈরি হয়। শেষ পর্যন্ত তা না হলেও এখনও জল্পনা থামেনি। সম্প্রতি দল পারলে তাঁকে তাড়াক বলে খোলাখুলি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন সব্যসাচী। আর তারপরেই মমতা বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, কেউ চাইলে চলে যেতে পারে। দল তাড়াবে না।