নয়াদিল্লি: বিজেপির নতুন সর্বভারতীয় যুব মোর্চার সভাপতি তেজস্বী সূর্য বৃহস্পতিবার কলকাতায় নবান্ন অভিযানে অংশগ্রহণ করেছেন। মূলত রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চার ডাকেই এই অভিযান সংগঠিত হয়েছে। তেজস্বী এদিন সংবাদিক বৈঠকও করেছেন। পাশে ছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং আসানসোলের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। সর্বভারতীয় যুব মোর্চার সভাপতি হওয়ার পর তেজস্বী তাঁর কাজ পশ্চিমবঙ্গ থেকেই শুরু করেছেন৷ তবে বলে রাখা ভাল, বিজেপির এই তরুণ নেতা বিতর্কেই থাকেন। কিছুদিন আগেই বলেছিলেন, ‘‘ধর্ম রক্ষার জন্য হিন্দুদের দ্বারা রাষ্ট্রক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ একান্ত প্রয়োজনীয়৷’’
জার্মানির ভারতীয় প্রবাসীর একাংশ হামবুর্গে ২০২০ সালের ভারতীয় স্টার্টআপ সম্মেলনে স্পিকার অতিথি হিসাবে ব্যাঙ্গালুরু দক্ষিণের সাংসদ তেজস্বী সূর্যকে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়ে তীব্র আপত্তি তুলেছে৷ তিনি যে বিতর্কিত কথাবার্তা বলেন, কারণ হিহাবে তা-ই সামনে চলে এসেছে। কনস্যুলেট জেনারেলকে সম্বোধন করা একটি চিঠিতে এই প্রবাসী ওই সংস্থা লিখেছিল, ‘‘বক্তার তালিকায় দেখলে হতাশাব্যঞ্জক।’’ আরএসএস দ্বারা পরিপক্ক, বেঙ্গালুরুর একজন উগ্র উস্কানিমূলক এবং সাম্প্রদায়িক রাজনীতিবিদ তেজস্বী সূর্যকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এপ্রিল মাসে তেজস্বীর একটি টুইট নিয়ে সারা দেশ, এমনকি আরব বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। পাঁচ বছরের পরানো ওই টুইটে তেজস্বী পাকিস্তান-জাত কানাডিয় লেখক তারিক ফাতাহকে উদ্দেশ্য করে লেখেন – ৯৫ শতাংশ আরব মহিলারা গত কয়েকশো বছরে কখনও যৌনতৃপ্তি পাননি।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে স্বরাজ্য ম্যাগাজিনে একটি সাক্ষাতকার দেন। ওই সাক্ষাতকারে তিনি আরব বসন্ত বা আরব স্প্রিংয়ের উল্লেখ করে তার নিজের মাতামত জানান। ওই সাক্ষাতকারকে উদ্ধৃত করেই তেজত্বী টুইট করেন। ওই টুইট পাঁচ বছর পরে হঠাত ঝড় তোলে। আবর জগতের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক খারাপ হওয়ার পরিস্থিতি এসে দাঁড়ায়। তেজস্বী এখন টুইট মুছে ফেলেছে, তবে বিজেপি নেতার পক্ষে যা খুব অস্বস্তিকর ছিল। দেশে সিএএ এবং এনআরসি বিরোধী আন্দোলন যখন ব্যাপক আকার নিয়েছে, সেই সময় সিএএ এবং এনআরসি বিরোধীদের কু-শব্দ শুনিয়েছে্ন তেজস্বী- এমন অভিযোগ উঠেছে।
বেঙ্গালুরুতে ১৯ নভেম্বর, ১৯৯০ তে জন্মগ্রহণকারী তেজস্বী সূর্য একজন অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসারের এবং একজন স্কুলশিক্ষিকার ছেলে। তিনি একজন প্রশিক্ষিত কর্ণাটিক সংগীতশিল্পী যিনি নিজেকে একজন উৎসাহী পাঠক, ইতিহাস উৎসাহী এবং ‘হিন্দুত্ববাদের মূল বিশ্বাসী’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন, ভারতের দর্শন যা প্রাচীন কাল থেকেই ভারতবর্ষের মূল বিষয়। জুন ২০১৮ সালে, বিজেপি কংগ্রেসের কাছে কর্ণাটকের জয়নগর বিধানসভা পরাজয়ের পরে, তেজস্বী টুইট করেছেন, ‘‘মুসলিম ভোটের সম্পূর্ণ একীকরণের’’ কারণেই। তারপরে তিনি বিজেপিকে সত্যই ’হিন্দু দলে’ পরিণত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। শাহীনবাগের বিক্ষোভের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘‘সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায় সচেতন না হলে মুঘল রাজ খুব বেশি দূরে নয়’’৷ কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে কিছুদিন আগেই টুইটার ১২১টি টুইট মুছে দিয়েছে৷ ওই টুইটগুলির মধ্যে তেজস্বীর একটি বিতর্কিত টুইট ছিল৷