Kashmir Attacks Targeting Hindus
শ্রীনগর: কাশ্মীর ফের শিরোনামে। এবার শুধু সীমান্তে অনুপ্রবেশ নয়, উপত্যকায় লেগেছে নিরীহ পর্যটকদের রক্তের দাগ৷ প্রশ্ন উঠছে—উপত্যকায় বেছে বেছে হিন্দুদের উপর আক্রমণের পিছনে আদৌ কি কোনও সুগভীর ক্ষোভ কাজ করছে? সেই ক্ষোভের কেন্দ্রে কি রয়েছে বিতর্কিত ওয়াকফ বোর্ড ইস্যু?
ঘটনাগুলোর মিল খুঁজলে যা দেখা যাচ্ছে
দক্ষিণ কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সদ্য ঘটে যাওয়া হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন নিরীহ পর্যটকরা, যাঁদের অধিকাংশই হিন্দু। ঠিক পরের দিনই বারামুল্লায় সীমান্ত পেরিয়ে ঢোকা দুই জঙ্গিকে খতম করে সেনা। কাশ্মীর উপত্যকায় সন্ত্রাসবাদ নতুন কোনও ঘটনা নয়, কিন্তু যেভাবে লক্ষ্য করে হিন্দু সম্প্রদায়কে আক্রমণ করা হচ্ছে, তা নতুন করে দেশের নজর কেড়েছে। বারামুল্লা বা পহেলগাঁও—দুই ক্ষেত্রেই সাধারণ নিরীহ হিন্দু নাগরিকদের টার্গেট করে সংঘটিত হয়েছে মারণ আক্রমণ। হঠাৎই যেন হিন্দুদের লক্ষ্য করে আক্রমণের হার বেড়ে গেছে। শুধু কাকতালীয় বললে কি পুরো সত্যটা ধরা যাবে?
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, হামলাকারীরা প্রথমে পুলিশ পরিচয়ে পর্যটকদের কাছ থেকে নাম জানতে চায় এবং পরে হিন্দুদের ধর্মীয় পরিচয় যাচাই করে তাঁদের হত্যা করে। তারা কোরানের কালমা পাঠ করতে বলে। এরই মধ্যে এক জঙ্গি আতঙ্কিত মহিলা পর্যটককে রক্তচক্ষু দেখিয়ে বলে, “তুমি বেঁচে থাকবে, যাতে মোদীকে জানাতে পারো কী হয়েছে।”
ওয়াকফ বোর্ড: জমি-সম্পত্তি না কি রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রশ্ন? Kashmir Attacks Targeting Hindus
ভারতে ওয়াকফ বোর্ড বহুদিন ধরেই একটি সংবেদনশীল ইস্যু। মুসলিম ধর্মীয় স্থানের দেখভাল, অর্থ সংগ্রহ, সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা—সবই এর আওতায় পড়ে। কিন্তু সম্প্রতি কেন্দ্রীয় প্রশাসনের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে আসার পর থেকেই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে কিছু প্রভাবশালী মহলে। বহু লোক মনে করছেন, যাদের দশকের পর দশক ধরে ওয়াকফের উপর নিয়ন্ত্রণ ছিল, হঠাৎ করেই তারা ক্ষমতার বাইরে চলে গিয়েছেন। এই ‘ক্ষমতা হ্রাস’ সহজভাবে নেয়নি অনেকেই। এবং সেই ক্ষোভ কি এখন অন্যভাবে ছড়িয়ে পড়ছে?
কাদের লাভ হচ্ছে এই আক্রমণ থেকে?
‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ বা লস্করের মতো সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা করছে কাশ্মীরকে অস্থির করে তুলতে। হিন্দুদের টার্গেট করে হামলা সেই একই পুরনো কৌশলেরই আধুনিক রূপ। সমাজে আতঙ্ক ছড়ানো, পর্যটনকে ধাক্কা দেওয়া, এবং হিন্দু-মুসলিম বিভাজনকে উস্কে দেওয়াই লক্ষ্য। নতুন করে ওয়াকফ বিতর্ক সেই আগুনে ঘি ঢালছে।
প্রতিক্রিয়া ও পথ খোঁজার চেষ্টা
প্রধানমন্ত্রী মোদীর সৌদি সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফেরা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপত্যকায় আসা—সবটাই দেখায় যে কেন্দ্র ঘটনাগুলিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে। তবে এটা শুধু সেনার বিষয় নয়। রাজনীতি, প্রশাসন, ধর্ম এবং সমাজ—সব মিলিয়ে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে।
কাশ্মীরে হিন্দুদের উপর ধারাবাহিক হামলা নিছক টার্গেট কিলিং নয়—এ এক গভীর অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ। ওয়াকফ বোর্ড নিয়ে ক্ষমতার লড়াই তারই সম্ভাব্য উৎস হতে পারে। এখন দরকার তীক্ষ্ণ নজরদারি, সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে পদক্ষেপ, আর একটাই প্রশ্নের জবাব খোঁজা—এই অশান্তি কি শুধুই ধর্মীয়, নাকি এর পিছনে আরও বড় কিছু লুকিয়ে আছে?
Politics: Why are Hindu tourists being specifically targeted in Kashmir attacks? Is there a link to the Waqf Board controversy? Analysis of the recent Pahalgam and Baramulla incidents and the targeting pattern.