Aajbikel

নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে নজরে 'কালীঘাটের কাকু'! এবার কি জিজ্ঞাসাবাদ করবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা?

 | 
কালীঘাটের কাকু

নিজস্ব প্রতিনিধি: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে একের পর এক নাম উঠে আসছে। তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র। যিনি সদ্য পরিচিত হয়েছেন 'কালীঘাটের কাকু' নামে। তিনি কর্মসূত্রে বসেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি অফিসে। বহু বছর ধরে সেখানেই চাকরি করছেন তিনি। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত তাপস মণ্ডল মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেছেন,'' কুন্তল ঘোষ বার বার কালীঘাটের কাকুর কথা বলত।‌ কালীঘাটের কাকুকে টাকা দিতে হবে, বলত সে। সুজয় ভদ্রই সেই কালীঘাটের কাকু''। যদিও নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন সুজয়।

বুধবার একটি  বৈদ্যুতিন মাধ্যমে সুজয়  বলেন, ''তাপস মণ্ডলকে চিনি না। এই সমস্ত ঘটনায় আমার সামান্যতম যোগ নেই। যাঁরা বলছেন তাঁরা এর ব্যাখ্যা দিতে পারবেন। তাপস মণ্ডলই বলছেন আমায় চেনেন না। আমি যদি চাকরি দিতে পারতাম তাহলে নিজের ভাইঝিকেই চাকরি দিতাম। আমার মেয়েও এসএসসির গ্রুপ সির পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পায়নি। আমি চাকরি করাতে পারলে তো তাঁদের চাকরি হতো। আমার সাহেব অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আমার সাহেবকে ছুঁতে না পেরে আমার কাছে এসে থেমে যাচ্ছে।'' সেই সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে নাম জড়ানো গোপাল দলপতিকে চেনেন না বলেও জানিয়েছেন তিনি। এর পাশাপাশি সুজয় বলেন,'' কুন্তল যেদিন বলবেন কালীঘাটের কাকুকে টাকা দিয়েছি সেদিন জবাব দেব"‌। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন কয়লা পাচার মামলায় সাক্ষী হিসেবে তাঁকে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। ইডিও ডেকেছিল তাঁকে। তবে স্ত্রী অসুস্থ থাকায় যেতে পারেননি বলে জানিয়েছেন সুজয়। সবচেয়ে বড় কথা কেন তাঁকে 'কালীঘাটের কাকু' বলা হচ্ছে তা নিয়ে কোনও যুক্তিই খুঁজে পাচ্ছেন না সুজয়। সুজয় বলছেন তাঁর কর্মস্থল নিউ আলিপুর, কালীঘাট নয়। তাই ওই নামে তাঁকে ডাকা হচ্ছে বলে বেশ অবাকই হচ্ছেন তিনি।

তাপস মণ্ডল যখনই 'কালীঘাটের কাকু'র প্রসঙ্গের অবতারণা করেছেন তখন থেকেই বিষয়টি নিয়ে ওয়াকিবহাল মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। তাপসের স্পষ্ট দাবি যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ যে বিপুল পরিমাণ টাকা তুলেছিলেন তার একটা অংশ পৌঁছে গিয়েছিল 'কালীঘাটের কাকু'র কাছে। তবে সত্যিই কি সুজয় ভদ্র টাকা নিতেন? আর টাকা নিয়ে থাকলে সেটা কাদের কাছে পৌঁছে যেত? এই প্রশ্ন স্বাভাবিক ভাবেই উঠছে। এই পরিস্থিতিতে নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে যেভাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে চাকরি করা সুজয় ভদ্রের নাম জড়িয়েছে তা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে যেহেতু সুজয়বাবু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে কাজ করেন তাই 'কালীঘাটের কাকু' প্রসঙ্গটি বর্তমানে অন্য মাত্রা পেয়েছে। যদিও তৃণমূলের বক্তব্য কেউ কোথাও চাকরি করতেই পারেন। তাতে কি এসে যায়? তার মানেই কি তিনি দুর্নীতি করেছেন? এই অবহের মধ্যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা শীঘ্রই সুজয়কে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে বলে বিশেষ সূত্রে খবর পাওয়া যাচ্ছে। তাই তদন্ত প্রক্রিয়া যত এগোচ্ছে ততই নানা নাম যেভাবে সামনে উঠে আসছে তাতে নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের মাকড়সার জাল কতদূর ছড়িয়ে পড়েছে সেটা কিছুটা হলেও আন্দাজ করা যাচ্ছে। এই জল কত দূর পর্যন্ত বিস্তৃত এখন সেটাই দেখার।
 

Around The Web

Trending News

You May like