যুবসমাজের কণ্ঠরোধ করা অসম্ভব, সিএএ’র প্রতিবাদে সমর্থন আলুওয়ালিয়ার

“যুবসমাজের কন্ঠস্বর সহজে রোধ করা সম্ভব নয়। যেকোনো সমাজের ছাত্র-যুবরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জোরের সঙ্গে সত্যি কথাই বলে কারণ তাদের কিছু হারানোর তুলনায় পাওয়ার প্রত্যাশাই বেশি।” নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদীদের সমর্থনে যুব সমাজের পাশেই দাঁড়ালেন প্রবীণ অর্থনীতিবীদ তথা প্রাক্তন প্ল্যানিং কমিশনের প্রাক্তন ডেপুটি কমিশনার মন্টেক সিং আলুওয়ালিয়া।

নয়াদিল্লি: নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদীদের সমর্থনে যুব সমাজের পাশেই দাঁড়ালেন প্রবীণ অর্থনীতিবীদ তথা প্রাক্তন প্ল্যানিং কমিশনের প্রাক্তন ডেপুটি কমিশনার মন্টেক সিং আলুওয়ালিয়া। তিনি বলেছেন “নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন এবং সম্ভাব্য জাতীয় নাগরিক পঞ্জি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছাত্র ও যুবসমাজের মাধ্যমে ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। যুবসমাজের কন্ঠস্বর সহজে রোধ করা সম্ভব নয়। যেকোনো সমাজের ছাত্র-যুবরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জোরের সঙ্গে সত্যি কথাই বলে কারণ তাদের কিছু হারানোর তুলনায় পাওয়ার প্রত্যাশা বেশি।” তিনি বলেছেন এই মুহূর্তে জরুরী ভিত্তিতে সামাজিক সম্প্রীতির পরিবেশ ফিরিয়ে আনাটা অত্যন্ত প্রয়োজন।  

আলুওয়ালিয়া যিনি তিন দশক ধরে ভারতের প্রবীণ অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারক হিসাবে কাজ করেছিলেন,  সম্প্রতি প্রকাশিত তাঁর লেখা “ব্যাকস্টেজ: দ্য স্টোরি ব্যাক ইন্ডিয়ান হাই গ্রোথ ইয়ারস” বইটিতে নিজের দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছেন যা দেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসের রাজনীতি, ব্যক্তিত্ব, ঘটনা ও সংকটকে কেন্দ্র করে। দেশের অর্থনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, “বিনিয়োগের পুনরুজ্জীবনের পক্ষে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে প্রতিবাদের আওয়াজ শুনতে হবে এবং সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। ভারতের আদর্শকে পুনরুজ্জীবিত করতে জরুরী ভিত্তিতে দেশে সামাজিক সম্প্রীতি ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে।”

তাঁর মতে, বিরোধিতা দমন করতে স্বৈরাচারী নীতিগুলির  প্রভাব খুবই সামান্য কারণ বিনিয়োগকারীরা প্রাথমিকভাবে সামাজিক স্থিতিশীলতায় আগ্রহী। তিনি বলেন,”তান্ত্রিক সমাজে যেখানে বিরোধিতাকে দমন করা সম্ভব নয় সেখানে বিরোধীদের কথা শুনতে হবে  এবং ঐক্য বজায় রেখে চলতে হবে। গণতান্ত্রিক নিয়মাবলী অনুসরণের জন্য ভারত বহু প্রশংসিত এবং এই খ্যাতি রক্ষা করা দরকার।” আলুওয়ালিয়া, যিনি ভারতের মত দেশের অর্থনীতিকে রাষ্ট্র-পরিচালিত থেকে বাজার ভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপান্তরে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন, তিনি ইউপিএর আমলের প্রথমার্ধে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি দারিদ্র্যতা হ্রাসের ক্ষেত্রেও তার কৃতিত্ব তুলে ধরেছেন।  তিনি বলেছেন যে ২০১২ সালের লোকসভা নির্বাচন এনডিএ সরকারকে একটি বিশাল প্রতিনিধিত্ব দিয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রচুর রাজনৈতিক মূলধন সংগ্রহ করেছেন। 

তবে নিজের লেখা এই বইটিতে বর্তমান সরকারের সমালোচনার পাশাপাশি ইউপিএ সরকারের সাফল্য এবং ব্যর্থতা নিয়েও তিনি আলোচনা করেছেন যখন তিনি পরিকল্পনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান ছিলেন,যা মন্ত্রিপরিষদ পর্যায়ের পদ। তিনি সেই সময়ে সরকারের উদ্যমহীন নীতি এবং দুর্নীতির অভিযোগ সম্পর্কেও উল্লেখ করেছিলেন যা দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের শেষ কয়েক বছরে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল। নিজের লেখা “ব্যাকস্টেজ: দ্য স্টোরি ব্যাক ইন্ডিয়ান হাই গ্রোথ ইয়ারস” বইটিকে তিনি ভারতের অর্থনৈতিক সংস্কারের একটি ভ্রমণকাহিনী বলে উল্লেখ করেছেন, যেক্ষেত্রে তাঁর দীর্ঘ ৩০ বছরের অভিজ্ঞতা জড়িয়ে আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *