পাটনা: ভোট আসে ভোট যায়, কিন্তু দিন বদলায় না পরিযায়ী শ্রমিকদের৷ ভোট এলেই চলে তোষামোদ আর প্রতিশ্রুতির পর্ব৷ কিন্তু ভোট মিটলেই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গীতেই তাঁদের কথা ভুলে যান নেতা মন্ত্রীরা৷ বিহারও তার ব্যতিক্রম নয়৷ লকডাউনের একেবারে গোড়ার দিকে পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে ঢুকতেই দেননি নীতীশ কুমার৷ এবার সেই হিসাব বরাবর চোকাবেন তাঁরা৷ জবাব দেবেন ইভিএম-এ৷
আরও পড়ুন- বিহারের কঠিন যুদ্ধে নীতীশ-লক্ষ্য ৪ ‘ম’! পাল্টা কৌশল মহাজোটের!
এর পর আসে অনুদানের প্রতিশ্রুতি৷ লকডাউনের মাঝে ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের এক হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন নীতীশ কুমার৷ কিন্তু অধিকাংশ পরিযায়ী শ্রমিকই সেই অনুদানের টাকা চোখে দেখেননি৷ কেউ কেউ বলছেন, যারা নাকি পঞ্চায়েত প্রধানের ঘনিষ্ঠ, তাঁদের মধ্যে এক-আধ জন এই টাকা পেয়েছেন৷ বাকিরা বঞ্চিত৷ ফলে নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছেন পরিযায়ীরা৷ মাইলের পর মাইল পথ হেঁটে ঘরে ফেরা পরিযায়ীরা আজ যাবতীয় বঞ্চনার হিসেব কি নেবে না?
বুধবার সকালে ভোট শুরু হতেই আবার দেখা গেল রাষ্ট্রের মানবিক মুখ৷ প্রতিবন্ধী ও বৃদ্ধ মানুষদের হাত ধরে বুথে পৌঁছে দিচ্ছেন সিআরপিএফ জওয়ানরা৷ কিন্তু লকডাউনের সময় এই মানবিক মুখে দেখা যায়নি৷ তখন কোথায় ছিল এই মানবিকতা? তপ্ত রাস্তায় নগ্ন পায়ে পরিযায়ী শ্রমিকরা যখন মাইলের পর মাইল পথ হাঁটল, তখন কেন তাঁদের পাশে এভাবে দাঁড়াল না রাষ্ট্র? সেই পরিযায়ী শ্রমিকরা আজ সেই কষ্টের প্রতিশোধ কি নেবে না?
আরও পড়ুন- করোনাকালে কোভিড বিধি মেনে ভোট দেওয়ার আর্জি নমোর
এছাড়াও বিহারে নির্বাচনে এই বছর সবচেয়ে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে বেকারত্ব৷ লকডাউনের পড় যা আরও গভীর সঙ্কট হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ বিহারের যুব সমাজ প্রশ্ন তুলেছেন, গত ১৫ বছরে চাকরি কোথায়? কাজ না পেয়ে শুধু পরিযায়ীরাই রাজ্য ছাড়েননি৷ চাকরির অভাবে রাজ্য ছেড়েছে উচ্চ শিক্ষিতরাও৷ গত পাঁচ বছরে সরকারি কোনও নিয়োগ হয়নি। তেজস্বী যাদবের দাবি, অন্তত চার থেকে পাঁচ লক্ষ সরকারি পদ খালি পড়ে রয়েছে। রোধীদের আক্রমণের মুখে ভোটের আগে শিক্ষক ও পুলিশে নিয়োগের ঘোষণা করেছিলেন নীতীশ কুমার। কিন্তু আদর্শ আচরণবিধি চালু হওয়ায় সেটাও আটকে গিয়েছে। অন্যদিকে, ক্ষমতায় এলে ১০ লক্ষ চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন লালু-পুত্র তেজস্বী যাদব৷