এবার সরাসরি ইজরায়েলের পাশে দাঁড়াল ভারত! আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের দাপট দিন দিন বাড়ছে?

এবার সরাসরি ইজরায়েলের পাশে দাঁড়াল ভারত! আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের দাপট দিন দিন বাড়ছে?

india

নয়াদিল্লি:  ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি গাজা সীমান্তে। ভয়াবহ যুদ্ধের সাক্ষী থাকছে গোটা বিশ্ব।

ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করলেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী। যুদ্ধ পরিস্থিতির কথা মোদিকে জানিয়েছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তাতে ইজরায়েলের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন মোদি। নেতানিয়াহুর ফোনের পর এক্স  হ্যান্ডেলে মোদি লেখেন, “আমাকে ফোন করে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী সে দেশের পরিস্থিতি জানিয়েছেন। সেখানকার পরিস্থিতি জানিয়েছেন বলে আমি ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু’কে ধন্যবাদ জানিয়েছি। এই কঠিন সময়ে ভারতবাসী ইজরায়েলের পাশে দৃঢ়ভাবে রয়েছে। ভারত সমস্ত সন্ত্রাসবাদের তীব্র নিন্দা করছে।”

আর মোদির এই বলিষ্ঠ পদক্ষেপ এখন আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে অন্যতম চর্চিত বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে। কিন্তু কেন? ঘটনা হল বিগত কয়েক দশকের ইতিহাস বলছে পরিস্থিতি বিচার করে ভারত সব সময় কূটনৈতিকভাবে ভারসাম্যের নীতি অনুসরণ করে চলেছে। তাই দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলতে থাকলেও ভারত সেখানে ভারসাম্যের নীতি থেকে সরে আসেনি। সরাসরি রাশিয়া বা ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ায়নি নয়াদিল্লি। ভারত যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তির বার্তা দিয়েছে, যা কূটনীতিক ভারসাম্যের অন্যতম বড় উদাহরণ বলেই আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। সেই জায়গা থেকে গত শনিবার ইজরায়েলে যখন হামাস রকেট হামলা করে তখন নেতানিয়াহুর দেশের প্রতি স্পষ্ট সমর্থন জানিয়েছেন মোদি। স্বাভাবিকভাবেই প্রধানমন্ত্রীর এই অবস্থান নিয়ে জোর চর্চা চলছে আন্তর্জাতিক মহলে।

ইজরায়েলের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক যথেষ্ট ভাল। ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যখন ইজরায়েল সফরে গিয়েছিলেন তখন থেকেই নেতানিয়াহুর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এমনকী সবার সামনে মোদিকে ‘দোস্ত’ বলে সম্বোধন করেছিলেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী। এরপর  ২০১৮ সালে নেতানিয়াহু নয়াদিল্লিতে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পাশে দাঁড়িয়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের অঙ্গীকার করেছিলেন। তাই এই কঠিন সময়ে ইজরায়েলের পাশে যে মোদি দাঁড়াবেন তাতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই।

হামাসের হামলার পরেই নেতানিয়াহু গাজা ভূ-খণ্ডে সেনা অভিযান ঘোষণা করে প্যালেস্তানিয়দের ওই এলাকা ছাড়ার হুঙ্কার দেন। এরপরই এক্স হ্যান্ডেলে মোদি লিখেছিলেন, “ইজরায়েলে যে জঙ্গিহানা হয়েছে সে খবর পেয়ে আমি হতবাক। অসংখ্য নিরীহ মানুষের প্রাণ গিয়েছে, তাঁদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। কঠিন সময়ে আমরা ইজরায়েলের পাশে রয়েছি।”

হামাসের হামলার পরেই পাল্টা জবাব দিচ্ছে ইজরায়েল। আর মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী যেভাবে মোদিকে ফোন করলেন এবং তাতে নয়াদিল্লির তরফ থেকে যেভাবে তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, তা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবেই চিহ্নিত হল।

তবে মোদির এই ভূমিকায় কিছুটা হলেও ভোট অঙ্ক দেখছেন রাজনীতির কারবারিরা। উল্লেখ্য হামাস একটি প্যালেস্টাইন যোদ্ধা গোষ্ঠী, যাদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য প্যালেস্টাইনের স্বাধীনতা এবং ইজরায়েল, গাজা এবং ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক-সহ বিস্তৃত এলাকা জুড়ে ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। তবে কী সেই ভোট অঙ্কেই ইজরায়েলের পাশে দাঁড়ালেন মোদি? যথারীতি বিষয়টি নিয়ে ওয়াকিবহাল মহলে এমন চর্চা শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে মোদি-নেতানিয়াহুর আরও কাছাকাছি আসাটা যে যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

14 − nine =