কলকাতা: সপরিবারে শিক্ষককে কুপিয়ে খুনের ঘটনায় ফের রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলাকে কাঠগড়ায় তুললেন রাজ্যপাল রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর৷ বিজয়া দশমীর দিনে মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জের সদরঘাট লাগোয়া লেবুবাগান এলাকায় স্কুল শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল ও তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বিউটি মণ্ডল পাল, তাঁদের ৫ বছরের একমাত্র সন্তান অঙ্গনের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধারের ঘটনা অমানবিক ও লজ্জাজনক বলে মন্তব্য রাজ্যপালের৷ রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন৷
সংবাদমাধ্যে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর জানিয়েছেন, আমরা এ কোন রাজ্যে বসবাস করছি? শিক্ষককে কুপিয়ে খুনের ঘটনার নৃশংসতা ভাবলে শিউড়ে উঠছি৷ ঘটনার দু’দিন পরও প্রশাসনের কোনও ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছে না৷ এই নীরবতা ভয়ংকর৷ আর তাতেই অনেক কিছু বুঝিয়ে দিচ্ছে৷ আমি এই ঘটনায় বিচলিত৷ প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট চেয়েছি৷ চাইব, পুলিশ সত্যনিষ্ঠাতার সঙ্গে তদন্ত করুক৷ তদন্ত যেন প্রভাবিত না হয়৷’’ রাজ্যপালের মন্তব্যে পাল্টা মন্তব্য করছে তৃণমূল৷ রাজ্যপালের মন্তব্য দুর্ভাগ্যজনক বলে জানিয়েছেন তাপস রায়৷ কিছু ঘটনা নিয়ে মন্তব্য করছেন রাজ্যপাল, দাবি তৃণমূলের পরিষদীয় নেতার৷
Jagdeep Dhankhar, West Bengal Guv on murder of a teacher-cum-RSS worker,his wife&child in Murshidabad: There has been no response from state machinery so far,this is a serious reflection on the situation in which we are living. I have spoken to the authorities & sought an update. pic.twitter.com/hG6LAXDwnE
— ANI (@ANI) October 10, 2019
অন্যদিকে, স্ত্রী-পুত্রসহ স্কুল শিক্ষককে কুপিয়ে খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর মোড়৷ সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ নাকি স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন এই নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চা৷ তবে পুলিশের অনুমান, সপরিবারে শিক্ষককে খুনের পিছনে পরিচিত কারোর হাত রয়েছে৷ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয়দের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন ওই শিক্ষক৷ ঋণের টাকা ফেরত দেওয়া ঘিরে টানাপোড়েন হয়ে থাকতে পারে৷ স্থানীয়দের আশঙ্কা, ঋণের টাকা না মেটানোই খুব সম্ভবত শিক্ষককে খুন করা হয়ে থাকতে পারে৷ ঋণের পাশাপাশি শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পালের সঙ্গে তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বিউটি মণ্ডলের সঙ্গেও সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল বলেও অনেকে মনে করছেন৷ তাদের সম্পর্কে তৃতীয় কোনও ব্যক্তি ছিলেন কি না তা নিয়েও শুরু হয়েছে পুলিশি তদন্ত৷ তদন্তে বন্ধু প্রকাশ পালের ঘনিষ্ঠ বন্ধুর খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ৷ ইতিমধ্যেই শিক্ষকের পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করেছে পুলিশ৷ তবে ঘটনার দু’দিন পরও কাইকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ৷
বিজয়া দশমীর দিন নিজের বাড়িতে রহস্যজনকভাবে খুন হন স্কুল শিক্ষক ও তাঁর পরিবার৷ মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জের সদরঘাট লাগোয়া লেবুবাগান এলাকায় স্কুল শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল ও তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বিউটি পাল, তাদের ৫ বছরের একমাত্র সন্তান অঙ্গনের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় ইতিমধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়৷ সপরিবারে শিক্ষকের খুনের প্রতিবাদে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন শিক্ষকদের একাংশ৷
পুলিশ সূত্রে খবর, শিক্ষকের বাড়িতে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে৷ আলমারি অবিন্যস্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়ায় খুনের মোটিভ ঙিরে জারি হয়েছে ধোঁয়াশা৷ পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, পারিবারিক শত্রুতার কারণে তাঁদের নিশংস ভাবে খুন করে করা হয়ে থাকতে পারে৷ যেভাবে শিক্ষা ও তাঁর স্ত্রী-পুত্রকে যে ভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে, তাঁর পিছনে পেশাদারী খুনিদের যোগাযোগ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ৷ ইতিমধ্যেই নিহত শিক্ষকের বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করেছে পুলিশ৷ তবে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ৷ জানা গিয়েছে, সাহাপুর প্রাথমিক স্কুলের ২০০৫ সালে শিক্ষকতার চাকরি যোগদান করেন বন্ধুপ্রকাশ৷ বিয়ে করেন ৬ বছর আগে৷