আজ বিকেল: পানীয় জলের সমস্যা না মিটলে ভোট দেবে না গোটা গ্রাম। গরম পড়তে না পড়তেই শুকিয়ে কাঠ খাল বিল পুকুর, গ্রামের শুরুতে থাকা খান তিনেক নলকূপ থেকেও জলের ফোটা পড়ছে না। কংসাবতীতে নদীতে জলের দেখা নেই রীতিমতো বালি খুঁড়ে চলছে জল তোলার কাজ। সেই দিয়েই কোনওরকম তৃষ্ণা নিবারণ করছে পুরুলিয়া ১ নম্বর ব্লকের কোটলুই গ্রামের বাসিন্দারা।
গোটা এলাকা যেন তেতেপুড়ে যাচ্ছে, জলের জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে। এখনও ভরা গরম বেশ খানিকটা দূরে, কী করে যে আগামী কয়েকটা মাস কাটবে জানে না বাসিন্দারা। এরমধ্যেই হৈ হৈ করে ভোটের দামামা বেজে গিয়েছে, দুএকদিনের মধ্যেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা ভোট চাইতে গ্রামের বাড়ি বাড়ি পরিদর্শন শুরু করবেন। কিন্তু গ্রামের মহিলারা এককাট্টা এবার আর ভোট দেওয়া যাবে না। প্রতিবছর বোট এলে কোটলুইতে রাজনৈতিক নেতাদের ভিড় জমে যায়, সকাল বিকেল বাড়ি বাড়ি গিয়ে হাতজোড় করে বিনয়ের অবতার সাজেন সকলে। জলের ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন প্রায় সকলেই। শুধু ভোট য়াওয়ার অপেক্ষা ফলপ্রকাশের পর আর কারোর টিকি দেখা যায় না গোটা ব্লকে। এই ছবির কোনও হেরফের ঘটেনি গত বছরগুলিতে।
তাই জলের স্থায়ী ব্যবস্থা না হলে এবার আর গ্রামের কেউই ভোট দিতে যাবেন না, সাফ জানিয়ে দিল মহিলা ব্রিগেড। আগে পানীয় জল সুনিশ্চিত হোক তারপর ভোট। শুধু ভোট ভয়কট নয়, বাড়ির দেওয়ালে রাজনৈতিক দলের প্রতীক প্রতিনিধির নাম-সহ কোনও রকম প্রচারও করা যাবে না। এককথায় দেওয়াল লিখন বন্ধ। আন্দোলনকারী মহিলাদের অভিযোগ, এই জলের সমস্যা নিয়ে বহুবার গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে ব্লক অফিসে বিডেও পর্যন্ত দরবার করা হয়েছে, কিন্তু কাজের কাজ কিছউ হয়নি। এদিকে ভোট বয়কটের কারণ জানতে পেরে পুরুলিয়া এক এর বিডিও দিব্যজ্যোতি দাস জানিয়েছেন, নলকূপ গুলি গরম পড়তে না পড়তেই খারাপ হয়ে গিয়েছে, খুব শিগগির সেগুলি ঠিক করা হবে। তাই পানীয়জল সংক্রান্ত সমস্যাও দূর হবে, যদিও বিডিও-র আশ্বাসে ভুলছেন না মহিলারা। যতক্ষণ না হাতেগরম ফল পাচ্ছেন, ততক্ষণ ভোট নয়।