কলকাতা: লোকসভা নির্বাচনের পরে হিড়িক উঠেছিল রাজনৈতিক পালাবদলের৷ ভোটের ফল দেখে গেরুয়া বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তৃণমূলের দেখানো সেই দলভাঙানোর লড়ায়ে৷ কিন্তু, তৃণমূলের পথ অনুসরণ করতে গিয়ে কার্যত ধরাশায়ী হতে হল গেরুয়া শিবিরকে৷ গত লোকসভা নির্বাচনের পর যে সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি তৃণমূলের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল বিজেপি, সেগুলি পুনর্দখল করেছে তৃণমূল৷ নৈহাটি, হালিশহর, বনগাঁর পর সেই তালিকায় শামিল হয়েছে গারুলিয়া পুরসভা৷ কিন্তু জানেন, সাম্প্রতিককালে ছটি পুরসভায় কতটা ক্ষয় হয়েছে বিজেপির৷
পরিসংখ্যান বলছে, হরিণঘাটা পুরসভার মোট কাউন্সিলরের সংখ্যা ছিল ১৭, তার মধ্যে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন আটজন৷ এখন তৃণমূলের দখলে রয়েছে ১১ জন কাউন্সিলর৷ নৈহাটি পুরসভার মোট আসন সংখ্যা ৩১টি৷ বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন ১৮ জন৷ এই মুহূর্তে তৃণমূলের দখলে রয়েছে ২৪ কাউন্সিলরের সমর্থন৷ হালিশহর পুরসভার ২৩ আসনের মধ্যে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন ১৮ জন কাউন্সিলর৷ এখন ২০ জন তৃণমূলের৷ বনগাঁ পুরসভার কাউন্সিলর সংখ্যা ২২টি৷ বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন ১১ জন৷ তৃণমূলের দখলে ১৪ জন কাউন্সিলরের সমর্থন৷
গারুলিয়া পুরসভার কাউন্সিলর সংখ্যা ২১টি৷ বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন ১৪ জন৷ এখন তৃণমূল ১৫ কাউন্সিলরকে নিয়ে বোর্ড গঠন করেছে৷ এই মুহূর্তে তৃণমূলের পাখির চোখ ভাটপাড়া পুরসভা৷ সেখানে মোট কাউন্সিলরের সংখ্যা ৩৫ জন৷ বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন ২৮ জন কাউন্সিলর৷ এই মুহূর্তে তৃণমূলের সংখ্যা মাত্র ৬-এ নেমে এসেছে৷
লোকসভা ভোটের পর অর্জুন সিংয়ের হাত ধরে গারুলিয়া পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন৷ পুরসভার তৎকালীন চেয়ারম্যান ও নোয়াপাড়ার বিধায়ক সুনীল সিংহ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লেখান৷ ফলে গেরুয়া গারুলিয়া পুরসভা হাতছাড়া হয়েছিল তৃণমূলের৷
কিন্তু কেয়ক মাসের মধ্যে ফের ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামে তৃণমূল৷ ধাপে ধাপে ১০ কাউন্সিলরকে ফিরিয়ে আনার তোড়জোড় শুরু করে তৃণমূল৷ এরপর একের পর এক কাউন্সিলর বিজেপি ছেড়ে ফের তৃণমূলে যোগ দিতে শুরু করলে গারুলিয়া পুরসভা সংখ্যাগরিষ্ঠতায় হারায় বিজেপি৷ সম্প্রতি অনাস্থা ভোটের আগেই পুরসভার চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেন৷ এর পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় গারুলিয়া পুরসভার বোর্ড গঠন ও প্রধান নির্বাচন প্রক্রিয়া সমাপ্ত হয়েছে৷ নতুন করে ক্ষমতায় ফিরেছে তৃণমূল৷