কোন দলকে কত টাকা সাহায্য? নির্বাচনী বন্ডে বৈধতা দিয়ে সুপ্রিম নির্দেশ

নয়াদিল্লি: দীর্ঘ বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে ঐতিহাসিক ঘোষণা দেশের শীর্ষ আদালতের৷ নির্বাচনী বন্ড ঘিরে তৈরি হওয়া সমস্ত বিতর্ক জল ঢেলে অবশেষে ‘বৈধতা’ দিল সুপ্রিম কোর্ট৷ তবে, নিবাচনী বন্ডকে বৈধতা দেওয়া হলেও কে বা কারা এই বন্ড কিনেছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য মুখ বন্ধ খামে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে কমিশনকে জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত৷ এ বিষয়ে

b9157b268dcd88fcca348b0cd10a0c57

কোন দলকে কত টাকা সাহায্য? নির্বাচনী বন্ডে বৈধতা দিয়ে সুপ্রিম নির্দেশ

নয়াদিল্লি: দীর্ঘ বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে ঐতিহাসিক ঘোষণা দেশের শীর্ষ আদালতের৷ নির্বাচনী বন্ড ঘিরে তৈরি হওয়া সমস্ত বিতর্ক জল ঢেলে অবশেষে ‘বৈধতা’ দিল সুপ্রিম কোর্ট৷ তবে, নিবাচনী বন্ডকে বৈধতা দেওয়া হলেও কে বা কারা এই বন্ড কিনেছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য মুখ বন্ধ খামে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে কমিশনকে জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত৷ এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে ৩০ মের মধ্যে বিস্তারিত জানানোর জন্য নির্দেশও দেওয়া হয়েছে৷

কোন রাজনৈতিক দলকে কে টাকা দিচ্ছে, সাধারণ ভোটারদের তা জানারই দরকার নেই বলে মত আগেই জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার৷  নির্বাচনী বন্ড মামলায় কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল জানান, বাস্তব পরিস্থিতি অনুযায়ী, কে বা কারা দলকে টাকা দিচ্ছেন, ভোটারের তা জানার প্রয়োজন নেই৷ ভোটে কালো টাকার ব্যবহার বন্ধ করতেই এই প্রকল্প চালু করা হয়েছে৷

একটি অসরকারি সংস্থা নির্বাচনী বন্ড প্রকল্পের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে মামলা করে৷ এসবিআইয়ের থেকে এই বন্ড কিনে দলকে দিতে হয়, তারা বন্ডের বিমিনময়ে টাকা নেয় ব্যাঙ্ক থেকে। কিন্তু বন্ডক্রেতার নাম-পরিচয় গোপন থাকে। সংস্থার যুক্তি, নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই প্রকল্প স্থগিত রাখা হোক নয়তো কোন ব্যক্তি বা সংস্থা বিভিন্ন দলকে বন্ডের মাধ্যমে অনুদান দিচ্ছেন বা দিচ্ছে, তা সর্বসমক্ষে প্রকাশ করা হোক৷ এদিন এই দাবিকেই গুরুত্ব দিয়ে বন্ড ক্রেতার নাম জানানো নির্দেশ দেয় দেশের শীর্ষ আদালত৷

লোকসভা নির্বাচনের আগে এক লাফে অনেকটা বেড়ে গিয়েছে নির্বাচনী বন্ডের বিক্রি। এবছর মাত্র তিন মাসে ১,৭১৬ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড বিক্রি হয়েছে, যেখানে ২০১৮’তে গোটা বছরে বিক্রি হয়েছে ১,০৫৬ কোটি টাকা। তথ্যের অধিকার আইনে পুনের বিহার দুর্বে যে নোটিস পাঠিয়েছিলেন, তার জবাবে এক বিবৃতিতে একথা জানিয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া।

নির্বাচন কমিশনের কাছে বিজেপি গত আর্থিক বছরের যে অডিট রিপোর্ট জমা দিয়েছে, তা থেকে বেরিয়ে এসেছে বিস্ফোরক তথ্য। ২০১৮’তে, যে ১,০৫৬ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড বিক্রি হয়েছে, তার ৯৪.৫ শতাংশই পেয়েছে একা বিজেপি। সিপিআই(এম) তার নির্বাচনী ইশ্‌তেহারে নির্বাচনী বন্ড বাতিল করার কথা বলেছে।

গত বছর জানুয়ারিতে নির্বাচনী বন্ড নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে কেন্দ্র। বিধি অনুযায়ী ভারতীয় নাগরিক এমন যে কেউ এবং ভারতের কোনও সংস্থা এই বন্ড কিনতে পারবে। একমাত্র নথিভূক্ত রাজনৈতিক দল, যাদের গত লোকসভা কিংবা বিধানসভা নির্বাচনে সমর্থনের হার ১ শতাংশের উপর, তারা এই বন্ড পাওয়ার যোগ্য থাকবে। ১ হাজার, ১০ হাজার, ১ লক্ষ এবং ১ কোটির বন্ড পাওয়া যায়। প্রতি ত্রৈমাসিকে দশদিনের জন্য এই বন্ড খোলা হয়। আর নির্বাচন সামনে থাকলে এই মেয়াদ থাকবে ১৫দিন।

২০১৮-তে নির্বাচনী বন্ড বিক্রির ব্যাপারে স্টেটব্যাঙ্ক যে তথ্য দিয়েছে, তাতে সবচেয়ে এগিয়ে মুম্বাই। তারপরেই কলকাতা। এরপর রয়েছে দিল্লি, হায়দরাবাদ। নির্বাচনী বন্ড বাতিলের আরজি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস।

নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে আসলে করফাঁকির ব্যবস্থা পাকা করা হয়েছে। অরুণ জেটলি স্বচ্ছতার অজুহাত খাড়া করেছেন। কাজের বরাত পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে টেবিলের তলা দিয়ে আগে দলের ভাঁড়ার ভরানো হত। তা বন্ধ করার দাবি করে মোদী সরকার এই বন্ড ব্যবস্থা চালু করেছে। কিন্তু এর ফলে মোটেই স্বচ্ছতা আসবে না। বরং, সেই কাটমানির দুর্নীতিকেই আইনি রক্ষাকবচ ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হচ্ছে। স্বচ্ছতাই যদি উদ্দেশ্য হয়, তাহলে কোন কর্পোরেট সংস্থা, কোন রাজনৈতিক দলকে কত টাকা সাহায্য করছে, তা প্রকাশ্যে আসা উচিত৷ তা করা হচ্ছে না কেন? এদিন এই প্রশ্নেরই নির্দিষ্ট জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *