শিলিগুড়ি: কথা ছিল প্রায় দেড় বছর পর আজ দার্জিলিংয়ে ফিরবেন বিমল গুরুং ও রোশন গিরি৷ বেলা ২টোর সময় বাগডোগরায় নামার কথাও ছিল তাঁরা৷ সেখান থেকেই পাহাড়ে যাওয়ার কথা ছিল গুরুংয়ের৷ সেই অনুযায়ী ছিল বিশাল পুলিশি নিরাপত্তা৷ কিন্তু, কোথায় কী? ফের পুলিশের নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরালেন পাহাড়ের সর্বময়কর্তা গুরুং!
সূত্রের খবর, গ্রেপ্তারির ভয়ে খুব সম্ভবত বাগডোগরায় ফেরননি তিনি৷ ওঠেননি বিমানে৷ মূলত, পুলিশের ভয়েই এই পদক্ষেপ গুরুং শিবিরের৷ তবে, বিমানবন্দরে নামলেই যে তাঁকে পুলিশের মুখোমুখি হতে হত, তা বিলক্ষণ জানতেন বিমল-রোশন গিরিরা৷ ফলে, শেষ মুহূর্তে খুব সম্ভবত অবস্থান বদল করেন একদা মোর্চা সুপ্রিমো৷ তবে, যাত্রীদের মাঝে গাঢাকা দিয়েও বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে যেতে পারেন পাহাড়ি দুই নেতা! এমনটাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷ কেননা, এর আগে যতবার গুরুংকে ধরতে গিয়েছে বাংলা পুলিশের দুধে কর্তারা, ততবারই ব্যর্থ হয়েছেন৷ নাগালে পেয়েও বারংবার হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে গুরুং৷ এর আগেও একাধিকবার ছদ্মবেশে পাহাড়ে ঢুকছেন গুরুং৷
বিমল গুরুংকে পাকড়াও করতে গোটা পাহাড় নিরাপত্তা বেষ্টনীকে মুড়ে ফেলা হলেও ব্যর্থ হয়েছে৷ সিকিমের প্রবেশদ্বার থেকে শুরু করে নেপাল সীমান্ত, শিলিগুড়ি ও দার্জিলিংয়ের সমস্ত সম্ভাব্য ঘাঁটিগুলিতে নজরদারি চালালেও পুলিশের জাল ছিড়ে বেড়িয়ে গিয়েছেন এই পাহাড়ি নেতা৷ মাঝিটাড়ের কাছে বাদামতাম চা বাগানের নীচে, লিম্বু বস্তি এলাকায় পুলিশ-গুরংপন্থীদের মধ্যে গুলির লড়াই বাঁধলেও ব্যর্থ হয় পুলিশ৷ শহিদ হন এসআই অমিতাভ মালিক৷ পাতলেবাসের হানা দিলেও পাহাড়ের জঙ্গলে মিলিয়ে যান এই গোর্খা নেতা৷
এহেন নেতার পাহাড়ে প্রত্যাবর্তনে নিয়ে বেশ সতর্ক ছিল পুলিশ৷ প্রায় দেড় বছর পর গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা বিমল গুরুং ও রোশন গিরির পাহাড়ে ফেরার খবর মিলতেই আঁটসাট নিরাপত্তা বাগডোগরা বিমানবন্দরে৷ বিমানবন্দরে RAF নামানো হয়৷ বিমানবন্দরে ঢোকার মুখে চলে নাকা তল্লাশি৷ পাহাড় থেকে আসা গাড়িগুলিকে বিমানবন্দরে ঢুকতে দেওয়ার উপর বিধিনিষেধ চাপানো হয়৷ কিন্তু, এতকিছুর পরও সেই গুরুংয়ের দেখাই পেল না পুলিশ!
গতকাল সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, আপাতত পাহাড়ে নির্বাচনী প্রচার না করতে পারলেও রোশন গিরির বিরুদ্ধে দমনমূলক পদক্ষেপ নিতে পারবে না রাজ্য সরকার। বিমল গুরুংয়ের ক্ষেত্রেও একই নির্দেশ দেওয়ার আবেদন করলেও শীর্ষ আদালতের বিচারপতি অরুণ মিশ্রর বেঞ্চ তাঁদের নির্দেশে তা স্পষ্ট করেননি। একইসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের আরও নির্দেশ, রোশন গিরি আগাম জামিনের আবেদন করলে কলকাতা হাইকোর্টকে তা দ্রুত শুনতে হবে।