কলকাতা: রাজ্যে পুরভোটের দিনক্ষণ স্থির ,ওয়ার আগেই রাজ্যের হিংসার পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকর। সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, উত্তর ২৪ পরগনা থেকে বিপুল পরিমানে বোমা ও বিস্ফোরক উদ্ধার হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে রাজ্যকে ‘হিংসার আখড়া’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘বাংলায় বারুদের ব্যবসা চলছে। এই রকম অবস্থায় হিংসামুক্ত নির্বাচন কীভাবে সম্ভব?’
এরইমধ্যে আগামী এপ্রিল মাসে কলকাতা হাওড়া সহ রাজ্যের ১১০টি পুরসভা ও পুরনিগমের ভোট করার জন্য সম্ভব্য তারিখ প্রস্তাব আকারে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। এবার এরই প্রেক্ষিতে আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি রাজভবনে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসের সঙ্গে দেখা করতে চাইছেন ধনকর। পুরভোট প্রসঙ্গে সাংবিধানিক নিয়মবধির বিষয়টি উল্লেখ করে সোমবার একটি টুইটে তিনি লিখেছেন,”২৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ কুমার দাসের কাছ থেকে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচন সম্পর্কিত একটি আপডেট চাইব। কমিশন ভারতের সংবিধানের ২৪৩ কে অনুচ্ছেদের অধীনে পৌর নির্বাচনের তত্ত্বাবধান, নির্দেশনা এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি সাংবিধানিক সংস্থা।”
অশান্তি এড়াতেই তিন দফায় পুরভোট করাতে চাইছে রাজ্য। তার সম্ভ্যব্য তারিখগুলি ইতিমধ্যেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে। প্রথম দফায় পুরসভা ভোটের আগে কলকাতা-সহ চারটি কর্পোরেশনের ভোট আগেই করে নিতে চাইছে রাজ্য। রাজ্য সরকারের প্রস্তাব অনুসারে ১২ এপ্রিল কলকাতা, হাওড়া, শিলিগুড়ি ও আসানসোল পুরনিগমের ভোট। আসদ্বিতীয় দফার ভোট এপ্রিলের শেষে অর্থাৎ ২৫ ও ২৬ তারিখ এবং তৃতীয় ও শেষ দফার ভোটপর্ব পরের মাসে অর্থাৎ মে মাসে করার কথা বলা হয়েছে। তাই বলা যায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেই হয়তো নিজের উদ্বেগ প্রশমিত করতেই চাইছেন রাজ্যপাল। আবার এও হতে পারে যে, স্বভাববশতই রাজ্যসরকারের অন্যান্য সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের মত পুরভোটের বিষয়েও নিজের প্রভাব প্রতিপন্ন করার প্রচেষ্টা।
এদিকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা চলবে, আর পরীক্ষার মধ্যে মাইকে কোনও প্রচার চালানো যাবেনা। সুতরাং প্রস্তাবিত ১২ এপ্রিল ভোট হলে সঠিকভাবে প্রচারের জন্য খুবই কম সময় পাওয়া যাবে। সেই পরিস্থিতিতে ভোট পিছিয়ে দেওয়ার দাবিতে গত বৃহস্পতিবারই রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসের সঙ্গে দেখা করে আর্জি জানিয়ে এসেছে রাজ্যের গেরুয়া শিবির। অন্যদিকে, নিয়মমাফিক ভোট না হলে আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছে বিরোধী দল বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ শাসকদলের উদ্দেশ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘আশা করব, এমন কিছু করবেন না, যাতে কোর্টে যেতে হয়৷’’