বর্ধমান: তিনি বলেছিলেন, বিদ্যাসাগরের লেখা ‘সহজ পাঠ’ পড়ে শৈশব থেকে যুবক হয়েছিলেন৷ এবার সাংসদ হয়ে বললেন, গোরুর নাড়িতে সোনা থাকে! গোরুর কুঁজে সূর্যের আলো পড়লেই সোনা তৈরি হয়৷ বর্ধমান টাউন হলে গাভী কল্যাণ সমিতির সভামঞ্চ থেকে গোরু নিয়ে নয়া যুক্তি খাড়া করলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ৷ বিজেপি সাংসদের এই মন্তব্য ঘিরে নেটপাড়ায় ছড়িয়ে নয়া বিতর্ক৷
এমনিতেই গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে বিজেপির সম্পর্ক কী, তা আর খুলে বলার প্রয়োজন নেই৷ গোরুর বৈশিষ্ট্য কী, তা পাঠককে মনে করে দেওয়া, সময় নষ্ট ছাড়া আর কিছুই নয়৷ পঞ্চম শ্রেণির পরীক্ষায় এখন খুব সম্ভবত গোরু রচনাও লিখতে দেয়া হয় না! বিষয়টি এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে৷ সৌজন্যে গোরুকে গুরুয়া শিবিরের বাড়াবাড়ি৷ গোমূত্র থেকে ক্যান্সার রোগ নিরাময় হয়, গোরু অক্সিজেন দেওয়ার বিতর্কের তালিকায় এবার দিলীপ ঘোষ যুক্ত করলেন গোরুর কুঁজে সোনা থাকার তত্ত্ব৷
সোমবার গোরুর উপকারিতা বোঝাতে গিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে করতে আজ জমি অনুর্বর হয়ে গিয়েছে৷ যদি আমাদের বাংলায় জমি অনুর্বর হয়ে যায়, তাহলে সেই জমিতে চাষ হবে না৷ তাহলে খাব কী? আমাদের এই বিষয়ে সতর্ক হওয়া উচিত৷ গোরুর গোবর থেকে তার খাবারের খরচা উঠে আসতে পারে, যদি তা ঠিকমতো প্রয়োগ করা যায়৷ কেন্দ্রীয় সরকারও বিশেষভাবে চেষ্টা করছে৷ গোবর সার দিয়ে জমি চাষ করতে৷ যাতে জমির উর্বরা শক্তি নষ্ট না হয়৷ আমাদের যে ধার্মীয় ধারণা আছে, গোরুর শরীরে, গাভীর শরীরে ৩৩ কোটি দেবতার বসবাস করেন৷ সেই জন্য আমরা গোরুকে দেবতা জ্ঞানে পুজো করি৷’’
খোলা মঞ্চ থেকে দিলীপ ঘোষের আরও মন্তব্য, ‘‘গোরুর দুধ খেলে শরীর সুস্থ হয়৷ পুষ্ট হয়৷ রোগ প্রতিষেধক ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়৷ আমাদের দেশি গোরুর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তার দুধের মধ্যে সোনার ভাব থাকে৷ আর সেই কারণে দুধের রং একটু হলদে হয়৷ আর আমাদের দেশের গোরুদের যে ঝুন্ড থাকে, বিদেশি গোরুর মধ্যে এরকম ধরনের কুঁজ থাকে না৷ বিদেশি গোরুদের পিঠ মোষের মতো৷ সেই জন্য বলি, গোরুর যে কুঁজ থাকে, তার মধ্যে একটা নাড়ি থাকে৷ সেটাকে বলা হয় স্বর্ণনাড়ি৷ সূর্যের আলো পড়লে সেখান সোনা তৈরি হয়৷ তাই গোরুর দুধ হলদে হয়৷ আর সেই গোরুর দুধের মধ্যে থেকে প্রতিষেধক ক্ষমতা থাকে৷ অন্য দেশ আমাদের দেশ থেকে গোরুকে শোধন করার চেষ্টা করছে৷’’ দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্য ঘিরে নেটপাড়ায় সপ্তমে বিতর্ক৷