নড়েচড়ে বসল খাদ্য দফতর, দুর্নীতি রুখতে নয়া পদক্ষেপ

নড়েচড়ে বসল খাদ্য দফতর, দুর্নীতি রুখতে নয়া পদক্ষেপ

নিজস্ব প্রতিনিধি: যেভাবে রেশন দুর্নীতির ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য জুড়ে, তাতে এবার নড়ে চড়ে বসল খাদ্য দফতর। রেশন দুর্নীতি নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। এই কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এবার রেশন দুর্নীতির ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে দফতরের কাজকর্মে বিশেষ বদল আনছে কর্তৃপক্ষ। ধান কেনার সময়ে আধিকারিকদের উপর নজরদারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে খাদ্য দফতর।

ঘটনা হল প্রত্যেকটি ধান ক্রয় কেন্দ্রে একজন করে ‘পারচেস অফিসার’ থাকেন। সেই আধিকারিক ধান কেনার সময় খাদ্য দফতরের তরফ থেকে গোটা বিষয়টি নিয়ে নজরদারি চালিয়ে থাকেন। একটি ধান ক্রয় কেন্দ্রে দীর্ঘদিন ধরে একই পারচেস অফিসার কর্মরত রয়েছেন, এমন উদাহরণ বহু আছে। এবার সেই সিস্টেমে বদল আনা হচ্ছে। কয়েক মাস অন্তর অন্তর সংশ্লিষ্ট পারচেস অফিসারকে বদলি করে দেওয়া হবে বলে খাদ্য দফতর এবার নয়া নির্দেশে জানিয়েছে। দফতরের দাবি, এই পদ্ধতিতে গোটা প্রক্রিয়ায় অনেক বেশি স্বচ্ছতা বজায় রাখা যাবে। তাই ধান কেনা নিয়ে অনিয়ম হয়েছে, এটা আর চট করে বলা যাবে না। সূত্রের খবর প্রত্যেক পারচেস অফিসারের ভূমিকা খাদ্য দফতরের স্ক্যানারে থাকবে। এভাবেই দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা বন্ধ করতে চাইছে খাদ্য দফতর।

২০১২ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত খাদ্যমন্ত্রী ছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তবে তৃতীয় বার তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর জ্যোতিপ্রিয়কে সরিয়ে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয় রথীন ঘোষকে। জ্যোতিপ্রিয়কে বনমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। আর রেশন ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমান গ্রেফতার হওয়ার পরই ইডির নজরে উঠে আসেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এরপর গত অক্টোবরে তিনিও গ্রেফতার হন। স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তি বাড়ে তৃণমূলের। আর দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পরই এবার খাদ্য দফতর সিস্টেমে কিছু বদল লাগছে। এতে দুর্নীতি বন্ধ করা যায় কিনা সেটাই দেখার।

যদিও ওয়াকিবহাল মহল মনে করিয়ে দিচ্ছে কয়েক বছর আগে রাজ্য পুলিশ রেশন দুর্নীতির অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছিল। ‌ কিন্তু হঠাৎ করেই সেই তদন্ত বন্ধ হয়ে যায়। অভিযোগ ওঠে রাজ্যের এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর নির্দেশেই পুলিশ হাত গুটিয়ে নেয়। তাই তখন কেন খাদ্য দফতরের কর্তারা দুর্নীতি রুখতে কড়া পদক্ষেপ করেননি সেই প্রশ্ন ফের উঠছে। এখন যে পদক্ষেপ করছে দফতর সেটা আগে কেন করা হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। তাই নতুন সিস্টেমে দুর্নীতি পুরোপুরি রোখা যায় কিনা এখন সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *