কলকাতা: অবশেষে বিবিআই হেফাজাতে আইপিএস এসএমএইচ মির্জা৷ সোমবার পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতে থাকার নির্দেশ দিয়েছে নগর দায়েরা আদালত৷ এই প্রথম নারদকাণ্ডে কোনও অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করল সিবিআই৷ আইপিএস অফিসার মির্জাকে আজ দুপুরে গ্রেপ্তারের তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়৷ তোলা হয় নগর দায়েরা আদালতে৷
মামলার শুনানিতে সিবিআইয়ের তরফে মির্জাকে গ্রেপ্তার করে প্রভাবশালীদের নাম জানতে জানতে চেয়ে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায় সিবিআই৷ কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার তরফে আদালতে পাঁচ দিনের আবেদন করা হয়৷ সিবিআইয়ের আর্জির পাল্টা বিরোধিতা করেন মির্জার আইনজীবীষ জানানো হয়, কেন তাঁকে সিবিআই হেফাজতে নিতে চাইছে? কারণ তিনি তো এখনও রাজ্য সরকারের অধীনে কর্মরত৷ তিনি কোথাও পালিয়ে যাবেন না৷ ফলের সিবিআইয়ের আর্জি খারিজ করে দেওয়া হোক৷ মামলার শুনানি শেষ হওয়ার পর বেশ খানিকক্ষণ মামলা রায়দান স্থগিত রাখা হয়৷ পরে আজ বিকেল পৌনে পাঁচটা নাগাদ ধৃত মির্জাকে সিবিআই হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত৷
আজ দুপুরে নারদকাণ্ডে প্রথম গ্রেপ্তারি সিবিআইয়ের৷ নারদকাণ্ডে গ্রেপ্তর হলেন আইপিএস অফিসার এসএমএইচ মির্জা৷ আজ তাঁকে জেরার জন্য ডাকা হয়৷ পরে সিবিআইয়ের আধিকারিকরা মির্জাকে গ্রেপ্তার করে৷ সিবিআই সূত্রে খবর, আজ নারদকাণ্ডে আইপিএস মির্জাকে বারবার একই প্রশ্ন করা হয়৷ নারদ ফুটেছে তাঁকে ফোনে কথা বলতে দেখা গিয়েছিল৷ কোনও একজনকে ফেনে ‘এক কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে’ বলে তিনি উল্লেখ করেছিলেন৷ সিবিআই তাঁকে জানতে চান, তিনি কোথা থেকে ওই এক কোটি টাকা পেয়েছিলেন? কাকে সেটা পাঠিয়েছেন? যদিও সেই প্রশ্নের কোনও উত্তর দিতে পারেননি তিনি৷ এর আগেও মির্জাকে টানা ন’বার জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআইকে খুশি করতে পারেননি তিনি৷ আর সেই পরিপ্রেক্ষিতেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর৷
Central Bureau of Investigation (CBI) arrests Senior IPS officer SMH Mirza in connection with Narada sting case. pic.twitter.com/HqYC2FsgOx
— ANI (@ANI) September 26, 2019
এর আগে ‘গুরু’ মুকুল রায়কে জেরার পর আইপিএস অফিসার মির্জাকে সাসপেন্ড করে নবান্ন৷ মির্জাকে বর্ধমানের পুলিশ সুপার পদে থাকাকালীন নারদ কাণ্ডে মুকুলের হয়ে টাকা নেন৷ তিনি মির্জাকে মুকুল রায়কে গুরু বলতেও শোনা যায়৷ যদিও পরে যদিও মুকুল রায় টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন৷ নারদ ফুটেজে মির্জাকে টাকা নেওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই রাজ্য রাজনীতি বিতর্ক তৈরি হয়৷ অভিযোগ, মির্জা ব্যারাকপুর পুলিশে যখন কমান্ড্যান্ট ছিলেন সেই সময় তাঁর অত্যাচারে এক পুলিশকর্মী আত্মহত্যা করেন৷ পুলিশকর্মী পরিবারের অভিযোগ সরাসরি ছিল মির্জার বিরুদ্ধে৷ এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তাঁকে সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়৷ অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ওঠাবসা ছিল মির্জার৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষমতায় আসার পর থেকে ১৫ আগস্ট তাঁকে বিশেষ পদক দেওয়া হয়৷ প্রথম বছর মির্জার বুকে মেডেল৷
২০১৪ সালের খাগড়াগড় বিস্ফোরণের সময় পুলিশের নিস্ক্রিয়তার অভিযোগে তাঁকে সরিয়ে দেয়া হয়৷ এরপর লোকসভা নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক পক্ষপাতের অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে৷ নারদ ফুটেজে অন্যতম ভূমিকা ছিলেন তিনি৷ তৎকালীন তৃণমূল নেতা মুকুল রায়ের নাম করে নারদার থেকে ৫ লক্ষ টাকা নিতে দেখা যায় মির্জাকে৷ বিনিময় তৎকালীন পুলিশ সুপার বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথাও জানান৷ এই নিয়ে শুরু হয় তদন্ত৷ এবার সিবিআইয়ের তদন্ত শুরু হওয়ার পরপর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে খবর৷