কলকাতা: সরদাকাণ্ডে ফের তৎপর ইডি৷ একই সঙ্গে ৬ ছজনকে নোটিস পাঠাল ইডি৷ নোটিস পাঠানো হয়েছে, তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়কে৷ নোটিস পাঠানো হয়েছে কুণাল ঘোষ ও দেবব্রত সরকারকে৷ নোটিস পাঠানো গিয়েছে সজ্জন ও সন্ধি আগারওয়াল, অরিন্দম দাসের নামে৷ আর্থিক লেনদেন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সম্ভবনা৷ সূত্রের খবর, বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নামে এই ছ’য় প্রভাবশালী একাধিক বার সারদাকর্তার থেকে মোটা টাকা নিয়েছিলেন৷ কিন্তু, কেন টাকা নেওয়া হয়েছিল, তা জানতে জেরা করা হতে পারে বলে খবর৷ আগামী ১০ দিনের মধ্যে ছ’জনকে ইডির দপ্তরে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷
অন্যদিকে অভিনেত্রী তথা তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায় থেকে অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে ডেকে পাঠিয়েছে ইডি৷ রোজভ্যালি কাণ্ডে তাঁকে জেরা করা হতে পারে বলে খবর৷
ইডি সূত্রে খবর, রোজভ্যালি কর্তা গৌতম কুণ্ডুর টাকায় একাধিকবার বিদেশ ভ্রমণ থেকে শুরু করে বিভিন্নরকম আর্থিক সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন টলিউডের প্রথম শ্রেণির জনপ্রীয় নায়িকা ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত৷ তদন্তকারী অফিসারদের কাছে এমনই একাধিক প্রমাণ থাকায় ওই নায়িকাকে এবার তদব করা হয়েছে বলে খবর৷
অন্যদিকে ইডি সূত্রের খবর, রোজভ্যালিকাণ্ডে প্রসেনজিৎকে ১৯ জুলাই ডেকে পাঠিয়েছে ইডি৷ রোজভ্যালি কর্তার সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ ছিল কি না, তিনি ওই সংস্থার থেকে কোনও অর্থ নিয়েছিলেন কি না, তাও জানতে চাওয়া হতে পারে বলে বলে খবর৷
রোজভ্যালিকাণ্ডে প্রসেনজিৎ, ঋতুপর্ণার নাম জড়িয়ে পড়ায় এর আগে টলিউডের পাশেও দাঁড়ান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ২০১৭ সালে ১২ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘‘প্রসেনজিৎ, ঋতুপর্ণার মতো অভিনেতারা পেশাগত কারণেই অনেক সংস্থার কাজ করেন৷ এতে অন্যায় কোথায়?’’ নোট বাতিলের প্রতিবাদে কলকাতায় রিজার্ভ ব্যাংকের দপ্তরের সামনে তৃণমূলের ধর্নামঞ্চ থেকেই মমতা প্রশ্ন করেন, ‘‘তাপস, শতাব্দী, প্রসেনজিৎ, ঋতুপর্ণা কী করেছে? ওরা সিনেমা করে৷ এটা ওদের পেশা৷ টলিউড থেকে বলিউড ও হলিউডে ওঁদের যোগাযোগ রয়েছে৷’’ রোজভ্যালি কর্তা গৌতম কুণ্ডুর প্রযোজিত একাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন প্রসেনজিৎ ও ঋতুপর্ণা৷ সেই সূত্র ধরেও হতে পারে জেরা৷
অন্যদিকে, সারদাকাণ্ডে নোটিস পাঠিয়ে এবার শতাব্দী রায়কে তলব করল এনফোর্সমেন্ট ডিরক্টরেট৷ আগামী ১২ জুলাই হাজিরা দিতে বলা হয়েছে বলে খবর৷ সারদার অ্যাকাউন্ট থেকে কেন তৃণমূল সাংসদের কাছে পাঠানো হয়েছিল, তা জানতেই তাঁকে তদল করা হয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর৷ শুক্রবার বেলা ১২ টার মধ্যে তাঁকে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে৷ তবে, ওই দিন সংসদে অধিবেশন থাকার কারণে তৃণমূল সাংসদ হাজিরা এড়াতে পারেন তিনি৷
বিভিন্ন নথি থেকে ইডি জানতে পেরেছে, সারদার অ্যাকাউন্ট থেকে তৃণমূল সাংসদের কাছে টাকা পাঠানো হয়েছিল৷ ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসাবে বাজার থেকে সারদার টাকা তুলতে শতাব্দীর কোনও ভূমিকা ছিল কি না তা জানতে চাইছেন ইডির আধিকারিকরা৷ টাকা লেনদেনে কোন কোন প্রভাবশালীর কথা জানেন কিনা শতাব্দীকে তা নিয়েও জিজ্ঞাসা করতে পারে ইডি৷ এর আগে এই একই বিষয়ে সিবিআইয়ের নজরে ছিলেন শতাব্দী রায়৷ ২০১৭ সালে জুলাইয়ে বীরভূমের সাংসদকে তলব করে সিবিআই৷ তাঁর বাড়িতে গিয়ে প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ চালান তদন্তকারীরা৷