নয়াদিল্লি: এবার হয়তো আর ভোট দেবেন না নির্ভয়ার মা-বাবা। রাজধানী দিল্লিতে যখন ভোটের পারদ ক্রমে চড়ছে, নেতা-নেত্রীরা ভোট আদায়ে রোড-শোয়ে নেমে পড়েছেন, তখন আশা দেবী আর বদ্রীনাথ সিং জানাচ্ছেন, এবার হয়তো আর তাঁরা বুথমুখো হবেন না।
সেলিব্রিটিদের ভোটাধিকার প্রয়োগের বিজ্ঞাপন আর ছুঁতে পারছে না এক বিষম ক্ষত বুকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়া এই দম্পতিকে। বলছেন, রাস্তা তো এখন নিরাপদ নয় শহরের মা-মেয়ের জন্য। ২০১২’র ১৬ ডিসেম্বরের সেই ভয়ানক রাতের পর রাজনৈতিক দলগুলি প্রতিশ্রুতিতে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন এই দম্পতিকে। সেই ভয়ানক নির্যাতনের শিকার ওদের মেয়েকে দেশ এখন চেনে ‘নির্ভয়া’ নামে।
প্যারামেডিক্যালের ছাত্রী সেই ‘নির্ভয়া’র ধর্ষক খুনিরা এখনও জীবিত। সেই খেদ সাথে নিয়েই সেই মা-বাবা এখন বিধ্বস্ত এই ভেবে যে, তাঁদের মেয়ে চলে গেলেও বাকিরা এখনও নিরাপত্তা পেল না। পরের পর সরকার এর জন্য তেমন কিছুই করল না। সিসিটিভি বসল না। আশা দেবীর কথায়, দেশটা এখনও নিরাপদ নয়। আজও মায়েরা চিন্তায় মরে যায়, মেয়েটা বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত। বদলালো না তো কিছুই।
তিনি বলছেন, ‘মানুষের ব্যবস্থাটার উপরেই কোনও আস্থা নেই। সব সরকারই ব্যর্থ। আমার মনে হচ্ছে না, কাউকে এবার ভোট দেওয়া যায়।’’ আর নির্ভয়ার বাবা বলছেন, সব দলই মহিলাদের মর্যাদা, মহিলাদের ক্ষমতায়নের কথা বলছে। কিন্তু সেসব করার রোড ম্যাপ কোথায়? ওরা যে প্রতিশ্রুতিগুলি দিয়েছিল সেগুলি পূরণের ইচ্ছাই বা কোথায়? এক অমানসিক যন্ত্রণা বুকে মেয়ে হারানো বাবার আর্তনাদ, ‘‘২০১৩ এ কেন্দ্রের সরকার ‘নির্ভয়া তহবিল’ গড়ল। সেটার ‘ঠিকমতো ব্যবহারই’ হলো না।’’ তবু আবার সেই ফাঁপা প্রতিশ্রুতি চলছে। নিজেদের স্বার্থে মানুষকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু আর নয়। এবার তাই বুথে যাচ্ছেন না আশা দেবী আর বদ্রীনাথ সিং।