সিপিএম সবটা ভেবে বলছে তো? ‘গণশক্তি’র হেডিংয়ের মানে কী?

‘গণশক্তি’র শিরোনাম, ‘ইন্ডিয়া জোটের কাছে ধরাশায়ী বিজেপি’ (Ganashakti headline) গত শনিবার পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের ১৩টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। তার মধ্যে দশটিতেই জিতেছে বিরোধী…

Ganashakti headline

‘গণশক্তি’র শিরোনাম, ‘ইন্ডিয়া জোটের কাছে ধরাশায়ী বিজেপি’ (Ganashakti headline)

গত শনিবার পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের ১৩টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। তার মধ্যে দশটিতেই জিতেছে বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’। দুটিতে বিজেপি এবং একটিতে নির্দল জিতেছেন। সেই সূত্রে তার পর দিন, অর্থাৎ গত রবিবার সিপিএমের দলীয় মুখপত্র ‘গণশক্তি’ পত্রিকায় প্রথম পাতায় যে বিশেষ শিরোনামে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সেই প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল,
“উপনির্বাচনেও ইন্ডিয়া জোটের কাছে ধরাশায়ী বিজেপি, ১৩ আসনের মধ্যে ১০টিতে জয়ী বিরোধীরা”।

স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, সিপিএম যা বলছে ভেবে বলছে তো? ( Does CPM stand by its words?)

এর কারণ একটাই, ওই জেতা আসনগুলির মধ্যে এ রাজ্যে তৃণমূলের জেতা চারটি আসনও রয়েছে। বাগদা, মানিকতলা, রায়গঞ্জ ও রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রে জয়লাভ করেছে তৃণমূল। এর মধ্যে তিনটিতে সিপিএম তথা বামেদের প্রার্থী ছিল। উপনির্বাচনে তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে একযোগে তীব্র প্রচার করেছে সিপিএম।

তৃণমূলের জয়ে সিপিএমের আনন্দ? (Communist Party of India (Marxist))

অথচ এই হেডিং দেওয়ার মানে এটাই দাঁড়ায় যে, কার্যত তৃণমূলের জয়ে তারা সন্তোষ প্রকাশ করছে। এটা কি পারস্পরিক বিরোধিতা নয়? খাতায় কলমে হেডিংয়ে কোনও ভুল নেই। কারণ তৃণমূল অবশ্যই ‘ইন্ডিয়া’র মঞ্চে রয়েছে। কিন্তু যেভাবে ডিসপ্লে করে হেডিং দেওয়া হয়েছে ‘গণশক্তি’ পত্রিকায় তাতে এটাই মনে করতে হবে যে, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের চারটি আসনে জয়ের ফলে সিপিএম সন্তোষ প্রকাশ করছে। যদিও আলিমুদ্দিন এটাই বোঝাতে চাইছে যে, তারা বিজেপি বিরোধিতার জন্যই এই বার্তা দিতে চেয়েছে।

“পশ্চিমবঙ্গে চার আসনে উপনির্বাচন হয়েছে। প্রতিটিতেই জয়ী হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।” ( Ganashakti newspaper)

কিন্তু এটাও তো ঠিক যে, তৃণমূল ও বিজেপি উভয় দলই সিপিএমের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। তাই বিজেপির পরাজয়ের জন্য যেভাবে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের কথা বলে দলীয় মুখপত্রে হেডিং দেওয়া হয়েছে, তাতে কর্মীদের কাছে আসলে কোন বার্তা গেল সেটা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ ওই প্রতিবেদনের শেষ দুটি লাইনে লেখা রয়েছে, “পশ্চিমবঙ্গে চার আসনে উপনির্বাচন হয়েছে। প্রতিটিতেই জয়ী হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।” তাহলে সিপিএমের কর্মী সমর্থকদের কাছে প্রধান বিরোধী কে, তৃণমূল না বিজেপি? তারা কাকে হারাতে চায়? সেই প্রশ্ন নতুন করে উঠে গেল। সেই সঙ্গে এ কথাও বলা হচ্ছে যে, যদি সত্যিই বিজেপি প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয় সিপিএমের, তাহলে তো তাদের উচিত ছিল চারটি কেন্দ্রেই তৃণমূলকে সমর্থন করা। কিন্তু সেটা তো হয়নি।

উপনির্বাচনেও  সিপিএম  ধুয়ে মুছে সাফ  (CPIM controversy)

ঘটনা হল এই উপনির্বাচনেও পশ্চিমবঙ্গে সিপিএম তথা বামেরা ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। এভাবে চললে রাজ্য রাজনীতিতে কত দিন প্রাসঙ্গিক থাকা যাবে সেটা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই আবহের মধ্যে তৃণমূলের চার আসনের জয় ধরে যেভাবে দলীয় মুখপত্রে হেডিং প্রকাশিত হয়েছে ‘গণশক্তি’তে, তা নিয়ে প্রত্যাশিতভাবেই চর্চা চলছে বঙ্গ রাজনীতিতে।

 

আরও পড়ুন-

শুধু ভোট লুট অভিযোগ, আদৌ সংগঠন বাড়াতে পারছে বিজেপি

অযোধ্যার পর বদ্রীনাথ, ফের হার বিজেপির! যেন উধাও হিন্দুত্ব লাইন

এবার ধর্মচর্চায় ঢালাও ‘অনুমতি’ দেবে সিপিএম?

অধীরের সরে যাওয়া নিশ্চিত, নতুন প্রদেশ সভাপতির দৌড়ে কারা?

Politics:  Discover the controversy around CPIM’s statement and the headline in their mouthpiece ‘Ganashakti’. Analyze the implications of the recent West Bengal by-election results and the questions they raise about CPM’s stance. Explore the political dynamics at play.