‘ইন্ডিয়া’ জোটকে ভয় পাচ্ছে বিজেপি? পাশে থাকা ৩৮ দলের গুরুত্ব কতটা

‘ইন্ডিয়া’ জোটকে ভয় পাচ্ছে বিজেপি? পাশে থাকা ৩৮ দলের গুরুত্ব কতটা

নিজস্ব প্রতিনিধি: কয়েক মাস আগেই বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু তখন বিষয়টি নিয়ে একটি কথাও বলতে শোনা যায়নি গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্বকে। কিন্তু যে মুহূর্তে বিরোধী জোট পাটনা এবং তার পরে বেঙ্গালুরুতে মেগা বৈঠক করেছে, তাতে বিজেপি যে চিন্তিত সেটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। আর তারই ফলশ্রুতি নয়াদিল্লিতে নতুন করে এনডিএ জোটের বৈঠক ডাকা। বিরোধী জোটের বৈঠকে ২৬ টি দল যোগ দিয়েছিল। সেখানে নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপস্থিতিতে এনডিএ জোটের বৈঠকে উপস্থিত থাকল ৩৮টি রাজনৈতিক দল। 

খাতায় কলমে বাকি আরও নয় মাস। কিন্তু এখন থেকেই কার্যত লোকসভা নির্বাচনের দামামা বেজে গিয়েছে। একদিকে বেঙ্গালুরুতে যখন চলল বিরোধী জোটের বৈঠক, তখন নয়াদিল্লিতে  এনডিএ জোটের বৈঠকে উপস্থিত থেকে গোটা বিষয়টিতে নিঃসন্দেহে অন্য মাত্রা যোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর বৈঠকে বিরোধী জোটকে নিশানা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,”নেতিবাচক লক্ষ্যে যে জোট তৈরি হয় তা সফল হতে পারে না। দেশে সুস্থির সরকার একমাত্র এনডিএ দিতে পারে। আমাদের কাছে দেশ প্রথম, দেশের প্রতিরক্ষা প্রথম, উন্নতি প্রথম এবং মানুষের ক্ষমতা প্রথম।” সেই সঙ্গে এনডিএ (প্রকৃত নাম ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যাল্যায়েন্স) শব্দের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মোদি বলেন,”এন মানে নিউ ইন্ডিয়া, ডি হল ডেভেলপমেন্ট এবং এ হল অ্যাসপিরেশন। আমরা যখন বিরোধী ছিলাম তখন জনাদেশকে অপমান করিনি। বিরোধী হলেও দেশের অগ্রগতি রুখতে পথ অবরোধ করিনি। সরকারের বিরোধিতা করতে বিদেশের মদত চাইনি।” কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে সংখ্যার বিচারে ৩৮ বড় মনে হলেও যে দলগুলি বিজেপির সঙ্গে রয়েছে সহযোগী হিসেবে, তাদের কতটা গুরুত্ব রয়েছে রাজনীতিতে?

অধিকাংশ দলকে অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে খুঁজতে হয়। রাষ্ট্রীয় লোক জনতা দল, লোকজনশক্তি পার্টি, মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা এমসিপি নেতা অজিত পাওয়ার, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে, এআইএডিএমকে, এনপিপি, এনডিপি, সিকিম ক্রান্তিকারী মোর্চা, জননায়ক জনতা পার্টি, ইন্ডিয়া মক্কল কালভি মুনেত্রা কাজাঘাম, আজসু, রিপাবলিক পার্টি অফ ইন্ডিয়া, মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট, তামিল মানিলা কংগ্রেস, আইপিএফটি ত্রিপুরা, বোড়ো পিপলস পার্টি, মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টি, অসম গণপরিষদ, নিশাদ পার্টি, আরএলএসপি, সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পার্টি, কেরালা কংগ্রেস থমাস, গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট, জনসুরজ পার্টি (মহারাষ্ট্র)-এর পাশাপাশি আরও কয়েকটি দল যোগ দিয়েছে এনডিএ বৈঠকে। অর্থাৎ শুধুমাত্র সংখ্যা বাড়ানোই যে বিজেপির প্রধান উদ্দেশ্য তা পরিষ্কার।

কর্নাটকে বিপুল পরাজয়ে যথেষ্ট চিন্তায় রয়েছে গেরুয়া শিবির। তাই গত কয়েক বছর ধরে বিজেপি নেতাদের মুখে এনডিএ শব্দটা সেভাবে শোনা না গেলেও  হঠাৎ করে সেটি নিয়ে আসরে নেমেছেন তাঁরা। যেভাবে বিরোধী জোট মসৃণ গতিতে এগোচ্ছে তাতে বিজেপি একের বিরুদ্ধে এক লড়াইয়ে ভয় পাচ্ছে বলেই রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছেন। তাই খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিরোধী জোটকে যেভাবে ব্যাপক নিশানা করছেন, যা দেখে অনেকেই অবাক। বিরোধী জোটকে বিজেপি যে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে এতেই তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। আগামী দিনে বিভিন্ন রাজ্যে বিরোধী জোটের পরপর বৈঠক হবে। তাই সেই জোটের মোকাবিলায় বিজেপি এবার এনডিএ-কে পুনর্গঠনের মাধ্যমে কতটা করতে পারে সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *