কলকাতা: লাটে উঠেছে পরিষেবা৷ বিনা চিকিৎসায় মরছে রোগী৷ যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে বাংলার কয়েক লক্ষ মানুষ৷ সাধারণ মানুষের রক্ত-ঘাম ঝরানো করের টাকা চলা সরকারি হাসপাতালে গিয়েও ফিরছে হচ্ছে মুমূর্ষু রোগীকে৷ বাদ যাচ্ছে না শিশুরাও৷ সৌজন্যে, রোগী পেটানো ডাক্তারদের কর্মবিরতি৷ গাফিলতির জেরে রোগী মৃত্যু, বচসা, মারধর, দেহ আটকে রাখার মতো ঘটনার পর আজ, গোটা বাংলাজুড়ে লাটে উঠেছে স্বাস্থ্য পরিষেবা৷ টানা ৫ দিন ধরে শাসক বনাম মেডিক্যাল পড়ুয়াদের জেদ এখন দেশের সংবাদ শিরোনামে৷ রোগীকে পরিষেবা দেওয়া যাঁদের কাজ, তাঁরা এখন নিজেদের স্বার্থে করেছেন কর্মবিরতি৷ রোগী পরিবারকে পেটানো, পরিষেবা লাটে তুলে দেওয়া চিকিৎসকরা এখন শেখাচ্ছেন কীভাবে করতে হয় ‘ভদ্র আচরণ’!
আজ, জিবি বৈঠকের পর সংবাদ মাধ্যমকে মেডিক্যাল পড়ুয়ারা জানান, ‘‘আপনারা দয়া করে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখুন৷ ভদ্র আচরণ করতে শিখুন৷’’ টানা দু’বার সংবাদমাধ্যমকে ‘ভদ্র আচরণ’ শেখার পরামর্শ দেন সরকারি কোষাগার থেকে বিপুল পরিমাণ বরাদ্দ পেয়ে পড়তে আসা জুনিয়র ডাক্তাররা৷
এদিন, জিবি বৈঠক কভার করতে স্থানী থেকে জাতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি দল এনআরএসে ছুটে যান৷ সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের বেশ ভিড়ও ছিল৷ প্রেস বিবৃতির প্রস্তুতি পর্বে একটু ধাক্কাধাক্কি বাঁধে সংবাদ কর্মীদের মধ্যে৷ ধাক্কাধাক্কি দেখে মেজাজ হারান হবু চিকিৎসকদের প্রতিনিধি৷ ক্যামেরার সামনেই সংবাদমাধ্যমকে ‘ভদ্র আচরণ’ করার নির্দেশও দেওয়া হয়৷ এদিনের বিবৃতির বেশিরভাগ অংশে মুখ্যমন্ত্রীর নাম মুখে না এনে ‘মাননীয়া’ শব্দটি বারংবার উচ্চারণ করা হয়৷
Junior doctors of #NRSMedicalCollege and Hospital, Kolkata, West Bengal, after a general body meeting: We want immediate end to this impasse by discussion with the CM, which, to maintain transparency, shouldn’t be behind closed doors, but open to media under camera coverage. pic.twitter.com/N8Spu1yRci
— ANI (@ANI) June 16, 2019
এদিন বিবৃতি দিয়ে আন্দোলকারীদের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি৷ কিন্তু, বন্ধ ঘরের আড়ালে তাঁরা বৈঠক করবেন না৷ মিডিয়ার ক্যামেরার সামনে, মমস্ত মেডিক্যাল পড়ুয়াদের উপস্থিতিতে সবাইকে নিয়ে যাতে বৈঠক করা যায়, তার স্থান নির্ধারনের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কোর্টে বল পাঠান জুনিয়ার চিকিৎসকরা৷
NRS জট কাটাতে পড়ুয়াদের একাংশ চাইছেন, তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসবেন৷ তবে, নবান্ন নয়৷ বৈঠকের জন্য বিকল্প স্থানের খোঁজও শুরু হয় বিজি বৈঠকে৷ পড়ুয়াদের অধিকাংশই চেয়েছিলেন, রাজ্যপালের মধ্যস্থতায় রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে মেটানো হোক সমস্যা৷ কিন্তু, পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ‘মাননীয়া বলে দিক, আমরা কোথায় তাঁর সঙ্গে বৈঠক করব৷ মাননীয়া ঠিক করবেন, বৈঠকের দিনক্ষণ ও স্থান৷ বৈঠকের ব্যবস্থা মাননীয়াকেই করতে হবে৷’ মুখ্যমন্ত্রীর নবান্নের বৈঠকের প্রসঙ্গ তুলে ধরে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগও এনেছেন আন্দোলনকারীরা৷