দার্জিলিং: শিলিগুড়ি পৌঁছে দার্জিলিংয়ে যাওয়ার জন্য গাড়ি ঠিক করতে গিয়েই ভোটের রেশের আভাস পেয়েছিলাম। গাড়ি প্রায় নেই বললেই চলে। যে কয়েকটি গাড়ি রয়েছে, সেগুলিও যেমন খুশি ভাড়া হাঁকছে। কেন? জিজ্ঞাসা করলে একটাই উত্তর, ‘ভোটের জন্য সব গাড়ি উঠিয়ে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। যেক’টা রয়েছে এই মঙ্গলবার পর্যন্তই।
বুধবার আর কোনও গাড়িই পাওয়া যাবে না। যেতে হয় তো চলুন, নইলে ছেড়ে দিন।’ দর কষাকষির পর গাড়ি যখন চলতে শুরু করল, তখনও ভোটের প্রভাব বেশ ভালোভাবেই মালুম হচ্ছিল। আজ বাদ কাল ভোট, চারিদিকে একটা সাজো সাজো রব তো থাকবেই। গণতন্ত্রের সব থেকে বড় উৎসব বলে কথা। ডান-বাম-শাসক-বিরোধী সকলেরই ভোটের পোস্টার, ব্যানার, দলীয় পতাকায় এলাকা পুরো ছয়লাপ। কিন্তু, রোহিনীর রাস্তা ধরে টোল প্লাজা পেরতেই চিত্রটা সূর্যকে মেঘে ঢেকে দেওয়ার মতো মুহূর্তে বদল হয়ে গেল। পাহাড়ের দিকে যতই এগিয়েছি, হোঁচটই খেতে হয়েছে। কোথায় ভোট? কোথায় ভোটের উত্তাপ। বাজারের দোকানদাররা অন্যদিনের মতোই পর্যটকদের হাঁক দিয়ে ডাকছিলেন। স্বাভাবিক জীবন। বোঝা গেল, পাহাড়ে ভোটের উত্তেজনা কিছুই নেই।
দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত অন্যতম বড় বিধানসভা কেন্দ্র হল খোদ দার্জিলিং এলাকা। সেখানেই ভোটের উত্তাপ একেবারেই নেই বলা যায়। কার্শিয়াং বাজার, সোনাদা বাজার, দার্জিলিংয়ের চক বাজার থেকে দার্জিলিং স্টেশন— এরকম হাতেগোনা কয়েকটি এলাকায় সমস্ত রাজনৈতিক দলের ছোট ছোট পোস্টার, ব্যানার এবং দলীয় প্রতীক দেওয়া ফ্ল্যাগ দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যেই দার্জিলিং স্টেশনের কাছে কংগ্রেসের একটি পোস্টার দেখে উৎসুক কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা নিজেদের মধ্যেই কথা বলছেন, কী লিখেছে বলত? পোস্টারটিতে কংগ্রেসের প্রার্থীর পক্ষে ভোট দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু, সেটি সম্পূর্ণ বাংলাতে লেখার জন্য তা পড়তে পারছেন না স্থানীয়রা। তাই পথচলতি এক বাঙালি পর্যটককে উৎসুকদের আবেদন, ‘দাদা কী লেখা আছে একটু পড়ে দেবেন। মনে হচ্ছে বাংলায় লেখা।’ সঙ্গে সঙ্গে সেই পর্যটক হাসতে হাসতেই তা পড়ে দিলেন।