কলকাতা: ফের প্রকাশ্যে চলে এল বিজেপির অন্দরের শীর্ষ নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব৷ দিলীপ ঘোষ ও মুকুল রায়ের দ্বন্দ্ব ঘিরে তুঙ্গে রাজনৈতিক বিতর্ক৷ বিতর্কের জল গড়াল এবার দিল্লিতে৷ গত সোমবার দ্য বেঙ্গল স্টোরি ডট কমকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ মন্তব্য করেন, ‘‘মুকুল রায়ের তুলনায় নিশীথ প্রামানিক অনেক বড় দরের নেতা৷ কারণ তিনি সাংসদ৷’’ দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিতর্কে সূত্রপাত৷ নাম না করে দিলীপকে পাল্টা কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি মুকুল৷ কে কত বড় নেতা তা জনতায় প্রমাণ করবে বলেও রাজ্য বিজেপি সভাপতিকে চ্যালেঞ্জ মুকুল রায়ের!
বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য বিজেপির দুই শীর্ষ নেতার অন্তর্দ্বন্দ্ব ঘিরে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি শিবির৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবার দু’পক্ষকে দিল্লিতে ডেকে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসতে চলেছেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অমিত শাহ৷
এমনিতেই বিজেপির অন্দরে প্রকট আকার ধারণ করেছে নব্য বনাম আদি যুদ্ধ৷ নতুনদের পাশে দাঁড়িয়ে ইতিমধ্যেই পুরনোদের বার্তা দিয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি৷ নতুনদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে পুরনোদের হাতে হাত রেখে সংগঠন বাড়ানোর ডাক দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ৷
এবার বিজেপির অন্দরে অস্বস্তি বাড়িয়ে নিউজ পোর্টালকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘‘মুকুলের তুলনায় অনেক বড় মাপের নেতা কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামানিক৷ কারণ, দলে মুকুলের কোন কন্ট্রিবিউশন নেই৷ কোনও রিপুটেশন নেই মুকুলের৷ এটাই বাস্তব৷ কারণ, মুকুল রায়ের সঙ্গে দলের কোনও কর্মীদের যোগাযোগ নেই৷ মুকুল রায়ের সঙ্গে যারা ঘুরে বেড়ান, সবকটা দালাল৷ কাটমানি পার্টির লোক৷’’
প্রকারান্তরে এই মন্তব্যের পিছনে বেশ কিছু যুক্তি রয়েছে বলে মনে করছে পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷ রেলের সদস্য পদ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ৪০ লক্ষ টাকার প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে মুকুল ঘনিষ্ঠ বিজেপি নেতা বাবান ঘোষের বিরুদ্ধে৷ ইতিমধ্যেই বাবান ঘোষকে ছেঁটে ফেলেছে বিজেপি৷ মুকুলের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠতেই এবার সরব হলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ৷ বিধানসভা ভোটের আগে দিলীপ-মুকুলের মন্তব্য পাল্টা মন্তব্য ঘিরে তৈরি হয়েছে জটিলতা৷ নাম না করে ইতিমধ্যেই মুকুল রায় ঘোষণা করেছেন, ‘কে কত বড় নেতা তা মানুষ ঠিক করে দেবে৷’
বিজেপির অন্দরে দিলী-মুকুল বিতর্ক বিতর্ক উড়িয়ে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, ‘‘আমরা দিল্লিতে যাচ্ছি৷ তিন মাস অন্তর অন্তর আমাদের বৈঠক হয়৷ তাতে বিধানসভার প্রস্তুতি নিয়ে অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক রয়েছে৷ বিধানসভা নির্বাচনে ২০০ সিট পেতে যা যা করার সেই বিষয়ে আমরা অমিত শাহের সঙ্গে আলোচনা করব৷ এর পিছনে অন্য কোন কিছু নেই৷ আমাদের তিন জনকে ডাকা হয়েছে৷’’