আজ বিকেল: মুকুল রায় নামটা শুনলেই গোটা রাজ্যের বাসিন্দার প্রতিক্রিয়া একসঙ্গে তিন রকম। বিজেপির লোকজন বলছে বাজিগর। তৃণমূল বলছে গদ্দার আর সাধারণ জনগণ বলছে সওদাগর। এই বাংলায় বিজেপির হারা বাজি জিতিয়ে দিয়েছেন মুকুল রায়। তৃণমূলের সাফল্যের যাবতীয় রণকৌশলের কাণ্ডারী মুকুল রায় যেদিন থেকে গেরুয়া শিবিরের সেদিন থেকেই ঘাসফুলের কপাল পুড়েছে। তাইতো সৌমিত্র, অনুপম অর্জুনের দলত্যাগের পরেই তাঁকে গদ্দার হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল বিজেপির জয়রথ নিয়ে মুখ খুলে সাফ জানিয়েছিলেন তৃণমূলকে মুছে দিতে চান তিনি। আজ জানালেন জেতার কৌশল।
বললেন, মুখে সবাই তৃণমূলের সমর্থক থাকলেও ভোটটা পদ্মতেই দিয়েছেন। আসলে এঁরা প্রত্যেকেই তো মুকুলবাবুর হাত ধরে তৃণমূলের ছত্রছায়ায় এসেছিলেন। তাহলে ছাতার মালিক যদি না থাকে আশ্রিতরা কোথায় যাবে। ছাতার মালিক যেখানে সেখানেই যাওয়ার কথা। তাই মুকুল রায় বিজেপিতে যোগ দিলে, তাঁর সহচর ও সাঙ্গপাঙ্গদের অনেকেই তৃণমূল ছাড়ে। তবে নিজাম প্যালেসে যাতয়াতকারী সমর্থক, ভক্ত ছাড়াও চাণক্য-র তো শিষ্যদের সংখ্যা নেহাত কম নয়। নিজেকে বাজি রেখে যাদের হাত ধরে মুকুল রায় দিদিকে ২০১১-তে মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসিয়েছিলেন, সেই তারা সঙ্গে সঙ্গেই দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলে তাঁদের নিষেধ করেন। আগে থেকে ৪২-এ-৪২ বলে রাখা তৃণমূলনেত্রীকে ভাববার অবকাশ দিতে চাননি মুকুল। তাই ঘরে যে সিঁধেল চোর ঢুকেছে তা মমতার বোধগম্য হয়নি, যতক্ষণে বুঝলেন ততক্ষণে তৃণমূলের একূল ওকূল দুকূল ভেসে গিয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় ভিড় করে মোদি হটাওয়ের স্লোগান তুললেও মুকুলের জনতা মোদি বাঁচাওয়ের প্রতীকেই বোতাম চেপে গিয়েছেন। তাইতো ২৩ তারিখ দিনের শেষে বাইশেই ৪২-র দুঃখ ভুলতে হচ্ছে তৃণমূলনেত্রীকে।বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মুকুল রায়ের কৃতিত্বে খুশি, দলীয় নেতাদের একাংশের মতে মন্ত্রী করে রায়বাবুকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হতে পারে। তবে বাকিদের দাবি, মমতার মুখ্যমন্ত্রীত্ব যতক্ষণ টিকে আছে, ততক্ষণ তাঁর ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলতেই রাজ্যে থাকবেন মুকুল। আর বিধানসভা মুঠোতে আনতে দিলীপ মুকুলের উইনিং কম্বিনেশনকে ভাঙবেন না নরেন্দ্র মোদি।