Aajbikel

পর পর বেশ কয়েকটা পার্টি অফিস পুনরুদ্ধার করল সিপিএম, পঞ্চায়েতের আগে এগুলি কিসের ইঙ্গিত?

 | 
CPM

নিজস্ব প্রতিনিধি: ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসার আগে এবং পরে তৃণমূল বারবার একটাই স্লোগান দিয়েছে, 'বদলা নয় বদল চাই'। যদিও সিপিএমের অভিযোগ তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর তাদের বহু কর্মীকে খুনের পাশাপাশি বাড়ি ছাড়া করা হয়েছে। এছাড়া কলকাতা তথা রাজ্য জুড়ে সিপিএমের একের পর এক পার্টি অফিস তৃণমূল দখল করে নিয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠে। সম্প্রতি বাঁকুড়ার সীমান্তবর্তী গড়বেতার একটি পার্টি অফিস ১২ বছর পর সিপিএম পুনরুদ্ধার করেছে তৃণমূলের কাছ থেকে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে তৃণমূল সাংসদ দেবের কেন্দ্র ঘাটালে তৃণমূলের একটি পার্টি অফিসে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দেন সিপিএম কর্মীরা।

সিপিএমের অভিযোগ এলাকায় উন্নয়ন হচ্ছে না, তাই তারা এভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার শাসনে তৃণমূল ছেড়ে ৪০০ জন স্থানীয় নেতাকর্মী সম্প্রতি যোগদান করেছেন সিপিএমে। মালদায় জেলা সম্পাদক-সহ তৃণমূলের প্রায় এক হাজার স্থানীয় নেতাকর্মী কিছুদিন আগেই কংগ্রেসে যোগদান করেছেন। শিলিগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে কংগ্রেস একার জোরে ক্ষমতা দখল করেছে। আর সর্বোপরি সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনে তৃণমূলকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছে সিপিএম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী। এর পাশাপাশি দমদমে সেভেন ট্যাঙ্কসের কাছে তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে হারানো পার্টি অফিস পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করেছেন সিপিএমের নেতা-কর্মীরা। সব মিলিয়ে এটা স্পষ্ট তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ক্রমশ শক্তি বাড়াচ্ছে বাম-কংগ্রেস।  


সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে এই সমস্ত বিষয়গুলি যে তৃণমূলকে একেবারেই স্বস্তি দিচ্ছে তা স্পষ্ট। তৃণমূলের আশঙ্কা বাম-কংগ্রেসের শক্তি বাড়লে সংখ্যালঘু ভোটের একটা অংশ তাদের দিকে চলে যেতে পারে। মূলত সংখ্যালঘু ভোটের উপর ভর করেই যে তৃণমূল একের পর এক নির্বাচনে জিতে চলেছে, সেটা সকলেরই জানা। মনে রাখতে হবে রাজ্যের প্রায় ১২৫টি বিধানসভা কেন্দ্রের ফলাফল নির্ধারিত করে দেন সংখ্যালঘুরা। তাই বাম-কংগ্রেসের শক্তি বাড়লে সংখ্যালঘু ভোটের একটা অংশও যদি সেদিকে সরে যায়, তাহলে সমস্যা যে বাড়বে সেটা ভাল  করেই জানেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সবচেয়ে বড় কথা তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তাতে দলেরই একাংশ প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। তৃণমূলের একের পর এক নেতা-বিধায়ক জেলে গিয়েছেন। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার স্ক্যানারে রয়েছেন তৃণমূলের আরও নেতা-নেত্রী। সেই সঙ্গে দলে রয়েছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সমস্যা। দলের প্রবীণ বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী প্রকাশ্যে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বকে নিশানা করেছেন। সব মিলিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বেশ বিপর্যস্ত রাজ্যের শাসক দল। তাই বিরোধীরা যেভাবে নতুন করে শক্তি বাড়ানোর চেষ্টা করছে তাতে কিছুটা হলেও উদ্বিগ্ন তৃণমূল। যদিও এই ইস্যুতে তৃণমূলের নেতারা প্রকাশ্যে কিছু বলছেন না। তবে গোটা বিষয়টি নিয়ে যে তারা খুবই চিন্তিত সেটা স্পষ্ট।

Around The Web

Trending News

You May like