নিজস্ব প্রতিনিধি: এই লোকসভা নির্বাচন সিপিএম তথা বামেদের ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই ছিল। রাজ্য রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক হওয়ার লড়াই ছিল। বঙ্গ রাজনীতির ময়দানে লালঝান্ডাকে সম্মানের সঙ্গে ফিরিয়ে আনার লড়াই ছিল। কিন্তু সেই কাজে কী সফল হবে বামেরা (CPIM)? সেই চর্চা বহুদিন ধরে চলছিল রাজ্য (West Bengal) রাজনীতিতে।
ভোটের ফলাফল (Election analysis)
তবে মঙ্গলবার ভোটের ফলাফল তা স্পষ্ট করে দিল। ফের বড় শূন্য পেয়েছে সিপিএম তথা বামেরা। অনেক সাড়া জাগিয়েও হাতে পেন্সিল ছাড়া আর কিছুই থাকল না তাদের। উল্লেখ্য গত লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই রাজ্য রাজনীতিতে শুধুই বাইনারি চলছে। প্রতিটি নির্বাচনে মূল লড়াই হয়েছে তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির। তৃতীয় পক্ষ হিসেবে কিছু কিছু জায়গায় বাম-কংগ্রেস থাকলেও তা ধর্তব্যের মধ্যে আসে না।
বামেরা রাজ্যে শূন্য (CPIM)
গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএম তথা বামেরা রাজ্যে শূন্য হয়ে গিয়েছে। গতবার দু-একটি কেন্দ্র বাদ দিলে প্রত্যেকটিতেই বাম প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। অবশ্য গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বেশ কয়েকটি জেলায় কিছুটা হলেও শক্তিবৃদ্ধি হয়েছে বামেদের। তবে ভোটবাক্সে রেড ব্রিগেড সাফল্য না পেলেও বিগত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন ইস্যুতে তারা কিন্তু প্রবলভাবে রাস্তায় ছিল। সেই সমস্ত কর্মসূচিতে ব্যাপক জমায়েত দেখেছে শহর তথা রাজ্যবাসী।
লড়াই যথেষ্ট
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বামেদের ব্রিগেড সমাবেশে ব্যাপক ভিড় হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনে তার প্রভাব দেখা যায়নি। এবারেও বামেদের ব্রিগেডে ভালোই ভিড় হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে একাধিক কেন্দ্রকে পাখির চোখ করে ঝাঁপিয়েছিল সিপিএম। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল মুর্শিদাবাদ, দমদম এবং যাদবপুর। মুর্শিদাবাদে সিপিএমের প্রার্থী হয়েছেন খোদ দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। আর দমদমে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী এবং যাদবপুরে সিপিএমের যুব নেতা সৃজন ভট্টাচার্য প্রার্থী হয়েছেন। তাঁরা যথেষ্ট লড়াই চালিয়েছেন বলে মনে করে আলিমুদ্দিন। প্রচারে যথেষ্ট সাড়া জাগিয়েছিলেন তাঁরা।
লোকসভা কেন্দ্র
ঘটনা হল মুর্শিদাবাদের পাশাপাশি শহর কেন্দ্রিক দুই লোকসভা কেন্দ্র দমদম এবং যাদবপুরে প্রচারে ঝড় তুলে দিয়েছিল সিপিএম। একটা সময় এই দুটি কেন্দ্র সিপিএম তথা বামেদের দুর্গ বলে বিবেচিত হতো। কিন্তু রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর ধীরে ধীরে প্রেক্ষাপটের বদল হয়েছে। এই দুটি লোকসভায় তৃণমূল ঝড় দেখা গিয়েছে বিগত দশ বছরের বেশি সময় ধরে। সেখানে প্রধান বিরোধী শক্তি হিসেবে বিজেপি উঠে এলেও তারা কিন্তু তৃণমূলকে হারাতে পারেনি। এই পরিস্থিতিতে চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে যাদবপুর ও দমদম কেন্দ্রে সিপিএম সাধ্যমতো লড়াই দেওয়ার করেছে। কিন্তু দিনের শেষে তাতে লাভ হল না।
সিপিএম কর্মী সমর্থক (Left Front)
এই পরিস্থিতিতে একটা প্রশ্নই উঠছে, আগামী দিনে সিপিএম কর্মী সমর্থকদের রাস্তায় নামানো যাবে তো? তাঁরা যেটুকু রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছিলেন সেটা কী আগামী দিনে আর দেখা যাবে? নাকি সবাই ঘরে ঢুকে যাবেন? এই ধাক্কা কার্যত বঙ্গ রাজনীতিতে সিপিএমকে পুরোপুরি সাইনবোর্ড করে দিল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
ঘুরে দাঁড়ানো যাবে?
এই জায়গা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোটা খুবই কঠিন কাজ। সেই নেতৃত্ব বর্তমানে নেই রেড ব্রিগেডের কাছে। কেন এই বিপর্যয় তার উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছে বামেরা। হয়ত উত্তর মিলেও যাবে। কিন্তু আগামী দিনে ঘুরে দাঁড়ানো যাবে কিনা সেই প্রশ্নের উত্তর আদৌ কী মেলাতে পারবে বামেরা? প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে।
Politics: CPIM fails to make an impact in the latest election, despite their efforts. Read the full story to know more.