কলকাতা: বাংলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বুধবার কমিশনে গিয়ে নালিশ ঠুকে এসেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ৷ কমিশনে নালিশ ইস্যুতে বিজেপির বিরুদ্ধেও মুখ খুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বাংলা ভোটের উৎসব ঘিরে শাসক বিরোধী শিবিরে দড়ি টানাটানির মাঝেই রাজ্যে আসছেন ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার৷ আগামী শনিবার রাজ্যে আসছেন ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার সুনীল জৈন। এখানে সমস্ত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করবেন। পাশাপাশি রাজ্যের সব ডিএম ও এসপি-দের সাথেও কথা বলবেন৷ তিন দফায় হবে বৈঠক৷
বুধবার নির্বাচন কমিশনে বাংলার বিরুদ্ধে নালিশ জানাতেই বিজেপির বিরুদ্ধে খড়গহস্ত হন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এদিন বিজেপির বিরুদ্ধে তথ্য দেখিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা৷ বলেন, ‘‘বিজেপি একাধিক রাজ্যে ৬০ শতাংশ আসনে বিনা লড়য়ে জয় পয়েছে৷ নিজেরা ভোট লুটছে, আর আমাদের বলছে৷ ওঁদের কী কোনও কাণ্ডজ্ঞান নেই?’’ রাজ্যের প্রতিটি বুথকে স্পর্শকাতর ঘোষণার দাবি প্রসঙ্গেও বিজেপিকে আক্রমণ করেন মমতা৷
বলেন, ‘‘ওরা কী ভেবেছে? রাজ্যটাকে ওরা নিয়ন্ত্রণ করবে? বিজেপিকে ভেবেছে রাজ্যটাকে কী নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে চালাবে? আমরা দেখিয়ে দেব, রাজ্যে ৪২টা ৪২টা নিয়ে বিজেপিকে যোগ্য জবাব দেব৷ বিজেপির এই দাবি বাংলাকে অপমান করেছে৷’’ সংবাদ মাধ্যমের উপর নির্বাচন কমিশনের নজরদারির দাবি প্রসঙ্গেও সরব হন মমতা৷ জানিয়ে দেন, এই ধরনের কোনও নিয়ন্ত্রণের অনুমতি কোনও দিনই রাজ্যের তরফে দেওয়া হবে না৷ যদিও, সোশ্যাল মিডিয়ার নজরদারি চালাতে ইতিমধ্যেই নবান্নে চালু হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া মনিটারিং সেল৷
বাংলার প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে! পুলিশ শাসকদলের হয়ে কাজ করছে! ফলে, রাজ্য পুলিশকে দিয়ে ভোট করানোর বিরুদ্ধে এবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব৷ বুধবার কমিশনের কর্তাদের সঙ্গে দেখা করে বাংলার সমস্ত বুথকে অতি স্পর্শকাতর ঘোষণা দাবিও জানান কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ৷ বাংলার একাধিক পুলিশ কর্তার নামের তালিকাও এদিন কমিশনের জমা দেওয়া হয়েছে বলেও সাংবাদিককে জানান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী৷ একই সঙ্গে ভোটের আগে বাংলার সংবাদ মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ টানতে কমিশনের তরফে মিডিয়া অবজারভার নিয়োগেরও দাবি জানিয়ে আসেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব৷
এদিন কমিশনে গিয়ে গত পঞ্চায়েত ভোটের সন্ত্রাসের প্রসঙ্গও তোলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী৷ বলেন, ‘‘বাংলা এমন একটা প্রদেশ যেখানে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ বাংলার প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে৷ বাংলার শীর্ষ পুলিশকর্তারা শাসকদলের কর্মসূচিতে যোগদিচ্ছে৷ মিডিয়ার স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে৷ রাজনৈতিক দলগুলিকে মিটিং মিছিলের অনুমতি দিচ্ছে না৷ প্রধানমন্ত্রীর হেলিকম্পট নামতে দেওয়া হয় না৷ সেখানে গণতন্ত্রের অবস্থা কেমন হতে পারে তা বোঝা যাচ্ছে৷ আমরা আজ কমিশনে দাবি করেছি, পশ্চিমবঙ্গকে অতি সংবেদনশীল হিসাবে ঘোষণা করুক নির্বাচন কমিশন৷ রাজ্য পুলিশের ব্যবহার কমিয়ে বেশি করে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হোক৷ একই সঙ্গে মিডিয়া অবজারভার নিয়োগ করা হোক৷