কলকাতা: তৃণমূল নেত্রীরর সঙ্গে করিমপুরে উপনির্বাচনের প্রচার! সোশ্যাল দুনিয়ায় ছবি ভাইরাল হতেই নালিশ বিরোধীদের৷ নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ বিজেপির৷ বিরোধীদের অভিযোগ খতিয়ে দেখে থানারপাড়ার ওসি সুমিত ঘোষকে অপসারণের নির্দেশ নির্বাচন কমিশনের৷
তবে, ভোটের প্রচারে থানার উপস্থিতি ঘিরে কম বিতর্ক হয়নি৷ কমিশনে বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ পাল্টা সংবাদ মহুয়া মৈত্রের দাবি, যে ছবি বিজেপি প্রচার করছে, তা ভোটের প্রচারের ছবি নয়৷ মিথ্যে প্রচার করা হচ্ছে৷ তাঁর দাবি, ‘‘গত ১৮ অক্টোবর আমি ওই ছবিটি পোস্ট করেছিলাম৷ আমরা ওই সময় কোনও ভোটার প্রচারে করছিলাম না৷ আমার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে ছবিটি নেওয়া হয়েছে৷ আমি বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে নির্বাচন কমিশন৷ এটা শাস্তি যোগ্য অপরাধ৷’’
বিজেপির অভিযোগের ভিত্তি খতিয়ে দেখতে আগেই জেলা শাসকের কাছে অভিযুক্ত ওসির রিপোর্ট চাওয়া হয়৷ করা হয়েছে শো-কজ৷ থানার ওসিকে নাকি তৃণমূল কংগ্রেসের প্রচারে দেখা যাচ্ছে৷ করিমপুর বিধানসভার উপনির্বাচনে এই অভিযোগ উঠেছে৷ থানারপাড়া থানার ওসি সুমিত কুমার ঘোষের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানায় বিজেপি৷ তাঁর অপসারণ দাবি করা হয়৷
বিজেপি নির্বাচন ম্যানেজমেন্ট কমিটির তরফে শিশির বাজরিয়া রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন অধিকারিককে চিঠি দিয়ে যা জানানো হয়, থানাপাড়ার ওসি’কে নিয়মিত কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রর সঙ্গে তৃণমূল প্রার্থীর জন্য প্রচারে দেখা যাচ্ছে৷ ভোটারদের প্রভাবিত করা হচ্ছে৷ নির্বাচন আচরণবিধিকেও ভাঙা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলা হয়৷
এই বিধানসভা কেন্দ্রটিতে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে বিচার করলে দেখা যাবে যে, তৃণমূল প্রার্থী আবু তাহের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির হুমায়ুন কবীরের তুলনায় ১৪৩৪০ ভোটে এগিয়ে ছিলেন৷ আবু তাহের পেয়েছিলেন ৮৭৫১৩ টি ভোট৷ অন্যদিকে, হুমায়ুন কবীর পেয়েছিলেন ৭৩১৭৩ টি ভোট৷ সিপিএমের বদরুদ্দোজা খান এই কেন্দ্রে মাত্র ১৭৬০৯ টি ভোট পেয়েছিলেন৷ অন্যদিকে কংগ্রেস প্রার্থী আবু হেনার প্রাপ্ত ভোট ছিল ২২০৯৭ টি৷ সেক্ষেত্রে যদি, কংগ্রেস-বামফ্রন্ট জোট হত, তাহলে তাদের প্রাপ্ত ভোট দাঁড়াত, ৩৯৭০৬টি৷ ওই ভোট নিয়ে তৃণমূল বা বিজেপি প্রার্থীকে চ্যালেঞ্জ করার কথা ভাবা যায় না৷
সেক্ষেত্রে এই উপনির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী জয়প্রকাশ মজুমদারের সম্ভাবনা কম৷ বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থীর তৃণমূলের মূল লড়াই৷ বিজেপি চাইবে, তাদের ৭৩ হাজার ভোটকে বাড়িয়ে নিয়ে যেতে৷সংখ্যা লঘু অধ্যুষিত এলাকায় গেরুয়া শিবিরের সেরকম সংগঠন না থাকা সত্ত্বেও লোকসভায় তারা ভালো লড়াই করেছে৷ (নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া বিজেপির ছবির সত্যতা যাচাই করেনি আজ বিকেল ডট কম৷)
তৃণমূলও এই এলাকায় নিজেদের সংগঠনকে মজবুত রাখছে৷ লোকসভা নির্বাচনে রানাঘাট বা মুর্শিদাবাদের কোনো কোনও জায়গাতেই বিজেপি জিততে পারেনি৷ কিন্তু, সংখ্যালঘু ভোটব্যাংক-এর দিকে তাকিয়ে এবার বিজেপি সেই এলাকা গুলিতে আগেই প্রচার শুরু করেছে৷ তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় এই যে, থানারপাড়ার ওসির বিষয়টি প্রথমে সিপিএমের চোখে পড়ে৷ ওই এলাকায় সিপিএম প্রার্থী কংগ্রেসের সমর্থনে লড়াই করছেন৷ সিপিএমও বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসে৷