পরিচালনা সমিতির নির্বাচনেও গোষ্ঠীর সংঘর্ষ! তাহলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কী হবে! আশঙ্কা

পরিচালনা সমিতির নির্বাচনেও গোষ্ঠীর সংঘর্ষ! তাহলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কী হবে! আশঙ্কা

নিজস্ব প্রতিনিধি: সামান্য একটা পরিচালন সমিতির নির্বাচন। আর সেটা নিয়েই রণক্ষেত্র পরিস্থিতি তৈরি হল মালদার রতুয়া থানার চাঁদমণি এলাকায়। একটি হাই মাদ্রাসার পরিচালনা সমিতির নির্বাচন ঘিরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী যেভাবে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ল, তাতে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন জেলার মানুষ। সকলেরই প্রশ্ন একটি মাদ্রাসার পরিচালন সমিতি কার হাতে থাকবে সেটা নিয়েই যদি বাড়ি, মোটরবাইকে ভাঙচুর হয়, বোমাবাজি হয়, গুলি  চলে, তাহলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে এলাকা দখলে রাখতে পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে?

এদিন দু’পক্ষের সংঘর্ষে ১২ জন জখম হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে একজন গুলিবিদ্ধ পর্যন্ত হয়েছেন বলে স্থানীয় মানুষের দাবি। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনে পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা নিয়ে এখন থেকেই উদ্বেগ বাড়ছে জেলাবাসীর। আসলে সবার লক্ষ্য একটাই, মধুভাণ্ড কার হাতে থাকবে। তাই সবকিছু নিজের দখলে রাখতে হবে। সেখান থেকেই তৈরি হচ্ছে যাবতীয় সমস্যা। ঘটনা হল এই পরিচালন সমিতির নির্বাচনে একটি আসনেও বাম, বিজেপি বা কংগ্রেস কোনও প্রার্থী দেয়নি। অথচ ছটি আসনে ১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী পৃথকভাবে প্রার্থী দাঁড় করিয়েছে। মালদা জেলার সাংগঠনিক নেতারা, রতুয়ার বিধায়ক-সহ অন্যান্য নেতাদের অনুগামীরা দুটি আলাদা গোষ্ঠীর হয়ে সকাল থেকেই মাঠে নেমে পড়েছিলেন। একটা সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। রাজনৈতিক মহল মনে করছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এটা একটা সামান্য ঝলক ছাড়া আর কিছুই নয়।

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার দাবি করছেন এবার পঞ্চায়েত নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হবে। প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল যাতে মনোনয়ন জমা দিতে পারে সেই পরিবেশ থাকবে। এরপরেও যদি কারও অসুবিধা হয় সেক্ষেত্রে তিনি নিজে তাঁদের মনোনয়ন জমা দিতে সাহায্য করবেন বলে সদ্য একটি জনসভা থেকে বলেছেন অভিষেক। সেই সঙ্গে অভিষেক বলেছেন যাদের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে, যারা মানুষের পাশে থাকেন তাঁদেরই তৃণমূল পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী করবে। কিন্তু প্রশ্নটা সেখানেই, যারা প্রার্থী হতে পারবেন না তাঁরা নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে, নিজের গোষ্ঠীর লোকজনদের দিয়ে ভোট করিয়ে জেতার চেষ্টা করবেন না তো? কারণ এমন ঘটনা অতীতে বহুবার পুরসভা এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনে দেখা গিয়েছে। বহুদিন ধরেই বিভিন্ন ইস্যুতে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে রক্ত ঝরেছে বাংলায়। মূলত ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করেই একের পর এক গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।  তাতে মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে তৃণমূলের বহু নেতাকর্মীর। কিন্তু এরপরেও বিষয়টিতে রাশ টানতে পারছে না শাসক দল। গোটা রাজ্য জুড়ে এই ঘটনা হয়েই চলেছে। তাই তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব যে দাবি করছেন তা বাস্তবে কতটা দেখা যাবে তা নিয়ে আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five + seventeen =