কলকাতা: মিঠুন চক্রবর্তীর দেখানও পথেই হাঁটবেন বলে আগেই ঘোষণা করেছিলেন শতাব্দী রায়৷ এবার সারদার নেওয়া পারিশ্রমিক ফেরত দিলেন তৃণমূলের এই সাংসদ৷ ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে তিনি ৩০ লাখ ৬৪ হাজার টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন বলে খবর৷ তবে সেই টাকায় আপাতত হাত দিচ্ছে না ইডি৷ জানা গিয়েছে, ওই টাকা শতাব্দী অ্যাকাউন্টে রেখে দেওয়া হয়েছে৷
এর আগে একাধিকবার তদন্তকারী সংস্থার দপ্তরে হাজিরা দিয়ে শতাব্দী রায় তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করেছেন৷ প্রকাশ্যেই তিনি জানিয়েছেন, সারদার থেকে নেওয়া পারিশ্রমিকে তিনি কড়ায়-গন্ডায় মিটিয়ে দেবেন৷ আজ বুধবার সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিয়ে ড্রাফটের মাধ্যমে সেই টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার কথা জানান শতাব্দী৷ কিন্তু, শতাব্দী দেওয়া সেই টাকা হাত দেয়নি তদন্তকারী আধিকারিকরা৷
সূত্রের খবর তাঁকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, ওই টাকা তাঁর নিজের অ্যাকাউন্টে রাখতে হবে৷ তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর সেই টাকার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে৷ পর্যপেক্ষক মহলের একাংশ, ইডির এই অবস্থান ঘিরে নতুন করে বিক্ষোভ বিপাকে পড়তে পারেন তৃণমূলের এই সাংসদ৷ কেননা, টাকা ফিরিয়ে দিয়ে ‘সততা’ দেখানোর চেষ্টা করলেও তা কার্যত ফিরিয়ে দিয়েছে ইডি৷ গোটা তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরে পারিশ্রমিকের টাকা নিয়ে কী করা হবে, ওই টাকা ভুক্তভোগীদের ফিরিয়ে দেয়া হবে কি না, তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন৷ আপাতত সিদ্ধান্ত হয়েছে ৩০ লক্ষ টাকায় সংসদের অ্যাকাউন্টে রাখা হবে পরে৷ তদন্তের গতি প্রকৃতির উপর নির্ভর করবে৷
ইডি সূত্রে খবর, সারদার অ্যাকাউন্ট থেকে তৃণমূল সাংসদের কাছে একাধিক সময়ে দফায় দফায় টাকা গিয়েছে৷ ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে বাজার থেকে টাকা তোলার পেছনে শতাব্দী ভূমিকা ছিল বলেও জানতে পেরেছে তদন্তকারী আধিকারিকরা৷ কারণ তিনি বিজ্ঞাপনে মুখ ছিলেন৷ ফলে টাকা ফিরিয়ে দিয়ে শতাব্দীর দায় মিটে যাচ্ছে তা অবশ্য মানতে নারাজ ইডির আধিকারিক আধিকারিকরা৷
যদিও এর আগে একইভাবে মিঠুন চক্রবর্তীও তাঁর পারিশ্রমিকের টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন৷ মিঠুন চক্রবর্তীর এই সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি সারদার মিডিয়ার অন্যতম মুখ কুণাল ঘোষ৷ তিনি জানিয়েছিলেন, ‘‘আমি মিঠুনদাকে শ্রদ্ধা করি৷ এটা নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই৷ কিন্তু মিঠুনদা তাঁর সঙ্গে সঙ্গে বোঝাপড়া হয়েছিল, সেটি ৫২ সপ্তাহের কাজ করার৷ কিন্তু আমার যা মনে পড়ছে, মিঠুনদা সেই কাজ করেনি৷ মাত্র নটি এপিসোড করেছিলেন৷ ৭টি এপিসোড টেলিকাস্ট করা হয়েছিল৷ যেহেতু কাজ না করে পয়সা পেয়েছিলেন তিনি, তাই তিনি সম্ভবত টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন৷ যাঁরা পারিশ্রম করেছেন, সময় দিয়েছেন, কাজ করেছেন, তাঁরা অবশ্যই পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন৷ এছাড়া যত দিন রাজ্য সরকার তদন্ত করেছিল তখন মিঠুন চক্রবর্তীর বিবেক কোথায় ছিল টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে? যখন সিবিআই-ইডি যখন বাংলায় এল, তখন কেন টাকা ফেরত গেলেন মিঠুন দা?’’