কেন আর জি করের দায়িত্বে আধাসেনা? নিজেকে প্রশ্ন করুক কলকাতা পুলিশ

দেবময় ঘোষ: আর জি কর হাসপাতালে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তার সিদ্ধান্ত ১৬৮ বছরের কলকাতা পুলিশের কাছে কতটা অস্বস্তির তা তাদের উচ্চপদস্থ’রা বলতে পারবেন। শহরে বুকে একটি…

RG Kar Hospital Central Forces

দেবময় ঘোষ: আর জি কর হাসপাতালে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তার সিদ্ধান্ত ১৬৮ বছরের কলকাতা পুলিশের কাছে কতটা অস্বস্তির তা তাদের উচ্চপদস্থ’রা বলতে পারবেন। শহরে বুকে একটি সরকারি হাসপাতালের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে না পারা এক চরম ব্যর্থতা। কলকাতা পুলিশ তা বুঝতে পারছে। এক সময় কলকাতা পুলিশের সঙ্গে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের তুলনা চলত।

আজ পরিস্থিতি এমন যে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে তাদের কাজ করে দিতে হবে। রাজ্য জুড়ে এখন নির্বাচন পরিস্থিতি নয়। এই সময় রাজ্য সরকারের অধীনে একটি বাহিনীর কার্যক্ষেত্রের দখল নিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। তা শতাব্দী প্রাচীন এই সংস্থার গরিমাকে কালিমালিপ্ত করল। রাজ্য সরকারের প্রতিবাদ করার জায়গা নেই। আদেশ দিয়েছে স্বয়ং সুপ্রিম কোর্ট। সাম্প্রতিক অতীতে শাসক দলের মুখপাত্র, নেতা বা কর্মীদের মুখে নির্বাচন কমিশনের কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে অনেক অম্ল মধুর বক্তব্য শোনা গিয়েছে। কিন্তু, আর জি কর হাসপাতালে কলকাতা পুলিশের আপাতত কার্যক্ষেত্র হারানো ঘটনার উদাহরণ ইদানিং আর নেই। বলা যেতে পারে নজিরবিহীন।

প্রসঙ্গত, আর জি কর হাসপাতালের গত ৯ অগাষ্ট যে ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে তাকে পাশবিক আখ্যা দিলে পশুর অপমান করা হয়। তারপর থেকে রাজ্য প্রশাসনের এক একটি পদক্ষেপ আম জনতার মধ্যে বিতৃষ্ণার উদ্রেক করেছে। কলকাতা পুলিসের নিরাপত্তায় কি করে আর জি করের দুর্বৃত্তের অনুপ্রবেশ ঘটল তা শুধু আদালত কেন , সাধারণ পথ চলতি জনতার মনে জাগিয়েছে প্রশ্ন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য চমকৃত হওয়ার মত। সর্বোচ্চ বিচারালয়ের বক্তব্য শুনে মনে হয়েছে এ যেন সাধারণ মানুষেরই কথা। প্রতিবাদী আমজনতা তো পথে ঘাটে এই কথাই বলছে।

রাজ্য প্রশাসনের সামর্থ এবং সদিচ্ছার প্রতি সুপ্রিম কোর্টের আস্থা নেই তা তারা বুঝিয়ে দিয়েছে একটি পদক্ষেপে- খাস কলকাতার আর জি করের নিরাপত্তার দায়িত্বে এখন কেন্দ্রীয় আধা সেনা। যুক্তরাষ্ট্র পরিকাঠামোয় রাজ্যের অধিকারের প্রশ্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার নেতা মন্ত্রীদের সওয়াল করতে শোনা গিয়েছে বহুবার। প্রথমে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে আর জি কর কাণ্ডের তদন্তভার সিবিআই – এর কাছে যায়। তারপর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ঘটনাস্থলের সামগ্রিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পায় কেন্দ্রীয় আধা সেনা – এই দুই ঘটনা কি রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ নয়? প্রশাসন কী ভাবছে? যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো নিয়ে যারা মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়ার চিৎকার করতেন তারা সকলে চুপ করে গিয়েছেন।

সুপ্রিম কোর্টের সওয়াল জবাবের প্রথম দিনেই সিবিআই যা জানিয়েছে তা উল্লেখযোগ্য। পাঁচ দিন পর থেকে তারা তদন্ত ধরেছেন। ঘটনাস্থলে ‘Crime scene is altered’ অর্থাৎ – কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। সেই কারণেই তদন্ত প্রক্রিয়ায় অগ্রসর হতে অসুবিধা হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত কী হবে? রাজ্য প্রশাসন কি সিবিআই-কে তদন্তে সাহায্য করবে? আশার একটাই বার্তা – সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে চলবে এই তদন্ত প্রক্রিয়া।

আরও পড়ুন –

ফের দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছেন অভিষেক? কার্যত ছন্দহীন তৃণমূল!

ঘরে বাইরে প্রবল চাপে তৃণমূল! এসব সামলানো যাবে তো?

কোন রাজ্যে কোন সরকার রয়েছে তা দেখেই হবে প্রতিবাদ? তাই ওঁরা চুপ?

প্রতিবাদীদের ভিড়েই বিধানসভার অঙ্ক! হিসেব কঠিন আবার সোজাও, উত্তর মেলাবে জনগণ

সিবিআই: একাধিক তদন্ত নিয়ে রাজ্যের রিপোর্ট কার্ড কী বলছে?

বাংলায় কিছু ঘটলেই অন্য রাজ্যের প্রসঙ্গ টানা, এই প্রবণতা বন্ধ হবে না?

 

Politics: The deployment of central forces at RG Kar Hospital following a horrific incident raises concerns about Kolkata Police’s capability. With Supreme Court’s order and CBI investigation underway, questions loom over state administration’s effectiveness.