আরও একটা যুদ্ধ জিতে বাড়ির পথে বুদ্ধ, স্বস্তি ফিরছে অনুগামীদের মধ্যে

আরও একটা যুদ্ধ জিতে বাড়ির পথে বুদ্ধ, স্বস্তি ফিরছে অনুগামীদের মধ্যে

কলকাতা: বাম জমানা চলাকালীন নানা অভিযোগে বিদ্ধ তিনি হয়েছেন। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে যা খুবই স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু ক্ষমতা হারানোর এত বছর পর, দীর্ঘ দিন রোগে ভুগে, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরও তাঁকে রাজনৈতিক নিশানায় পড়তে হয়েছে। বিষয়টি স্বাভাবিক না হলেও তাঁকে পড়তে হয়েছে। তবে তিনি হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে শারীরিক যন্ত্রণার মধ্যেও এসব অনায়াসে সহ্য করেছেন। নামটা যে তাঁর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। শারীরিক, মানসিক যন্ত্রণা তাঁকে কাবু করতে পারেনি, এবারও। সব বাধা পেরিয়ে তিনি আবার ফিরতে চলেছেন কলকাতার পাম অ্যাভিনিউয়ের ছোট্ট ফ্ল্যাটে।

গত ২৯ জুলাই শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তবে আপাতত তিনি যথেষ্টই সুস্থ। ইতিমধ্যেই একাধিকবার তাঁর শারীরিক অবস্থা বিচারের জন্য গঠিত হওয়া মেডিক্যাল বোর্ড বৈঠক করেছে। সোমবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, চলতি সপ্তাহেই বাড়ি ফিরতে চলেছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে নিয়মিত ফিজিওথেরাপি চলছে তাঁর। হাসপাতালের পরিবর্তে আপাতত তাঁর বাড়ির বাইপ্যাপ মেশিন ব্যবহার করছেন চিকিৎসকরা। এছাড়া মাঝে মধ্যে মুখ দিয়েও তিনি খাচ্ছেন৷ তবে তা তরল খাবার৷ যদিও বেশিরভাগ সময়ে বুদ্ধদেববাবুকে রাইলস টিউবের মাধ্যমেই খাবার খাওয়ানো হচ্ছে কিন্তু তাঁর অবস্থা যে সঙ্কটজনক নয় তা স্পষ্ট। তাঁর শরীরে সমস্ত প্যারামিটার স্বাভাবিক রয়েছে। তিনি উঠে দাঁড়িয়েছেন বলেও জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। 

বিগত কয়েকদিন তাঁর দলের ওপর বা অনুগামীদের ওপর দিয়ে কী কী গিয়েছে তা এক কথায় বলে বোঝানো সম্ভব নয়। শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই বুদ্ধদেববাবুকে নিয়ে চলেছে প্রার্থনা। যদিও এই সময়েও নানবিধ সমালোচনা হয়েছে তাঁকে নিয়ে। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকেই তা করা হয়েছে। দলীয় মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বক্তব্য ছিল, বুদ্ধবাবুকে মহামানব না বানিয়ে তাঁর সময়ের সন্ত্রাস, অপশাসনের কান্ডগুলি মানুষকে মনে করিয়ে দেওয়া উচিত, নতুন প্রজন্মকে জানানো উচিত। তাঁর এমন মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই ছিছিক্কার পড়েছে। অনেকেই ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে কুণালের মানসিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তবে তাতে যে আক্রমণ কমেছিল তা নয়। শাসক দলের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সঙ্গীতশিল্পী কবীর সুমনও তাঁকে পরোক্ষে নিশানা করেন এই সময়ে। 

১৯ বছর আগে ‘ধর্ষক’ ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের ফাঁসি ইস্যুতে কবিতা লিখে কবীর সুমন বলেছেন, ”মীরার ভজন শোনে কি প্রৌঢ়, নাকেমুখে নল দিয়ে, ক’দিন পরেই শোনাবে সে গান ধনঞ্জয়কে গিয়ে।” নেটিজেনদের দাবি, তিনি যা যা লিখেছেন তাতে সরাসরি রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকেই নিশানা করা হয়েছে এবং তাঁর মৃত্যু কামনাও করা হয়েছে। যদিও আপাতত এসব নিয়ে আর চর্চায় লাভ দেখছেন না বুদ্ধবাবুর অনুগামীরা। এখন তারা অপেক্ষায় কবে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে যাবে অ্যাম্বুলেন্স। হয়তো তিনি বেশ কয়েকবার হাতও নাড়িয়ে দেবেন গাড়ির ভিতর থেকে।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 × 1 =