শিল্প, বিপ্লব ও বিতর্ক! কেমন ছিল ‘ব্র্যান্ড’ বুদ্ধ’র রাজনৈতিক জীবন?

Buddhadeb Bhattacharjee political life একমাথা সাদা চুল, চোখে চশমা… পরনে ধবধবে সাদা ধুতি-পাঞ্জাবি… বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, নাম বললেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে এই চেহারাটা। পশ্চিমবঙ্গের ১১…

Buddhadeb Bhattacharjee political life

Buddhadeb Bhattacharjee political life

একমাথা সাদা চুল, চোখে চশমা… পরনে ধবধবে সাদা ধুতি-পাঞ্জাবি… বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, নাম বললেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে এই চেহারাটা। পশ্চিমবঙ্গের ১১ বছরের মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবারের সকাল শুরু হল তাঁর প্রয়াণের খবর শুনে। রাজ্যের সপ্তম মুখ্যমন্ত্রীর মৃত্যুতে শোকে ভেঙে পড়েছেন অনেকে, অভিভাবকহীন বঙ্গ সিপিএম।

Buddhadeb Bhattacharjee’s political life

সম্পর্কে কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ভাইপো বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বামপন্থী পরিবারে বেড়ে ওঠা। ১৯৬৬ সালে সিপিএমের সদস্য হন তিনি। দলে যোগ দেওয়ার পর দলীয় পত্রপত্রিকা সম্পাদনা এবং লেখালিখির দায়িত্ব পড়েছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের উপর।

১৯৬৮ সালে ডিওয়াইএফআই-এর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদক হন।

১৯৭১ সালে সিপিএমের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সদস্য।

১৯৭৭ সালে কাশীপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রথম নির্বাচনে জয়।

১৯৭৭-১৯৮২ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী ছিলেন।

১৯৮২ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত হন।

১৯৮৭ সালে যাদবপুর কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে ফের মন্ত্রিসভায় ফিরে আসেন।

রাজনৈতিক জীবনের শেষ নির্বাচন পর্যন্ত যাদবপুর কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
নব্বইয়ের দশকের গোড়ায়, তৎকালীন তথ্য ও সংস্কৃতি সচিবের সঙ্গে মনোমালিন্য জেরে জ্যোতি বসুর মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছিলেন বুদ্ধদেব। পরে যদিও ফিরে আসেন। স্বরাষ্ট্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতরের দায়িত্ব সামলেছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ১৯৯৯ সালের জানুয়ারি মাসে পশ্চিমবঙ্গের উপমুখ্যমন্ত্রী হন তিনি। পলিটব্যুরোর সদস্য হন ২০০০ সালে। একই বছর ৬ নভেম্বর জ্যোতি বসু অবসর নিলে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসেন। রাজ্যে শুরু‘বুদ্ধযুগ’!

Buddhadeb Bhattacharjee biography

মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে থাকাকালীন বারবার বিতর্ক তৈরি হয়েছে তাঁর সরকারকে নিয়ে। তাপসী মালিক ধর্ষণ থেকে বারাসতের রাজীব দাস হত্যাকাণ্ড! পঞ্চায়েত নির্বাচনে সন্ত্রাসের অভিযোগ, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভের বদনাম, এখনকার মত সেদিনও জুটেছিল রাজ্য প্রশাসনের কপালে।

Political career of Buddhadeb Bhattacharjee

রাজ্যকে শিল্পায়নের সরণিতে এনে ফেলতে চেয়েছিলেন বুদ্ধদেব। সিঙ্গুরে টাটাদের কারখানার জন্য জমি অধিগ্রহণ করে তৎকালীন সরকার। কিন্তু, সিঙ্গুর এবং নন্দীগ্রামে ‘জোর করে’ কৃষিজমি অধিগ্রহণ ভালভাবে নেয় নি রাজ্যের মানুষ। সেই ক্ষোভে আগুন দেয় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব। এরপর একের পর এক ইস্যুতে ধাক্কা খেয়েছে ‘ব্র্যান্ড’ বুদ্ধদেবের ‘ইমেজ’। রক্তাক্ত হয়েছে জঙ্গলমহল। তাপসী মালিকের ধর্ষণ, নন্দীগ্রামে গুলি! বিতর্ক বেড়েছে ক্রমশ।

Buddhadeb Bhattacharjee achievements

ক্রমেই বাংলার শাসকদলের প্রতি অনাস্থা জন্মাতে শুরু করে রাংলার। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পরিবর্তনের পক্ষে যায় জনমত। বাম যুগের অবসান ঘটিয়ে রাজ্যে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর থেকেই নিজেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন করে নেন বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। কয়েক বছর আগেও ব্রিগেড সমাবেশের মাঠে এসেছিলেন। অসুস্থতার কারণে মঞ্চে উঠতে পারেন নি। সেদিনও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের একটা ঝলক দেখতে মানুষের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়।

Buddhadeb Bhattacharjee controversies

এরপর থেকে শারীরিকভাবে আরও ভেঙে পড়েন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়ি ও হাসপাতাল, এই দুইয়ের মধ্যেই যাতায়াত ছিল তাঁর। শারীরিক কারণে একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আবার বাড়িও ফিরে গেছেন… কিন্তু, বৃহস্পতিবার আর হলনা… বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী…

 

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের জীবনাবসান, এই সংক্রান্ত আরও খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন 📰 

আরও পড়ুন-

বুদ্ধদেবকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পাম অ্যাভেনিউতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা

গান স্যালুট দেবে রাজ্য, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রয়াণ

তাঁর ব্যক্তিত্ব তাঁকে করে তুলেছিল ‘ব্র্যান্ড বুদ্ধ’, আজীবন ‘বাবু’ই থাকলেন বুদ্ধদেব

 

Politics: Buddhadeb Bhattacharjee, former West Bengal Chief Minister, passes away at 80. His political life, marked by industrialization efforts, controversies, and leadership, leaves a significant legacy. Discover the journey of ‘Brand’ Buddhadeb.