নিজস্ব প্রতিনিধি: বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বা বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বারবার পশ্চিমবঙ্গে আইনশৃঙ্খলার অবনতির অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি করেছেন। ৩৫৫ বা ৩৫৬ ধারা জারির পক্ষে বহুবার সওয়াল করেছেন তাঁরা। কিন্তু কেন্দ্র স্পষ্ট করে দিয়েছে এমন কোনও ভাবনা তাদের নেই। বাংলায় সদ্য শেষ হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। প্রকাশিত হয়েছে ফলাফল। যথারীতি সেখানে তৃণমূলের জয়জয়কার হয়েছে। বিজেপির দাবি ব্যাপক সন্ত্রাসের কারণেই তাদের ফল খারাপ হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ভোট হবে, তাই সেখানে বিজেপির ফল গতবারের চেয়েও ভাল হবে বলে আশাবাদী রাজ্য নেতৃত্ব। কয়েক মাস আগে রাজ্য সফরে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিজেপিকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৩৫টি আসন জেতার লক্ষ্যমাত্রা দিয়ে গিয়েছেন। সেই সূত্রে ওয়াকিবহাল মহলের প্রশ্ন, এমন কি কোনও পরিস্থিতি হতে পারে যেখানে লোকসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গে ৩৫৫ ধারা জারি করে পুলিশি ব্যবস্থা অর্থাৎ শাসন দণ্ড নিজেদের হাতে তুলে নিতে চাইবেন কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব? আর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বুথে বুথে তখন ফুটবে পদ্মফুল? বিভিন্ন লোকসভা কেন্দ্রে জয়জয়কার হবে বিজেপি প্রার্থীদের?
আসলে এটা সবারই জানা যে পুলিশ প্রশাসন যার হাতে থাকে নির্বাচনে সেই দলের ফলাফল ভাল হয়। কিছু ব্যতিক্রমী ঘটনা বাদ দিলে দীর্ঘদিন ধরে এমনটাই হয়ে আসছে। বিরোধীদের অভিযোগ পশ্চিমবঙ্গে পুলিশ পুরোপুরি তৃণমূলের নিয়ন্ত্রণে থাকার কারণেই পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাদের ফল খারাপ হয়েছে। পুলিশ তৃণমূলের দলদাসে পরিণত হয়েছে, এই অভিযোগ নিয়মিত করে থাকেন বিরোধী নেতা নেত্রীরা। কিন্তু যদি পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আগামী দিনে সত্যিই পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ হয়, তখন কি পুলিশ প্রশাসন দিল্লির কথাতেই চলবে? এই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠছে। তাই রাজনীতির কারবারিদের একাংশ কটাক্ষ করে বলে থাকেন, ‘দিদির পুলিশ’ আর ‘দাদার পুলিশ’, এর মধ্যে কোনও তফাৎ নেই। শাসন দণ্ড যার হাতে থাকবে সেই বাজিমাত করবে নির্বাচনে। এমনটাই ব্যাখ্যা রাজনৈতিক মহলের।
সামনের মাসে রাজ্য সফরে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সদ্য দিল্লিতে গিয়ে শাহের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সূত্রের খবর, বাংলার আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি করেছেন সুকান্ত। যদিও প্রকাশ্যে এ ব্যাপারে তিনি কিছু বলেননি। তাই প্রশ্ন, আগামী দিনের সত্যিই কি এমন কোনও পরিস্থিতি পশ্চিমবঙ্গে তৈরি হতে পারে? যার মাধ্যমে ফায়দা তুলতে চাইবে বিজেপি? তাই লোকসভা নির্বাচনের আগে পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব এই দাবি যে করতেই থাকবেন তা নিয়ে সন্দেহ নেই।