কলকাতা: দু’বছর আগের চিত্রটা বদলালো না৷ রাজ্যপালের অধিকার নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলে পুরানো ছবিকেই নতুন রঙে আঁকল তৃণমূল কংগ্রেস সরকার৷ সময় এবং চরিত্র বদলেছে৷ কিন্তু, যা বদল হয়নি, তা হল তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ৷ রাজ্যপালের অধিকার নিয়ে তোলা প্রশ্ন৷
রবিবার সর্বদলীয় বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব রাজ্যপাল জগদীপ ধনখরের কাজকর্ম যুক্তরাষ্ট্রীয় ভাবমূর্তি নষ্ট করছে বলে অভিযোগ করেছে৷ সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের তৃণমূল বিষয়টি নিয়ে সরোব হবে বলেই মনে করা হচ্ছে৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই রাজ্যপালকে ‘বিজেপির লোক’ বলেছেন৷ লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় চান কেন্দ্রীয় সরকার ধনখরকে ডেকে এই কাজকর্মের জবাবদিহি চাক৷ প্রধানমন্ত্রী এবং সরাষ্ট্রমন্ত্রীকে তা জানানো হয়েছে৷
ঠিক দু’বছর আগেও পরিস্থিতি একই রকম ছিল৷ ২০১৭ সালের জুলাই মাসে৷ বসিরহাটে একটি গোষ্ঠী সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা চরমে৷ খবরে প্রকাশ, তৎকালীন রাজ্যপাল কেশরিনাথ ত্রিপাঠি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে টেলিফোন করে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চান৷ নিজের ক্ষোভও উগরে দেন৷ ক্ষুব্ধ মমতা বলেন, রাজ্যপাল যে ভাষাও কথা বলছেন, মনে হচ্ছে, বিজেপি-র ব্লক সভাপতি৷
ক্ষুব্ধ মমতা আরও বলেছিলেন, রাজ্যপাল যে ভাষায় কথা বলেছিলেন, ভেবেছিলাম আজকেই সব ছেড়ে দেব৷ রাজ্যপাল কেন্দ্রীয় সরকারের মনোনীত প্রতিনিধি৷ আমি মানুষের দ্বারা নির্বাচিত৷
সুতরাং, ধনখর বা ত্রিপাঠি – কেউই তৃণমূলের খুন প্রিয় ছিলেন না বা নন৷ সেই সময় রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়ান রাজ্যপাল ত্রিপাঠির কড়া সমালোচনা করেছিলেন৷ এদিনও, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, রাজ্যপাল ধনখরকে ডাকা হোক৷
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে রাজভবনে এবং নবান্নের সম্পর্কের এই অধগমন নতুন নয়৷ বাম আমলে রাজ্যপাল গোপাল কৃষ্ণ গান্ধীর সঙ্গে মহাকরণের বিভিন্ন বিষয়ে দ্বন্দ্ব লেগেছিল৷ কিন্তু, তিক্ততা মাত্রা ছাড়েনি৷
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে উদ্ধার করতে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল৷ সেই থেকেই রাজ্যের সঙ্গে বিরোধ শুরু৷ কিছুদিন আগেও হেলিকপ্টার চেয়ে পাননি তিনি৷ বিরোধ চলছে৷ রাজ্যেরও কড়া সমালোচনা করে চলেছেন ধনকর৷