পদত্যাগ করছেন সৌমিত্র খাঁ, উৎসবেও ‘গৃহযুদ্ধ’ বিজেপির অন্দরে

পদত্যাগ করছেন সৌমিত্র খাঁ, উৎসবেও ‘গৃহযুদ্ধ’ বিজেপির অন্দরে

 

কলকাতা: সামনেই ২১-এর নির্বাচন৷ বাংলা দখলের লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই ঝাঁপিয়ে পড়েছে বঙ্গ বিজেপি শিবিরে৷ কিন্তু, যত নির্বাচন এগিয়ে আসছে, ততই বিজেপির অন্দরে বাড়ছে দ্বন্দ্ব৷ এবার উৎসবের মধ্যেও থামছে না বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব৷ দেবীপক্ষে রাজ্য সভাপতির বিরুদ্ধে সরাসরি আঙুল দিয়ে যুব মোর্চার সভাপতি পদ ছাড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন সাংসদ সৌমিত্র খাঁ৷

শনিবার আচমকা বিজেপি নেতৃত্বের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ‘বিজেওআইএম ওয়েস্টবেঙ্গল অফিসিয়াল’ ছেড়ে বেরিয়ে যান বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ৷ গ্রুপ ছাড়ার আগে সাফ জানিয়ে দেন, আর তিনি যুব মোর্চা সভাপতির পদ থাকবে না৷ সৌমিত্রর গ্রুপটি ছাড়া নিয়ে মহাষ্টমীর সকালে তৈরি হয় বিতর্ক৷

সূত্রের খবর, গ্রুপ ছেড়ে যাওয়ার আগে সৌমিত্র লেখেন, ‘আজ শুভ মহাষ্টমী৷ সবাই ভালো থাকুন৷ আপনাদের সহযোগিতা পেয়েছি৷ হয়তো আমার অনেক ভুল হয়েছে৷ আর সেই কারণে দলের ক্ষতি হয়ে থাকতে পারে৷ তাই আমি ইস্তফা দেব৷’’ এরপর যুব মোর্চা থেকে বিজেপি ও মোদীর নামে জিন্দাবাদ ধ্বনিও দেন সৌমিত্র৷ কিন্তু, আচমা কেন এই সিদ্ধান্ত?

সপ্তমীর সকালে দিলীপ ঘোষ একটি লিখিত বিবৃতি দিয়ে জেলা কমিটি ভেঙে দেন৷ ষষ্ঠীর দিন যুব মোর্চা কমিটির চারজন জেলা সভাপতির নাম ঘোষণা করেছিলেন সৌমিত্র খাঁ৷ এর আগেও বিভিন্ন জেলার সভাপতির নাম ঘোষণা করা হয়েছে৷ সমস্ত জেলার সভাপতির নাম ঘোষণার পর আজ আচমকাই দিলীপ ঘোষ জানান, যুব মোর্চার পক্ষ থেকে যে জেলা কমিটি ও জেলা সভপতির নাম ঘোষণা করা হয়েছিল সেগুলি বাতিল করা হল৷ পরবর্তী ঘোষণা পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে৷ এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে সভাপতি পদেরও আর কোনও গুরুত্ব থাকল না৷

বিষ্ণপুর লোকসভার সাংসদ সৌমিত্র খাঁকে সম্প্রতি যুব সভাপতি পদে নিয়োগ করা হয়েছে৷ খাতায় কমলে রাজ্যসভাপতি দিলীপ ঘোষই তাঁকে এই পদে নিয়োগ করেছেন৷ তবে বাস্তব হল, সবটাই হয়েছে দিল্লির অঙ্গুলিহেলনে৷ যুব সভাপতি পদে দায়িত্ব নেওয়ার পর নিজের মতো কাজ শুরু করেছিলেন সৌমিত্র৷ তিনি নিজের মতো করে যুব সংগঠন তৈরি করতে চাইছিলেন বলেও দাবি৷ যে ভাবে জেলা কমিটি গঠিত হয়েছে, তাতে দিলীপবাবুর আপত্তি রয়েছে বলেই সূত্রের খবর৷ জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন বিজেপি করার পরেও অনেকে কমিটিতে স্থান পাননি৷ অনেককেই কমিটি থেকে সরানো হয়েছে৷ 

এদিকে, এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি অবহিত নন বলেই জানান সৌমিত্র খাঁ৷ তিনি জানান, দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তাঁর কোনও কথা হয়নি৷ সমস্ত জেলা কমিটি এখনও কার্যকর রয়েছে বলেই দাবি তাঁর৷ অন্যদিকে জেলা সভাপতিদের অভিযোগ, তাঁদেরকে না জানিয়েই জেলা কমিটি গঠন এবং মোর্চার জেলা সভাপতি ঘোষণা করা হয়েছে৷ ফলে দলীয় অনুশাসন অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি৷ মনে করা হচ্ছে, দিলীপের এক ঘোষণা জেলা কমিটি ভেঙে যাওয়ার কারণেই এই পদত্যাগ!   

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *