‘ইউ টার্ন’ নিচ্ছেন রাজ্যপাল? রাজ্যপালের ‘মেজাজ’ বদলে খুশি বিজেপি!

‘ইউ টার্ন’ নিচ্ছেন রাজ্যপাল? রাজ্যপালের ‘মেজাজ’ বদলে খুশি বিজেপি!

নিজস্ব প্রতিনিধি: হঠাৎই খবরের শিরোনামে রাজ্যপাল তথা রাজভবন। শনিবার পশ্চিমবঙ্গের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও পঞ্চায়েত নির্বাচন সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে রাজভবন যে বিবৃতি পেশ করেছে তা নিশ্চিতভাবে খুশি করবে না তৃণমূলকে। যদিও তৃণমূল বিষয়টি নিয়ে রাজভবনের কোনও দোষ দেখছে না। কিন্তু সেটা তো মুখের কথা, ভেতরে ভেতরে তৃণমূলের অস্বস্তি যে বহু গুণে বেড়ে গিয়েছে তা বোঝাই যায়। শনিবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে বঙ্গ বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বৈঠকের পরই সামনে এসেছে রাজভবনের কড়া বিবৃতি। যাতে জানানো হয়েছে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে সামান্যতম হিংসা বরদাস্ত করা হবে না। আর দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হবে। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে যাতে নির্বাচন হয় সেই ব্যবস্থা করতে হবে। রাজ্য জুড়ে যাতে আইনের শাসন বজায় থাকে সেদিকে নজর রাখাই যে রাজ্যপালের মূল লক্ষ্য তারও উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে।

হঠাৎ করে রাজ্যপাল কেন এমন বললেন তার কাটাছেঁড়া করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে শাসক দল তৃণমূল। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন, তার আগে রাজ্যপালের এমন পর্যবেক্ষণ স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূলকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা পশ্চিমবঙ্গের সার্বিক পরিস্থিতি দেখে এভাবেই আস্তে আস্তে ‘ইউটার্ন’ নিতে শুরু করেছেন রাজ্যপাল। তৃণমূলের আশা ছিল রাজ্যপাল যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধারাবাহিকভাবে প্রশংসা করে চলেছেন তাতে তিনি এমন কোনও বক্তব্য রাখবেন না যাতে নবান্ন অস্বস্তিতে পড়তে পারে। কিন্তু সেটা যে ভুল ধারণা ছিল তা শনিবার সন্ধ্যায় রাজভবনের বিবৃতিতেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। আর এমনটা যে হতে পারে সেই ইঙ্গিত বহু আগেই দিয়েছিল ‘আজ বিকেল’। গত ২৮ জানুয়ারির প্রতিবেদনে এই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। যেখানে বলা হয়েছিল রাজ্যপাল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আস্থা অর্জন করলেও তাঁকে যে এমন ভূমিকাতেই সব সময় দেখা যাবে তা বলা যায় না। পরিস্থিতির বিচারে তিনি কড়া বার্তা দিতে পারেন, এমন সম্ভাবনার কথা প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছিল। আর বাস্তবে সেটাই হয়েছে।

রাজ্য বিজেপি সভাপতির সঙ্গে বৈঠকের পর সন্ধ্যায় রাজভবন থেকে যে বিবৃতি প্রকাশ করা হয় তাতে আরও বলা হয়েছে, “পশ্চিমবঙ্গে দু’মাস হল এসেছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। দেশের সংবিধান রক্ষা করাই তাঁর মূল লক্ষ্য। আইনের শাসন বজায় রাখার পাশাপাশি বাংলার মানুষের যাতে ভাল হয় সেদিকে তাঁর নজর থাকবে।” এখানেই শেষ নয়, বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার ক্ষেত্রে যথাসময়ে কার্যকরী ও উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। আর রাজ্যপালের এই অবস্থান নিয়েই রাজ্য রাজনীতিতে জল্পনা তুঙ্গে। তবে কি কিছুটা দেরিতে হলেও পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের পথেই হাঁটতে চলেছেন সি ভি আনন্দ বোস? এই চর্চা নতুন করে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠল পঞ্চায়েত নির্বাচনে আগে। স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যপালের এই ভূমিকায় খুশি বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের আশা এবার বিভিন্ন ইস্যুতে ধারাবাহিকভাবে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে দেখা যাবে রাজ্যপালকে। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করার জন্য রাজ্যপাল এখন থেকেই যে মনোভাব ব্যক্ত করেছেন তা হঠাৎই রাজ্য রাজনীতিতে অন্যতম আলোচিত বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিষয়টি কোন দিকে মোড় নেয় এখন সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *