নয়াদিল্লি: বিজেপির যুব মোর্চার নবান্ন অভিযান এবং তারপর সাংসদদের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের বিরুদ্ধে স্বাধীকার ভঙ্গের অভিযোগ আনল যব মোর্চা। সোমবার লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লার সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ দায়ের করল যুব মোর্চার প্রতিনিধিদল। এদিন প্রতিনিধি দলে ছিলেন যুব মোর্চার সর্বভারতীয় সভাপতি তেজস্বী সূর্য, সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো।
লোকসভার অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করার পর সাংবাদিক সম্মেলনে তেজস্বী যাদব বলেন, “শান্তিপূর্ণ মিছিলে লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাসের সেল ছোঁড়া হয়েছে.ছাদ থেকে তাজা বোমা ছুঁড়েছে পুলিশ, আমাদের দলের ৫০০ জনেরও বেশি কর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে”। তিনি বলেন, “সেদিন সন্ধ্যায় তিনজন সাংসদ নিশীথ প্রমাণিক, জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো এবং আমি জোঁড়াসাঁকো থানায় এফআইআর দায়ের করতে যাই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে,”। যুব মোর্চার সভাপতির অভিযোগ, আড়াই ঘণ্টা বসিয়ে রাখার পরেও, এফআইআর গ্রহণ করেনি পুলিশ, পাশাপাশি “সাধারণ মানুষের আওয়াজ তুলে ধরে এফআইআর দায়ের করতে যাওয়া তিনজন সাংসদকে শারিরীকভাবে হেনস্থা করা হয়েছে এবং সেই সময় আমাদের কর্মীদের হেনস্থা করা হয়েছে, অসংসদীয় শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে এবং শেষপর্যন্ত এফআইআর দায়ের করা হয়নি৷”
তাঁর আরও অভিযোগ, শারিরীক হেনস্থার শিকার হয়েছেন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, “এই সমস্ত ঘটনায় একটা বিষয়ই প্রমাণিত হয় যে, পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। পুলিশ আধিকারিকদের সংবিধানসম্মত কাজ করা উচিৎ, তার জায়গায় থানাগুলি তৃণমূলের দলীয় কার্যলয় হিসেবে কাজ করছে৷” স্বাধীকার ভঙ্গের নোটিশে নামোল্লেখ করা হয়েছে ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ সুধীর কুমার নীলকান্তম, জোড়াসাঁকো থানার ওসি মুকুলরঞ্জন ঘোষ, হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের কমিশনার কুণাল আগরওয়াল এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মার। থানায় এসিপি পদ মর্যাদার আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক চলাকালীন তাঁর ফোন কেড়ে নেওয়ারও অভিযোগ করেন তেজস্বী।
রাজ্য সরকারের সমালোচনায় মুখর হন পুরুলিয়ার সাংসদ তথা যুব মোর্চার নেতা জ্য়োতির্ময় সিং মাহাতোও। উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিং জং উং এর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, দলের সাংসদদের হত্যার চেষ্টার পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি। বিজেপি যুব মোর্চার সবাপতির সাংবাদিক সম্মেলনের পরেই গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানায় তৃণমূল কংগ্রেস। দলের সাংসদ নুসরত জাহান ট্যুইট করেন, “এই ধরণের ফালতু মন্তব্য না করে আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ান। দেখুন আসল ফ্যাসিবাদী কে। সেটা আপনাদের নেতা যিনি ২০১৪ থেকে ঘৃণ ছড়াচ্ছেন এবং স্বৈরাচারিতা চালাচ্ছেন৷” নবান্ন অভিযান নিয়ে বিজেপির নিশানায় যখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সেই সময় সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে নাম না করে আক্রমণ শানাল তৃণমূল কংগ্রেস।