২০২৩-এ আরও শক্তি বাড়িয়েছে বিজেপি, একাধিক উল্লেখযোগ্য বিল পাস, কংগ্রেস আটকে দক্ষিণে!

২০২৩-এ আরও শক্তি বাড়িয়েছে বিজেপি, একাধিক উল্লেখযোগ্য বিল পাস, কংগ্রেস আটকে দক্ষিণে!

নয়াদিল্লি: ফেলে আসা বছরে রাজ্য তথা কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে বহু উথালপাথাল ঘটেছে। যে সমস্ত ঘটনা বারবার খবরের শিরোনামে এসেছে। একটা বিষয় স্পষ্ট লোকসভা নির্বাচনের আগে আরও শক্তি বাড়িয়ে নিতে পেরেছে বিজেপি। হিন্দি বলয়ের তিনটি রাজ্য ছত্তিশগড়, রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে বিপুল জয় পেয়ে সরকার গড়েছে বিজেপি। ৩ ডিসেম্বর ফল প্রকাশ হয়।

এর মধ্যে দুটি রাজ্যে কংগ্রেস  ভাল ফলের আশা করলেও তারা ধরাশায়ী হয়েছে। তিনটি রাজ্যেই জয়ের মূল কারিগর নিঃসন্দেহে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ‘মোদির গ্যারান্টি’ এই প্রচারেই কংগ্রেস নির্বাচনে হালে পানি পায়নি। এই নির্বাচনকে লোকসভার সেমিফাইনাল হিসেবে দেখা হচ্ছিল। সেখানে বাজিমাত করল বিজেপি। অন্যদিকে মিজোরামে ক্ষমতায় এসেছে জেডপিএম। এছাড়া ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে জিতে ফের ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হয় সেখানে। ৬০ আসন বিশিষ্ট ত্রিপুরায় বিজেপি একাই ৩২ আসনে জয় পেয়েছে। তাদের জোটসঙ্গী আইপিএফটি পেয়েছে একটি আসন। তবে ত্রিপুরায় উত্থান হয়েছে তিপ্রা মোথা দলের। তারা ১৩টি আসনে জয়লাভ করেছে। পুনরায় মুখ্যমন্ত্রী  নির্বাচিত হয়েছেন মানিক সাহা।

ত্রিপুরা নির্বাচনে তৃণমূলের ভরাডুবি হয়েছে। এছাড়া নাগাল্যান্ড ও মেঘালয়েও সরকার করেছে এনডিএ জোট। অন্যদিকে কংগ্রেস যেন দক্ষিণ ভারত কেন্দ্রিক দলে পরিণত হয়েছে। তামিলনাড়ুতে তারা ক্ষমতায় রয়েছে ডিএমকে-র জোটসঙ্গী হয়ে। আর গত মে মাসে কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করে কংগ্রেস। এছাড়া তেলেঙ্গানাতেও ক্ষমতায় এসেছে কংগ্রেস। এগুলির বাইরে কংগ্রেস শুধু ক্ষমতায় রয়েছে হিমাচল প্রদেশে।

এদিকে কেন্দ্র থেকে বিজেপিকে হটাতে গত জুলাই মাসে বেঙ্গালুরুতে আটাশটি বিরোধী রাজনৈতিক দল এক ছাতার তলায় এসে একটি জোট গঠন করে। তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইন্ডিয়া’। সেই জোট লোকসভা নির্বাচনে কতটা প্রভাব ফেলবে তা সময় বলবে। আর টাকা ও মূল্যবান উপহার নিয়ে লোকসভায় প্রশ্ন করার অভিযোগে তৃণমূলের মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ খারিজ হয়ে গিয়েছে গত ৮ ডিসেম্বর। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা সেদিন মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজ করেন। সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন মহুয়া। এর পাশাপাশি শীতকালীন অধিবেশনে লোকসভা ও রাজ্যসভা দুই কক্ষ মিলিয়ে ১৪৬ জন বিরোধী সাংসদকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ভারতের ইতিহাসে এই প্রথম একটি অধিবেশনে এতজন বিরোধীকে সাসপেন্ড করা হল। গ্যাস হামলা কাণ্ডে সংসদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিবৃতি চেয়ে টানা বিক্ষোভ দেখানোর জেরেই তাঁদের সাসপেন্ড করা হয়েছে।

২০২৩-এ সংসদে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বিল পাশ করিয়েছে কেন্দ্র। লোকসভা ও রাজ্যসভায় ঐতিহাসিক মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ হয়েছে। ইতিমধ্যেই বিলে স্বাক্ষর করেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। এছাড়া চলতি মাসেই লোকসভা ও রাজ্যসভায় পাশ হয়েছে ন্যায় সংহিতা বিল। নতুন ফৌজদারি আইনের অন্তর্গত এই তিনটি বিল সমাজে অপরাধ কমাতে সাহায্য করবে বলে মনে করছে কেন্দ্র।
সব মিলিয়ে এটা বলাই যায় লোকসভা নির্বাচনের আগে নিজেদের শক্তি আরও বাড়িয়ে নিয়ে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে অবস্থান আরও মজবুত করতে পেরেছে বিজেপি। এই আবহের মধ্যে ২২ জানুয়ারি রাম মন্দিরের উদ্বোধন হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত ধরে। এরপর অন্তর্বর্তী বাজেটের পর ঘোষিত হবে লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ। সেখানে অপ্রতিরোধ্য বিজেপিকে বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোট থামাতে পারে কিনা সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *