নয়াদিল্লি: সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে এবার গেরুয়া ঝড় উঠবে না, এমন ইঙ্গিতই মিলছে নানা রাজনৈতিক বিশ্লেষণে। ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা সংশয় প্রকাশ করেছেন, উত্তর প্রদেশে বিজেপি’র জয় নিয়ে। দেশের বৃহত্তম রাজ্যে গেরুয়া শিবিরের অবস্থা যে বেশ টলমলে, তা আগেই অনুমান করা গিয়েছে। এবার লোকসভায় আসন সংখ্যার নিরিখে দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজ্য মহারাষ্ট্রের নামও সেই তালিকাভুক্ত হলো।
সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি এবং তার জোট সঙ্গী শিবসেনা মহারাষ্ট্রে বড়সড় ধাক্কা খেতে চলেছে। গ্রামীণ দুর্দশা, বেকারত্ব এবং খরা রোধে গাফিলতিই বিজেপি’কে চাপে ফেলেছে। ফলে গ্রাম ভারতের ভোট এবার বিজেপি’র বিরুদ্ধে যাবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কারণ দেশের ১৩০ কোটি মানুষের দুই-তৃতীয়াংশই মফস্বল এবং গ্রামের বাসিন্দা। তাই গ্রাম ভারত মুখ ফেরালে বিজেপি’কে পর্যুদস্ত হতেই হবে। মহারাষ্ট্রেও যার ব্যতিক্রম হবে না। বাণিজ্য নগরী মুম্বাই সহ মহারাষ্ট্রের সর্বত্রই বিজেপি বিরোধী হাওয়া চলছে— অভিমত বিশ্লেষকদেরই। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-শিবসেনা জোট রাজ্যের ৪৮টি আসনের ৪১টি’তে জয় পেয়েছিল। কিন্তু এই লোকসভা নির্বাচনে সেই আশা একেবারেই নেই। কৃষক আত্মহত্যা, কৃষকদের আয় কমে যাওয়া যার অন্যতম কারণ। সঙ্গে অবশ্যই বেকারত্ব। মহারাষ্ট্রের মারাঠওয়াড়া বারবার কৃষক আত্মহত্যার ঘটনায় শিরোনামে এসেছে। ঋণ মকুবের দাবিতে কৃষকরা পথে নেমেছেন। কিন্তু সরকার বরাবরই নীরব। বিদেশ সফরে ব্যস্ত থাকা প্রধানমন্ত্রী অবসরকালে দেশে ফিরলেও কৃষকদের, দেশের দরিদ্র মানুষদের দিকে তাকানোর সময় পান না। তাই পালটা জবাব দিতে এবার প্রস্তুত দুর্দশাগ্রস্ত সেইসব মানুষেরা। পুলওয়ামায় সন্ত্রাসবাদী হামলায় জওয়ানদের মৃত্যু, পাকিস্তানের মাটিতে ভারতের বিমান হানায় সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার দাবিতে মোদী এবং তাঁর দোসররা ফের ভোটবাক্স ভরানোর চেষ্টা চালালেও কর্মসংস্থানের ঘাটতি, অনাহার, অপুষ্টির কাছে হার মানতে হবে তাঁকে, তেমনই মনে করা হচ্ছে।
মুম্বাইয়ের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ প্রতাপ আসবে বললেন, ‘‘এইসব ঘটনাকে ভিত্তি করে মার্চ মাসেও বিজেপি সামান্য এগিয়েছিল বলে মনে হচ্ছিল। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহে বিরোধীরা স্বর চড়িয়েছে বেকারত্ব, শস্যের দাম নিয়ে। যা ভোটারদের মধ্যে প্রভাব ফেলতে শুরু করে দিয়েছে।’’