পুরসভায় নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ এনে সরব বিজেপি! বড় ভুল করছে না তো বিজেপি?

পুরসভায় নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ এনে সরব বিজেপি! বড় ভুল করছে না তো বিজেপি?

 

কলকাতা: একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসছে। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির পাশাপাশি কয়লা পাচার ও গরু পাচার কাণ্ড রীতিমতো শোরগোল ফেলে দিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। বলা যায় আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন ও আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য রাজনীতি আবর্তিত হচ্ছে এই সমস্ত দুর্নীতির ঘটনা নিয়ে। সেই তালিকায় নতুন সংযোজন পুরসভাগুলিতে নিয়োগে দুর্নীতি। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেরা করেই ব্যবসায়ী অয়ন শীলের খোঁজ পান কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা।

 

এরপর তাঁকেও গ্রেফতার করা হয়। সেই সূত্রে মিলেছে বহু চাঞ্চল্যকর তথ্য। তার অন্যতম হল অন্ততপক্ষে ৬০টি পুরসভায় পাঁচ হাজার লোককে নিয়োগ করা হয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে। আর এই বিষয়টি নিয়ে নতুন করে আসরে নেমেছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। এই ইস্যুতে কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরিকে চিঠি দিয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। পুরসভায় দুর্নীতির তদন্ত করার জন্য যাতে পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল পাঠানো হয় সেই আবেদন জানিয়েছেন তিনি। যদিও রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের দাবি স্বচ্ছতার সঙ্গেই কাজকর্ম হচ্ছে। অন্যদিকে সুকান্ত রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি দেশের সমস্ত পুরসভাকে টাকা দেয় কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রক। সেখানে লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে যেভাবে নিয়োগ হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বহু পুরসভায়, তার জন্য উপযুক্ত তদন্ত দরকার। তাই রাজ্য বিজেপি কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল পাঠানোর দাবি করছে। এমনটাই চিঠিতে লিখেছেন সুকান্ত।

 

কিন্তু ওয়াকিবহল মহল মনে করছে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি, গরু পাচার ও কয়লা পাচার  কাণ্ডের অভিঘাত অনেক বেশি পড়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে রাজ্য বিজেপি যদি পুরসভাগুলিতে দুর্নীতির অভিযোগে বেশি সরব হতে শুরু করে, তাহলে মূল অভিযোগের ক্ষেত্রগুলি পিছনে পড়ে যাবে না তো?

 

গরু পাচার, গয়লা পাচার এবং শিক্ষক নিয়োগে কয়েক হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে বলে তদন্তকারীরা মনে করছেন। তার তুলনায় পুরসভায় নিয়োগ নিয়ে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে তা কিছুই নয়। এখনও পর্যন্ত ৫০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর। অর্থাৎ এটা স্পষ্ট দুর্নীতির ব্যাপকতা বা বিশালত্ব কয়লা, গরু এবং শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বহু গুণে বেশি। তাই বিজেপি যেভাবে নতুন করে পুরসভায় নিয়োগ ইস্যুতে ময়দানে নামছে, সেটা তাদের আন্দোলনের নিরিখে ‘ভুল স্টেপ’ হয়ে যাচ্ছে না তো? এই প্রশ্ন তুলছেন রাজনীতির কারবারিদের একাংশ। এই পরিস্থিতিতে সুকান্ত মজুমদারের চিঠির ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রক কোনও পদক্ষেপ করে কিনা এখন সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × five =