কংগ্রেস শূন্য করেছিল, তৃণমূল নিশ্চিহ্ন করবে- সেদিনও দেখতে হবে বিমান-সূর্যদের

কংগ্রেস শূন্য করেছিল, তৃণমূল নিশ্চিহ্ন করবে- সেদিনও দেখতে হবে বিমান-সূর্যদের

দেবময় ঘোষ: সিপিএম দোয়া, দয়া, দক্ষিণ্যে বাঁচতে চায়। বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র আর কোনও রাস্তা দেখতে পাচ্ছেন না। বিজেপি প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বলতে বিশেষ অসুবিধা নেই। কিন্তু, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করতে ঢোক গিলতে হচ্ছে। আসেপাশে দেখে নিতে হচ্ছে। ২০১১ সাল থেকে আজ … সিপিএমের পর্যায়ক্রমিক অধঃপতনকেই ‘ঐতিহাসিক’  বলা যায় … বলা উচিত … ।

একদা রাজ্যের শাসকদল ২০১১ সালে ক্ষমতা হারিয়ে প্রধান বিরোধী দলে পরিণত হয়। দলের বৃদ্ধতন্ত্র এক সময় নতুন নেতাদের সামনে আসতে দেয়নি। সে পাপের ফল ভুগতে হয় পার্টিকে। সাহস ছিল না, চিন্তা-চেতনায় ছিল না উদ্ভাবনী শক্তি। একা লড়াই করার ক্ষমতা হারায় সিপিএম। কংগ্রেসের হাত ধরে প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদাও হারায়। আজ পার্টি আক্ষরিক অর্থেই শূন্য। সেই সময় সূর্য-বিমানবাবুরা বলতে লাগলেন, বিজেপি এবং তৃণমূল এক নয়। অস্তিত্ব বাঁচিয়ে রাখতে এতদিন কংগ্রেসই যথেষ্ঠ ছিল না … এবার তৃণমূলকেও প্রয়োজন। এই এলিট-বুড়োরা টিভি-ফেসবুকে ম্যানিফেস্টো বোঝাতে গিয়ে এটা ভুলে গেলেন ৮০ হাজার বুথে দাঁড়াবার মত লোক নেই পার্টিতে। কোনও পার্টির দয়া দক্ষিণ্যে অস্তিত্ব থাকবে কী?

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য এটাই সেরা সময়। তৃণমূল কংগ্রেস জনতাকে সর্বাত্মক ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করছে, সিপিএম মৃত। কিন্তু, তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে সিপিএম’কে খুঁজে নেওয়া যেতে পারে। এই নিষ্পাপ অথচ অপরূপ ফাঁদে পা-রেখেছেন হাজার হাজার বামপন্থী মানুষ। আদর্শ গত ভাবে তারা আর এস এস-বিজেপির ধর্মীয় রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে চান। তার উপর, বঙ্গ বিজেপির অবাঙালি দিল্লীবাসী ‘গুরু’র আরও সুবিধা করে দিয়েছি তৃণমূলকে। সেক্ষেত্রে, যে নেত্রী সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মোদির বিরুদ্ধে চেঁচান – তিনিই তো সেরা বামপন্থী – তাই নয় কি? কিন্তু, তারা ভুলে গেলেন – তৃণমূল কংগ্রেস পার্টির জন্ম এবং প্রতিষ্ঠার পিছনে কৃতিত্ব দাবি করতে পারে আর এস এস – বিজেপি। সম্প্রতি, ‘নতুন সিপিএম’ হতে ত্রিপুরার পৌঁছে গিয়েছে তৃণমূল। সময় মেপে – দারুণ এক সন্ধিক্ষণে বিমান-সূর্যকে বলতে শোনা যাচ্ছে – বিজেপি-তৃণমূল এক নয়। বিজেমূল এক মস্ত ভুল।

কেউ কী কখনও ভেবে দেখল – এই ‘বামপন্থী’ মমতার মুখে কেন এত ফেডারেল, ফেডারেল? প্রায় ৩০ শতাংশ মুসলিম ভোট ( সংখ্যা বিতর্কিত … বিতর্ক চলে।) যদি তৃণমূলের পকেটে না ঢোকে তবে মমতা কতটা বামপন্থী থাকতেন? সেক্ষেত্রে একদা যাকে পশ্চিমবঙ্গে ডেকে এনে জায়গা দিয়েছিলেন সেই বিজেপির সঙ্গে এতটা শত্রুতা থাকত? বিমান-সূর্য বাবুদের ভেবে দেখার সময় নেই। রাজনীতির বাস্তবজ্ঞান তারা হারিয়েছেন। বহুদিন পাবলিক-পালস বুঝতে পারেন না। সিপিএম দোয়া, দয়া, দক্ষিণ্যে বাঁচতে চায়। কংগ্রেস শূন্য করেছিল, তৃণমূল নিশ্চিহ্ন করবে – সেদিনও দেখতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *