কলকাতা: ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতাকে ইস্যু করে মিছিল করেছে বিজেপি৷ সেই মিছিলে জলকামান, লাঠি চালিয়ে পুলিশ অফ একবার পরিষ্কার করে দিয়েছে যে বিরোধীদের অতি সাহসী হয়ে সরকারি দফতর গুলিতে অভিযান (এক্ষেত্রে কলকাতা পুরসভা) কড়া হাতে দমন করা হবে৷ ওই ঘটনায় সাধারণ মানুষেরও যারপরনাই ভোগান্তি হয়েছে৷
বিজেপির কেন রাস্তায় নেমে এই অসহিষ্ণু আন্দোলন করতে গেল, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন, রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ৷ রাজ্যের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এবং বিভিন্ন জেলায় মৃত্যু-মিছিল৷ এই পরিস্থিতিতে সরকার থেকে সমুচিত উত্তর না পেয়েই বিজেপির এই সিদ্ধান্ত৷ তবে গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, তারা চিত্তরঞ্জন এভেনুয়ের মোড়ে অবস্থান বিক্ষোভ করবে বলেই স্থির করেছিলেন৷ কিন্তু, পুলিশ জলকামান চালায়৷ এক্ষেত্রে কলকাতা পুলিশের যুক্তির গুরুত্ব রয়েছেই, তা বিজেপি অস্বীকার করতে পারে না৷
কারণ, মিছিলের একটি অংশ পুলিশের ব্যারিকেট ভেঙে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে৷ সেই সময় পুলিশ জলকামান চালাতে বাধ্য হয়৷ ব্যারিকেট ভাঙলেই পুলিশ লাঠি চালাতে শুরু করে৷ কিন্তু, প্রশ্ন উঠেছে, এতে সাধারণ জনতা কি পেল? ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে অভিযান না চালিয়ে কলকাতা পুরসভা অভিযান চালাল বিজেপি৷ এতে ডেঙ্গু রুগীদের কী উপকার হলো? যে দল ২০২১ সালে ক্ষমতায় আসতে চাইছে, তারা কী সদর্থক রাজনীতি করতে পারত না? মোদী সরকারের স্বচ্ছ ভারত অভিযানের শরিক হয়ে এলাকায় এলাকায় জঞ্জাল সাফাইয়ে মন দিতেন বিজেপি কর্মীরা৷ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা প্রশ্ন তুলেছেন৷
অন্যদিকে, বিজেপির অভিযোগ ১০০ শতাংশ সত্য৷ রাজ্যের বিভিন্ন দিকে ডেঙ্গুতে ছেয়ে গিয়েছে৷ সুতরাং, এটি শুধুমাত্র বিজেপির অজুহাত নয়৷ শুধু এই বছরই নয়, গত কয়েক বছর রাজ্যে ডেঙ্গু মহামারি৷ সদর্থক কিছুই করতে পারে নি রাজ্য সরকার৷
রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ, সময়মত এলাকায়-এলাকায় ব্যবস্থা নিতেই পারেনি রাজ্য সরকার৷ ডেঙ্গুতে ‘অসময়ে মৃত্যু’ বেড়েছে৷ উপরন্তু, হাদপাতাল গুলিতে চিকিৎসার ‘প্রটোকল’ পৌঁছায়নি৷ পতঙ্গ বাহিত রোগে এই রাজ্যে কতজনের মৃত্যু হয়, সেই তথ্যও নাকি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে যায়না৷
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা অনেকেই বলছেন, রাজ্য সরকারের সব কিছুতেই ‘ডোন্ট কেয়ার’ মানসিকতা এবং অন্যতম বিরোধী হিসাবে বিজেপির জঙ্গি রাজনীতি রাজ্যকে পিছিয়ে দেবে৷ কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, বিজেপির ‘ব্রেনে’ ডেঙ্গু রয়েছে৷ কিন্তু, যা মনে হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিই অসুস্থ৷ ডেঙ্গু আক্রান্ত৷