আজ বিকেল: লোকসভা ভোটের পর থেকেই রাজনৈতিক হিংসায় জ্বলছে ভাটপাড়া কাঁকিনাড়া। বারাকপুর শিল্পাঞ্চলের বাহুবলী নেতা অর্জুন সিং এখন বিজেপির লোক। তাই এলাকা দখলের লড়াইয়ে মরিয়া শাসক বিকোধী দুই দলই। প্রতিদিনই সেখানে ফাটছে বোমা, চলছে গুলি। আহত নিহতের সংখ্যা বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। পুলিশের সামনেও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে দুষ্কৃতীদের দল। কোনওভাবেই যেন ভাটপাড়াকে বাগে আনতে পারছে না তৃণমূল সরকারে প্রশাসন। তাইতো অশান্তি এড়াতে আজই ছিল ভাটপাড়ার নতুন থানার উদ্বোধন। সেখানেও চলল গুলি মৃত্যু হল দুজনের, আহত পাঁচ। থানার উদ্বোধন স্থগিত রেখে কলকাতায় ফিরে গেলেন ডিজি বীরেন্দ্র।
গোটা এলাকার দায়িত্বভার গিয়ে পড়ল বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের তন্ময় রায়চৌধুরির উপরে। নবান্নে বসল জরুরি বৈঠক। সমাধান মিলল না, এরই মধ্যে গোটা ঘটনার জন্য বিজেপি শিবির মুখ্যমন্ত্রীর দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ছেড়ে দেওয়ার পাত্রী নন, ভাটপাড়াকে শান্ত করতে বারাকপুরের কমিশনারকে সরিয়ে দিলেন একেবারে জরুরি ভিত্তিতে। শূন্যপদে আসছেন দার্জিলিংয়ের আইজিপি মনোজ বর্মা। একইভাবে ডিআইজি সিআইডি হয়ে গেলেন তন্ময় রায়চৌধুরি। বলা বাহুল্য, নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই এই রদবদলের খেলা চলছে। নির্বাচন কমিশনের হাতে দায়িত্ব আসার পর রাজ্যের বেশ কিছু পুলিশ কর্তাকে সরিয়ে দেয় কমিশন। কলকাতার পুলিশ কমিশনার পদ থেকে অনুজ শর্মাকে সরিয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল তথা সিনিয়ার আইপিএস অফিসার রাজেশ কুমারকে সেই পদে বসানোর নির্দেশ দেয় কমিশন। সেই সঙ্গে বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার পদ থেকে জ্ঞানবন্ত সিংকে সরিয়ে নতুন কমিশনার করা হয় নটরাজন রমেশ বাবুকে। বদলে দেওয়া হয়, ডায়মণ্ড হারবার ও বীরভূমের পুলিশ সুপারকেও। ডায়মণ্ড হারবারের পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগানকে সরিয়ে ওই পদে কলকাতা আর্মড পুলিশের ডেপুটি কমিশনার শ্রীধর পাণ্ডেকে বসায় কমিশন। অন্য দিকে, বীরভূমের পুলিশ সুপার পদ থেকে শ্রীশ্যাম সিংকে সরিয়ে সেখানে বসানো হয় বিমানবন্দর এলাকার ডেপুটি কমিশনার আভান্নু রবীন্দ্রনাথকে। সরিয়ে দেওয়া হয় আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার অফিসার ইন-চার্জ কৌশিক দাসকে।
এদিকে ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই উত্তপ্ত গোটা বারাকপুর শিল্পাঞ্চল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কমিশনার হিসেবে যোগ দেন ডি পি সি। কিন্তু কয়েকদিন পরে তাঁকে সরিয়ে নিয়োগ করা হয় তন্ময় রায়চৌধুরিকে। সূত্রের খবর, ব্যারাকপুরের প্রশাসনিক অবনতি হওয়াতেই এই দায়িত্ব পরিবর্তন করা হয়। তন্ময় রায়চৌধুরি যেহেতু আগে উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার ছিলেন, সুতরাং তাঁর পরিচিত এলাকার পরিস্থিতি তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন, এমনটাই ভাবা হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও পরিস্থিতি বদলায়নি।