কলকাতা: কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কলকাতায় এসে ‘আর নয় অন্যায়’ প্রচারের সূচনা করবেন৷ এই প্রচারের মূল লক্ষ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের অনৈতিক কাজকর্ম তুলে ধরা৷ তবে, উল্লেখ্য ৪৮ ঘণ্টা আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ডায়াসে বসে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সেরে এসেছেন অমিত৷ এমনকি, পূর্বাঞ্চলীয় অন্তরাজ্য পরিষদ বা ইস্টার্ন জোনাল কাউন্সিলের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা যে ভালো, সে বিষয়ে আলোচনা হয়৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সামনেই রাজ্যের আইন শৃংখলার পরিস্থিতি প্রশংসা পেয়েছে৷ এমনকি, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে এক টেবিলে বসে মধ্যাহ্নভোজনও করেছেন৷ কিন্তু, সেই সৌজন্যতাকে এবার পিছনে ফেলে বাংলা সফরে আসছেন অমিত শাহ৷
জানা গিয়েছে, নারগিক আইনের সমর্থনে শহিদ মিনারে বেলা একটা নাগাদ সভার করেন অমিত শাহ৷ সন্ধ্যায় বসবেন সাংগঠনিক বৈঠকে৷ কলকাতা সফর শুরু করার আগে কালীঘাটে পুজো দেবেন অমিত শাহ৷ কালীঘাটে পুজো দেওয়ার পর দুপুরে সভা, সন্ধ্যায় রাজারহাটে হোটেলে দলের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে বৈঠক করার কথা রয়েছে অমিত শাহের৷ অমিত শাহের এই কর্মসূচি ঘিরে গেরুয়ায় শিবিরে চলছে চূড়ান্ত প্রস্তুতি৷
অন্যদিকে পাল্টা প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বাম ছাত্র যুব সংগঠন৷ ‘মোদি-দিদি’ আঁতাতের তত্ব সামনে রেখে রবিবার অমিত শাহের সফর ঘিরে বিক্ষোভের কর্মসূচিতে নামছে বামেরা৷ জানা গিয়েছে, বিমানবন্দর, শহিদ মিনার, রাজারহাট-সহ কলকাতার ৯টি জায়গায় বিক্ষোভ দেখাবে বামফ্রান্ট৷ মহম্মদ সেলিম আগেই জানিয়েছেন, ছাত্র-যুবরা ১ মার্চ পথে নামলেন৷ সাড়ে দশটায় কোয়েস্ট মল এলাকায় বামেদের বিক্ষোভ কর্মসূচি রয়েছে৷ এই এই কর্মসূচিকে পাল্টা হুমকি দিয়েছেন বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা৷ বাঁধা পেলে চুরমার করে দেওয়া হবে বলেও আগাম হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি৷
অন্যদিকে, পূর্বাঞ্চলীয় অন্তরাজ্য পরিষদ বা ইস্টার্ন জোনাল কাউন্সিলের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা যে ভালো, সে বিষয়ে আলোচনা হয়৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সামনেই রাজ্যের আইন শৃংখলার পরিস্থিতি প্রশংসা পেয়েছে৷ এই পরিস্থিতিতে অনেকেই বলছেন, বিজেপির 'আর নয় অন্যায়' প্রচারের কোনও গুরুত্ব থাকে না। কারণ, শাহ যার বিরুদ্ধে এই প্রচার শুরু করতে চলেছেন তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকেই প্রশংসা পেয়েছেন। সেক্ষেত্রে, এই প্রচার জন্মলগ্নেই গুরুত্বহীন হয়ে গিয়েছে।
বিজেপি সূত্রে খবর, আগামী ৬ মাস এই প্রচার চলবে। কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে 'ক্ষোভ পত্রে' সই সংগ্রহ করবেন। এছাড়া , হোয়াটস এপ, এসএমএস, সোশ্যাল মিডিয়া, মিসড কল করেও মমতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানাতে পারবেন বঙ্গবাসীরা। প্রশ্ন একটাই, এত সব কিছু করেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নিজেদের বিশ্বাস যোগ্যতা প্রমান করতে পারবে কী রাজ্য বিজেপি। মোদী সরকার দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর এই নিয়ে দ্বিতীয়বার অমিত শাহ'র মুখোমুখি হয়েছেন মমতা। কংগ্রেস-সিপিএম সেটিংয়ের ছক দেখছেন।