বোলপুর: কে বলেছে তিনি নজরবন্দি অবস্থা আছেন৷ অন্তত সোমবার সাড়ে ১১টা নাগাদ তাঁকে দেখে মনেই হবে না তিনি কমিশনের দেয়ার শাস্তি কবলে রয়েছেন৷ সোমবার স্বমহিমায় বুথে গিয়ে ভোট দিলেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল৷ বাইক মিছিল করে ভোটগ্রহণ করে এসে ভোট দেন তিনি৷ ভোট শেষে দিলেন দাওয়াই৷
এদিন ভোট শেষে সংবাদ মাধ্যমে অনুব্রত মন্তব্য, ‘‘১০০ শতাংশ শান্তিপূর্ণ ভোট হচ্ছে৷ কোথাও কোনও সন্ত্রাস নেই৷ নকুলদানা দিয়ে ভোট হচ্ছে৷ কর্মীরা ভোট করাচ্ছেন৷ সমস্ত দাওয়াই মেনে ভোট চলছে৷’’ নির্বাচন কমিশনের নজরদারিতে থাকলেও তিনি আজ সকালে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র যান অনুব্রত৷ দলীয় কর্মীদের বাইকে চেয়ে ভোট দেন তিনি৷ এদিন অনুব্রতর সঙ্গে ছিল অন্তত ২০-২৫টি বাইক৷ বাইকে উঠলেও নেননি কোনও হেলমেট৷ বুথে এসে লাইনে দাঁড়ানোর সৌজন্যতাও দেখাননি তিনি৷ বুথে ঢুকে সরাসরি ইভিএম মেশিনের দিকে চলে যান তিনি৷ ভোট দিয়ে বেরিয়ে এসে জানান, তাঁর দেওয়া দাওয়াই অনুযায়ী কাজ হচ্ছে৷
ভোট দেওয়ার পর তিনি বলেন, ‘‘ভোটগ্রহণ চলছে শান্তিপূর্ণ ভাবেই। খুব ভাল ভোট হচ্ছে। নজরবন্দি করলেও তাঁর কিছু যায় আসে না।’’ নজরবন্দির ফলে তাঁর ফোনও জমা দিতে হয়েছে। এ দিন ভোট দেওয়ার পর অবশ্য অনুব্রতর নির্লিপ্ত জবাব, ‘‘একটা ফোন গিয়েছে তো কী হয়েছে, হাজারটা ফোন আছে।’’
কমিশন তাঁকে বন্দি করলেও এই বন্দিত্বকে পাত্তা দিচ্ছেন না বীরভূমের অবিসংবাদী তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। সাফ জানিয়েছেন, তাঁকে বন্দি করা যায় না। গতকাল কমিশনের নির্দেশে ফোনটিও জমা দিয়ে দিয়েছেন। তবে তাতে কি, ফোন জমা করলেও কেষ্টর দাবি, তাঁর অনেক ফোন। সেসব ফোনে কথা বলার তো কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়নি। অন্যেরপোন থেকে তিনি প্র্যেকটি বুতের খবর নিতে থাকবেন।
বাহিনী যতই বাড়ির আশপাশে ঘিরে থাকুক, কিছুটা দূরেই রয়েছে ডিএমের গাড়ি। সবার লক্ষ্য অনুব্রতকে নজরবন্দি করে রাখা, তবে এসবের মধ্যে তৃণমূলের জেলাসভাপতির দৈন্দিন রুটিনে কোনওরকম পরিবর্তন হয়নি। তিনি সারাদিন যেখানে যেখানে যাবেন কমিশনের নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনীও ও ডিএম সেখানে যাবেন। আগামীকাল সকাল পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে।
অনুব্রতবাবু সকালে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, কমিশন তাঁকে নজরবন্দি করুক আর যাই করুক, নকুলদানা বিলি কিন্তু কোনওভাবেই আটকাবে না।